শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৫১ অপরাহ্ন
Uncategorized

দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২২ অক্টোবর, ২০২১

বিদেশে আপাতত সশরীরে ভারতীয়দের ঢুকতে দিচ্ছে না। কল্পনাতেও ওখানে যাওয়ার দরকার নেই। বরং নিজের দেশেই যে কয়েক চিলতে বিদেশ লুকিয়ে আছে সেখান থেকে ভার্চুয়াল ভ্রমণ করে আসা যাক। সঙ্গে প্ল্যানিং-ও হয়ে যাক। সব কিছু ঠিক হয়ে গেলে আবার আমরা সশরীরে বেড়াতে যাব।

নদী, হ্রদ সমুদ্র এবং একে অপরের সঙ্গে কখনও প্রাকৃতিক কখনও আবার কৃত্রিম উপায়ে সংযুক্ত। শহর ঘুরে দেখলে যে সমস্ত স্থাপত্য-ভাস্কর্য বা ভবনগুলি রয়েছে সেগুলি দেখলে ইতালির সুসজ্জিত শহরের কথাই মনে কারবে। সঙ্গে পরিষ্কার ঝকঝকে রাস্তাঘাট। আলেপ্পিতে গেলে হাউজ বোটে থাকতেই হবে। না হলে অসাধারণ অভিজ্ঞতা থেকে বঞ্ছিত হবেন।

ভারতের স্কটল্যাড- শিলং

সময় সুযোগ পেলে মেঘালয়ের রাজধানী শিলং থেকে ঘুরে আসুন। এই পাহারি শহরকে বলা হয় ভারতের স্কটল্যান্ড। তবে সত্যি কথা বলতে কি শিলং-এর সৌন্দর্য নিজের চোখে দেখার পর স্কটল্যান্ডকেই মনে হবে ইউরোপের শিলং। প্রকৃতিদেবী তার সমস্ত আশীর্বাদ এবং সৌন্দর্য্য এই ছোট্টো শহরকে ঢেলে দিয়ে দিয়েছেন। পাহাড়, ঝর্না, জঙ্গল, আবহাওয়া– একের থেকে একটা অসাধারণ। শিলং-এর এলিফ্যান্ট ফলস্ দেখলে মুখ হাঁ হয়ে হয়ে যাবে। দেখলে মনে হয় অনেকগুলি হাতি যেন সুর দিয়ে ক্রমাগত জল ফেলছে।শিলং একটি পাহাড়ি গ্রাম। এর সর্বোচ্চ অংশটির নাম শিলং পিক বা চূড়া। এই চুড়োয় দাঁড়িয়ে গোটা শহরকে দেখা যায়। শিলং-এর উমিয়াম হ্রদটিও অপূর্ব। এর নৈঃসর্গিক পরিবেশে সময় কাটাতে ভালো লাগবে। ঘুরে নিন ডন বস্কো মিউজিয়াম, ওয়ার্ডস্ লেক, লেইটলাম ক্যানিয়ন, মেরি হেল্প মি খ্রিস্টান ক্যাথিড্রাল ঘুরে দেখুন। আর শিলং যখন গেছেন তাহলে চেরাপুঞ্জিতে অবশ্যই যাবেন। বিশ্বের একমাত্র জায়গা যেখানে সারাবছর বৃষ্টি হয়।

ভারতের সুইজারল্যান্ড- খাজ্জিয়ার

হিমাচল প্রদেশের অপূর্ব সুন্দর মফঃস্বল শহর খাজ্জিয়ার। এখানে বেড়াতে নয় অবকাশ কাটাতে যান। বেশিরভাগ পর্যটক এখানে এক বা দুই দিনের জন্য বেড়াতে যান। কিন্তু বিশ্বাস করুন সাতটা দিন যদি এখানকার শান্ত-নিস্তব্ধ পরিবেশে থাকতে পারেন তাহলে মেডিটেশনের কাজটা অনেকটাই সেরে নেওয়া যায়। প্রকৃতির অপূর্ব রূপ, নিঃস্তব্ধতা এবং একান্ত অবকাশ আপনার মনকে শান্ত করবে। যদি লম্বা অবকাশের লক্ষ্যে খাজ্জিয়ারে যান তাহলে রোজ সকাল বা বিকেলে এক এক করে এখানকার বিশেষ জায়গাগুলি ঘুরে আসতে পারেন। মাঝে মধ্যে বেড়াতে যেতে পারেন খাজ্জিয়ার হ্রদে। এর আকারটি অনেকটা সসেজের মতো। এলাকার লোকজনও মাঝে মধ্যে এখানে বেড়াতে যান। স্নিগ্ধ ঠান্ডা আবহাওয়ায় বসে সঙ্গীর সঙ্গে গল্প করতে বা হালকা গান শুনতে খুব ভালো লাগবে। দর্শন করে আসতে পারেন খাজ্জি নাগ মন্দিরেও। পুজো দিন বা না দিন পাহাড়িয়া এলাকার প্রায় আটশো বছরের পুরোনো মন্দিরের পরিবেশ ভালোই লাগবে। শিব ঠাকুররে মন্দিরে দেওয়ালজুড়ে রামায়ণ-মহাভারতের গল্পের কাঠের কাজের নকশা মুগ্ধ করতে পারে শিল্পীমনকে। ইচ্ছে হলে ট্রেকিং-এর যেতে পারেন। স্থানীয়দের জিজ্ঞাসা করলেই ব্যবস্থা হয়ে যাবে। পায়ে হেঁটে বা গাড়িতে চড়ে গ্রাম ঘুরে বেড়ান। পাহাড়িয়া জীবনযাত্রার অভিজ্ঞতাই আলাদা। এখান থেকে কৈলাস পর্বতকে স্পষ্ট দেখা যায়। তুষারপাতের সময় খাজ্জিয়ারের সৌন্দর্য দেখে সুইৎজারল্যান্ডও ঈর্ষা করবে। খাজ্জিয়ার থেকে কাঙড়া বিমানবন্দরের দূরত্ব ১২৬ কিলোমিটার, পাঠানকোট রেলস্টেশন প্রায় ৯৪ কিলোমিটার। খাজ্জিয়ার থেকে ডালহৌসি, ধরমশালাও ঘুরতে যাওয়া যায়।

