রাতে দার্জিলিং-এর বিখ্যাত স্ট্রিট ফুড খেয়ে দেখতে পারেন। গভীর রাত পর্যন্ত চলে মমো, রোল, পরোটা, ব্রেড টোস্ট, চাওমিনসহ নানা খাবারের দোকান। রাস্তার পাশের এসব দোকান থেকে বেশ অল্প দামেই খেতে পারবেন। রাতে বেশি দেরি না করে শুয়ে পরুন কারণ ৪টায় রওনা দিতে হবে। ভোর ৪টার আগেই উঠে যান। উঠে রেডি হয়ে নিন। ৪ টার দিকে গাড়ি চলে আসবে দার্জিলিং ঘুরাতে। প্রথম গন্তব্য টাইগার গিল। এখান থেকেই সূর্যোদয় ও কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায়। গাড়ি যেখানে নামিয়ে দিবে সেখান থেকে প্রায় ২০ মিনিট হাঁটা লাগবে মূল স্পটে যাওয়ার জন্য। প্রচুর ভিড় হয় তাই আগে আগে গিয়ে ভালো একটা জায়গা বাছাই করে দাঁড়িয়ে পরুন। স্পটের মাঝের দিকের কোন রেলিং-এ দাঁড়ালে একইসাথে সূর্যোদয় ও কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পাবেন। সূর্যের আলো পড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা যখন সোনালী বর্ণ ধারণ করে সেই স্বর্গীয় সৌন্দর্য মুখে প্রকাশ করে বুঝানো যাবে না। দেখা শেষে একটু আগেই বের হয়ে আসুন নাহলে সবাই একসাথে বের হওয়া শুরু করলে প্রচন্ড ভীড় হয়ে যাবে।
টাইগার হিল থেকে সূর্যোদয় ও কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরুপ দৃশ্য। ছবি : নর্থ বেঙ্গল ট্যুরিজম
এবার গাড়ি নিয়ে চলে যান পিস প্যাগোডা ও জাপানিজ টেম্পল দেখতে। সাদা রঙের বিশাল টেম্পল আর বুদ্ধের নানান ভঙ্গির চারটি মূর্তি আপনাকে আকৃষ্ট করতে বাধ্য। এখানে আওয়াজ যথাসম্ভব কম করবেন। মূল টেম্পলে জুতা খুলে উঠতে হয়। এরপর চলে আসবেন বিখ্যাত রক গার্ডেনে। চাইলে এখানে সকালের নাস্তা করে নিতে পারেন। রক গার্ডেন সাজানো গুছানো জায়গা। দেখেই মন ভালো হয়ে যায়। চাইলে ঝরনার পাশের সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে পারেন। ছবি তোলার জন্য আদর্শ জায়গা এটি।
রক গার্ডেন দেখা শেষ করে রওনা দিন চিড়িয়াখানার উদ্দেশ্যে। চিড়িয়াখানার বাইরে বেশ কমে সকালের নাস্তা করে নিতে পারবেন। এরপর চিড়িয়াখানা ঘুরতে ঢুকে যান। একই জায়গায় চিড়িয়াখানা ও মিউজিয়াম। যেটায় পছন্দ আগে ঘুরে আসুন। এই মিউজিয়ামে বিখ্যাত পর্বতারোহীদের ব্যবহৃত সরঞ্জাম পাবেন। জানতে পারবেন অনেক পুরনো ইতিহাস। এখানে পর্বাতারোহন শেখানোর জন্য ইন্সটিটিউট আছে। অন্যদিকে চিড়িয়াখানায় অনেক অদেখা প্রাণীর দেখা পাবেন। পাহাড়ি নেকড়ে, পান্ডা, বিভিন্ন প্রজাতির বিড়াল, সাপ, বাঘ এসব অনেক প্রাণীর দেখা পাবেন। এখান থেকে চলে আসুন টি এস্টেটে। চাইলে ক্যাবল কারে করে ঘুরতে পারেন টি এস্টেটের উপর দিয়ে অথবা নিজে পায়ে হেঁটে নামতে পারেন। বিশাল এলাকাজুড়ে শুধুই চা বাগান। এখানে দোকান পাবেন চাইলে চা কিনতে পারেন, নানান রকম চা টেস্ট করেও দেখতে পারেন।
মোটামুটি দেখার মত জায়গাগুলো দেখা শেষ। আসার পথে দার্জিলিং-এর বিখ্যাত সেন্ট পলস স্কুলও দেখে আসতে পারেন, ঘুরে দেখতে পারেন টয় ট্রেনের স্টেশন। দুপুরের মধ্যেই এসব দেখা শেষ হয়ে যাবে। এবার এসে লাঞ্চ করে নিন। এরপর চাইলে অভিজ্ঞতা নিতে পারেন ইনক্স (INOX) সিনেমা হলের। দার্জিলিং-এর বিখ্যাত রিংক মলে এই সিনেমা হল। অসাধারণ অভিজ্ঞতা পাবেন এখানে। সন্ধ্য়ায় চাইলে শপিং করতে পারেন। এরপর অবশ্যই বিখ্যাত ইসলামিয়া হোটেলে খেয়ে দেখবেন। এত কম দামে এত ভালো খাবারের অভিজ্ঞতা আপনার হয়তো আগে কখনো হয়নি। রাতে হোটেলে ফিরে আসুন। পরিদিন যাত্রা শিলিগুড়ির পথে।
গাড়ির সাথে যোগাযোগ করে তাকে সকাল ৭টার মধ্যে চলে আসতে বলুন। দেরি না করে শিলিগুড়ি রওনা দিন। যাওয়ার পথে অবশ্যই বাতাসিয়া লুপ দেখে যাবেন। এখানে সকালের নাস্তাও করে নিতে পারেন। শিলিগুড়ি যাওয়ার রাস্তায় একসময় চোখে পড়বে সারিসারি চা বাগান দু-পাশজুড়ে। শিলিগুড়ি পৌঁছতে দুপুর হবে। লাঞ্চ করে নিন এবং কোন কেনাকাটা থাকলে করে নিন এখান থেকে। অবশ্যই ৪টার মধ্যে ইমিগ্রেশনে চলে যাবেন। ঘন্টাখানেক লাগবে দুইপাশের ইমিগ্রেশন শেষ হতে। এরপর আবার রওনা আপনার নিজ গন্তব্যে।