প্রকৃতি মানুষকে এমনিতেই ভীষণ টানে। সেটা সাগর, পাহাড়, বরফ, মরুভুমি কিংবা ঘন জঙ্গল, মাটির উপরে কিংবা পানির নিচে যেখানেই হোক । সাগরতলের অনেক রহস্যই মানুষ উদ্ঘাটন করতে পেরেছে একটু একটু করে। সেটার জন্য কিন্তু নামতে হয়েছে গভীর সাগরের মধ্যে। সাগরতলের জগৎটা কেমন সেটা আমরা সবাই মোটামুটি ন্যাশনাল জিওগ্রাফি কিংবা ডিসকভারি চ্যানেল দেখে জানি। কিন্তু একবার যদি নিজে যেয়ে দেখে আসা যায় কি ঘটছে সাগরতলে? ভাবতেই শরীরে শিহরণ খেলে যায় তাই না? সাগরের ভেতরকার জীবনযাত্রা আমরা দেখতে পারি স্নোর্কেলিং এর মাধ্যমে।
শুরুতেই বলে রাখি এই ব্যাপারটার জন্য সাহস অনেক জরুরি। যারা আগে কখনো স্নোর্কেলিং করেননি তাদের একলা না যাওয়াই ভালো। সাথে সঙ্গী পেলে আসলে মনে একটা সাহসও কাজ করে। ভালো সাঁতার জানলে স্নোর্কেলিং করা আপনার জন্য খুব সোজা হবে। সাঁতার না জানলেও আসলে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। স্নোর্কেলিং গাইডের সাহায্যে সাঁতার না জেনেও পানির নিচের জগৎটা দেখে আসা যায়।
স্নোর্কেলিং-এর জন্য আপনার দরকার হবে কয়েকটা জিনিসের। এগুলো আপনি কিনতে পারেন আবার চাইলে ভাড়াও করতে পারেন। আপনাকে নিতে হবে একটা মাস্ক এবং স্নোর্কেল, সাথে লাইফ জ্যাকেট রাখা ভালো। কিন্তু যদি অভ্যাস থাকে তাহলে লাইফ জ্যাকেট না নিলেও চলে। খেয়াল করে দেখে নিতে হবে আপনি যে মাস্কটা নিয়েছেন সেটা ঠিকঠাকমত কাজ করে কিনা। আপনি যখন পানির ভেতরে যাচ্ছেন তখন ঠিকমত শ্বাস নিতে পারাটা খুব জরুরি। যদি অনেক দূরে যান সেক্ষেত্রে পায়ে পরার জন্য নিতে পারেন একজোড়া ফিন। মাস্ক এবং স্নোর্কেল যখন পরবেন চেষ্টা করবেন দুই পাশের মাড়ির দাঁত দিয়ে রাবারের মত জিনিসটা কে আটকে রাখতে। নামার আগে সব ঠিক আছে কিনা তা একবার পরীক্ষা করে নিতে হবে।
যেমন আপনি অক্সিজেন পাচ্ছেন কিনা, দাঁতের সাথে রাবারগুলোকে ঠিকমতো আটকানো যাচ্ছে কিনা, আর হ্যা, স্নোর্কেলিংয়ের সময় নিঃশ্বাস কিন্তু নিতে হবে মুখ দিয়ে। এছাড়াও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল ,মাস্ক এবং স্নোর্কেল পরে আপনি সব কিছু দেখতে পাচ্ছেন কিনা। দেখার জন্য যে গ্লাস বা চশমাটা আপনার আছে সেটাকে খুব ভাল মত পরিষ্কার করে নিতে হবে। পানিতে নামার পর সাগরতলের সৌন্দর্য্য দেখে মুগ্ধ হলেও নিজের খেয়াল রাখা কিন্তু জরুরি। চোখ ধাঁধানো অনেক মাছ দেখতে বেশ সুন্দর হলেও এদের ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকাই ভাল। অনেক মাছের চামড়ায় বিষাক্ত পদার্থ থাকে, তবে আপনি কাছে না গেলে এরা কিছু করবে না।
দক্ষ স্নোর্কেলাররা সবসময় একটা কথাই বলেন, সেটা হল- শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একদম রিলাক্সড থাকতে। আমাদের দেশে সেন্টমার্টিনে স্নোর্কেলিং করার জায়গা আছে, কিন্তু সেটা তেমন জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি। ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনে স্নোর্কেলিং অনেক জনপ্রিয়। স্নোর্কেলিং-এর প্রতিটা মুহূর্ত শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উপভোগ করুন। আবিষ্কার করুন সাগরের ভেতরকার জগৎটাকে।