ভারতের নায়াগ্রা ফলস্ – চিত্রকূট জলপ্রপাত

রাজ্যের নাম ছত্তিশগঢ়। পর্যটকরা অনেকেই একে বিশেষ পাত্তা দেন না। কিন্তু দেশের সবচেয়ে সুন্দর জলপ্রপাতটি যে এখানেই আছে তার খবর কজন রাখেন? চিত্রকূট জলপ্রপাতকে ভারতের নায়াগ্রা ফলস্ বলা হয়। বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর জলপ্রপাত যেমন নায়াগ্রা আমাদের দেশে তেমন চিত্রকূট। ছত্তিশগঢ়ের বস্তার জেলার জগদ্দলপুরে এই জলপ্রপাতটি অবস্থিত। ইন্দ্রবতী নদীর জলপ্রপাত এটি। উচ্চতা, প্রায় ২৯ মিটার। দিনের বেলা সূর্যের উপস্থিতি চিত্রকূট যেমন উচ্ছ্বল আর ডাকাবুকো, রাতের অন্ধকার কিংবা চাঁদের জ্যোৎস্নায় তেমনই স্নিগ্ধ আর মনোরম।

অনেকেই বলেন যে, দেশের সেরা পরিবেশ-বান্ধব পর্যটন নাকি এখানেই আছে। ভোরবেলা শাল জঙ্গলের ভিতর দিয়ে হেঁটে গিয়ে সূর্যোদয় দেখা হোক কিংবা স্থানীয় হাটে ঘুরে বেড়ানো এ এক অন্যধরনের অ্যাডভেঞ্চার।

ভারতের ইজরায়েল– কসোল

হিমাচলের কুলু জেলা থেকে ২৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করে ইজরায়েল। ইজরায়েল মানে ইজরায়েলের ছোটো রেপ্লিকা। কসোল। মণিকরণ তীর্থক্ষেত্র যাওয়ার পথেই পড়ে কসোল। কসোলের পার্বতী ভ্যালির ছোট্টো গ্রাম কসোল। এখানে ট্রেকিং-এর অসাধারণ রোমাঞ্চ, সুস্বাদু খাবার, নদীর স্রোতের শব্দ এবং অসাধারণ আবহাওয়া শরীর এবং মনকে আরাম দেবেন। সমীক্ষা বলে এই কসোলেই নাকি ইজরায়েলি পর্যটকরা খুব বেশি আসেন। তাঁকের পছন্দমতো হতে গিয়ে কসোলের মধ্যেও ইজরায়েলের ছায়া পড়েছে। এখানকার বহু মানুষের ইজরায়েলি ভাষা বোঝেন এবং কথা বলতে পারেন। হিমালয়ের কোলের এই গ্রামের পাহাড়িয়া জঙ্গলে ক্যাম্প করে তাকার মজাও অন্যররকম। মালানা এবং ক্ষীরগঙ্গায় অ্যা়ভেঞ্চারের দারুণ ব্যবস্থা আছে।

ভারতের ভেনিস- আলেপ্পি

বিশ্বের অন্যতম সুন্দর শহর ইতালির ভেনিস। আর সেই ভেনিসের মতোই সুন্দর আমাদের দেশের আলেপ্পি। কেরালার অপূর্ব সুন্দর এই শহরটি ব্রিটিশ আমল থেকেই অত্যাধুনিক অথচ সাবেকি সাজে সজ্জিত। সচেতন নাগরিকদের কল্যাণে শহরের যৌবন এবং সোন্দর্য্য আজও অটুট। এখানকরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যও অপূর্ব। লেপ্পির চারদিকে সমুদ্র আর হ্দের ছড়াছড়ি। এখানকার নদীগুলির জল অসম্ভব স্বচ্ছ এবং পরিবেশ। প্রতিটি নদী, হ্রদ সমুদ্র এবং একে অপরের সঙ্গে কখনও প্রাকৃতিক কখনও আবার কৃত্রিম উপায়ে সংযুক্ত। শহর ঘুরে দেখলে যে সমস্ত স্থাপত্য-ভাস্কর্য বা ভবনগুলি রয়েছে সেগুলি দেখলে ইতালির সুসজ্জিত শহরের কথাই মনে কারবে। সঙ্গে পরিষ্কার ঝকঝকে রাস্তাঘাট। আলেপ্পিতে গেলে হাউজ বোটে থাকতেই হবে। না হলে অসাধারণ অভিজ্ঞতা থেকে বঞ্ছিত হবেন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com