শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:১৫ পূর্বাহ্ন
Uncategorized

ইলন মাস্কের স্বপ্ন

  • আপডেট সময় রবিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১
ফ্যালকন হেভিই কিন্তু এযাবত্কালের সবচেয়ে বড়ো নভোতরী। ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে এই বিশাল মহাকাশযানটি কোনরকম ঝামেলা ছাড়াই উড্ডয়নে সক্ষম হয়েছে। এই সাফল্য যে খুব সহজে এসেছে তা নয়। ২০০২ সালে স্পেসএক্স প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইলন একটার পর একটা রকেট আকাশে পাঠিয়েছেন। এর অনেকগুলোই সাফল্যের মুখ দেখেনি। এসবে তো আর দমে যাওয়ার পাত্র নন ইলন মাস্ক। তিনি আমাদের যুগের টমাস আলভা এডিসন। তাই মজা করে কিছুদিন আগে একটা ভিডিও বানিয়েছিলেন, হাউ নট টু ল্যান্ড অ্যান অরবিটাল রকেট বুস্টার। এই ভিডিওতে দেখা যায় তাদের পাঠানো অনেকগুলো রকেট বুস্টার ল্যান্ড করতে গিয়ে বিস্ফোরিত হয়েছে, হতোদ্যম না হয়ে একটার পর একটা চেষ্টা করে গেছেন, এবং প্রতিটা চেষ্টা থেকে শিখেছেন কীভাবে সফলতার সঙ্গে ব্যর্থ হওয়া যায়। শেষ পর্যন্ত তাঁরা সক্ষম হয়েছেন তিন স্তরের রকেট বুস্টারকে সাফল্যের সঙ্গে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনতে, এবারের ফ্যালকন হেভি লঞ্চ করে।

এর আগে পৃথিবীর সবচেয়ে হেভি রকেট উেক্ষপণ করা হয়েছে ডেল্টা ফোর হেভি। মাস্কের বক্তব্য অনুসারে ফ্যালকন হেভি সেটির দ্বিগুণ ওজনের কিন্তু তিনভাগের একভাগ খরচের। এটিকে এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে পৃথিবীর কাছাকাছি কক্ষপথে ৬৪ টন পে-লোড দিতে পারে। এর মানে হলো ঢাকার বন্ধ হয়ে যাওয়া ৫টা ডাবল ডেকার বাসকে মহাকাশে পাঠানো। এবারের অনিশ্চিত এই যাত্রায় মাস্ক অবশ্য এতো ওজনদার জিনিস সেখানে দেননি। ফ্যালকন হেভি নিয়ে গেছে মাস্কের পুরাতন চেরি লাল রঙের টেসলা স্পোর্টস কারটি। স্পেসস্যুট পরা একটি ম্যানিকুইনকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে ওর চালকের আসনে। আর গাড়ির রেডিওতে বাজিয়ে দিয়েছেন ডেভিড বউয়ির স্পেস অডিটি। ফ্যালকন হেভি গাড়িটাকে একটি উপবৃত্তাকার কক্ষপথে বসিয়ে দিয়েছে যাতে এক সময় সেটি মঙ্গল গ্রহের কাছে পৌঁছাতে পারে।

মাস্কের এই টেসলা রোডস্টার গাড়ির সঙ্গে একটা ক্যামেরা ছিল। সেটি ঘণ্টাকয়েক ছবি পাঠিয়েছে, অসাধারণ সব দৃশ্য। তবে, এখন যদি সেই গাড়ি আর তার ড্রাইভিং সিটে বসা ম্যানিকুইন স্টারম্যানকে ট্র্যাক করতে চান? হ্যা, সে উপায়ও বের করে ফেলেছে এক অতি উত্সাহী। বেন পিয়ারসন নামের এক প্রকৌশলী তৈরি করেছেন একটি ওয়েবসাইট, whereisroadster.com। তাঁর ছোটবেলা থেকেই, মানে গ্রেড থ্রি থেকে মহাকাশ নিয়ে আগ্রহ। ভার্জ ম্যাগাজিনের সঙ্গে সাক্ষাত্কারে তিনি বলেছে, ‘আমার ছোট্ট লাইব্রেরির মহাকাশ সম্পর্কিত সব বই আমি পড়েছি।’ তিনি লক্ষ করেছেন অনলাইনে অনেকেই টেসলা রোডস্টারের খোঁজ করছে। তখন তিনি ভাবলেন, আমি তাহলে একটা ট্র্যাকার বানাই না কেন। যেই ভাবা সেই কাজ।

উৎক্ষপনের পর থেকে পিয়ারসন রোডস্টারের মডেলিং শুরু করেন। কিন্তু দেখা গেল তার হিসাব আর ইলন মাস্কের হিসাব মিলছে না। প্রথমে হতোদ্যম হলেও পরে দেখা গলে বেনের হিসাবই ঠিক। মাস্কেরটা নয়। ‘আপনি যখন জানলেন আপনারটাই ঠিক, মাস্কেরটা নয়, তখন কেমন লেগেছে?’ এ প্রশ্নের জবাবে বেন বলেছেন, ইলন একজন ভিশনারি এবং রিস্ক নিতে পছন্দ করেন। এজন্য তিনি মাস্কের ভক্ত। ২০২০ সাল পর্যন্ত রোডস্টারকে ফলো করা যাবে বেনের ওয়েবসাইট থেকে। এবং দেখা যাবে কখন গাড়িটি পৃথিবী বা মঙ্গলের খুব কাছে এসে পড়বে। ২০৯১ সালে আবার রোডস্টার পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে এসে পড়বে। তখন সেটিকে আবার পৃথিবীতে নিয়ে এসে একটি জাদুঘরে রাখা যাবে বলে মনে করেন বেন পিয়ারসন! ততদিন হয়ত আমি থাকব না, তবে এই জীবনেই ইলন মাস্কের আরও নানান কীর্তি দেখতে পাবো। ভবিষ্যতে মানুষের অন্য গ্রহে পাড়ি জমানোর ইচ্ছা ইলনের হাত ধরে হবে বলেই আশা করি।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com