শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৭ পূর্বাহ্ন

সৌদি ও মালয়েশিয়ায় শ্রমিক যাওয়া বেড়েছে, কমেছে দুবাইসহ ৪ দেশে

  • আপডেট সময় রবিবার, ৯ জুলাই, ২০২৩

পরপর দুই মাস কম যাওয়ার পর গত জুন মাসে বাংলাদেশের প্রধান শ্রমবাজার সৌদি আরবে শ্রমিক যাওয়ার হার বেড়েছে। এপ্রিল ও মে মাসের তুলনায় জুন মাসে ১০ হাজারের (নারী-পুরুষ) বেশি শ্রমিক কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে দেশটিতে পাড়ি জমিয়েছেন।

শুধু সৌদি আরব নয়, বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার মালয়েশিয়াতেও শ্রমিক যাওয়ার হার অনেক বেড়েছে। সেই তুলনায় অবশ্য মধ্যেপ্রাচ্যের অন্যতম দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডান, ওমান এবং সিঙ্গাপুরে শ্রমিক যাওয়ার হার কমে গেছে।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর পরিসংখ্যান ঘেটে দেখা গেছে, ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে ৩৪ হাজারের বেশি কর্মী গেলেও মে মাসে সেটি কমে ২৯ হাজারে নেমে আসে। পরের মাসে সেটি বেড়ে (জুন মাসে) সৌদি আরবে শ্রমিক পাড়ি জমিয়েছে ৩৯ হাজার ২৩১ জনে।

একই চিত্র দেখা গেছে মালয়েশিয়াগামী শ্রমিকদের ক্ষেত্রেও। এপ্রিল মাসে দেশটিতে মাত্র ১৮ হাজার ৫৬৫ জন কর্মী গেলেও পরের মাসে অর্থাৎ মে মাসে সেটি বেড়ে দাঁড়ায় ৩৫ হাজার ১৯০ জনে। এর পরের মাসে (জুন) আরো বেড়ে দাঁড়ায় ৪১ হাজার ৪৩৮ জনে।

তবে জুন মাসের পরিসংখ্যানে শ্রমবান্ধব অন্যান্য দেশগুলোতে শ্রমিক যাওয়ার তুলনামূলক চিত্র ঘেটে দেখা যায়, এই সময়ে মে মাসের তুলনায় জুন মাসে প্রায় এক হাজার শ্রমিক কম গিয়েছে। একইভাবে অন্যতম শ্রমবাজার ওমানে ৩ হাজার এবং সিঙ্গাপুরে এক মাসের তুলনায় দেড় হাজার শ্রমিক কম গেছে। মে মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এক লাখ ১ হাজার ৫৫৮ জন শ্রমিক কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে গেলেও জুন মাসে সেটি বেড়ে দাঁড়ায় ১ লাখ ১৪ হাজার ১৭৫ জনে। মে মাসের তুলনায় জুন মাসে ১৩ হাজার শ্রমিক বেশি গিয়েছে বলে জনশক্তি ব্যুরোর পরিসংখ্যানে উল্লেখ রয়েছে।

কর্মী যাওয়ার হার বাড়ার নেপথ্যে কি কারণ থাকতে পারে এ বিষয়ে গত সপ্তাহে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর পরিচালক (বহির্গমন) মোহাম্মদ আব্দুল হাইয়ের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, বিদেশগামীদের বহির্গমন ছাড়পত্র দেয়ার ক্ষেত্রে অনেকটা শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে। আগে ফাইল জমা হতো ফ্রি স্টাইলে। এখন নিয়ম মেনে সবাই ফাইল জমা করছেন। তিনি বলেন, আগে আমার রুমে ফাইলের স্তূপ পড়ে থাকত। আমি এসে নিয়ম পরিবর্তন করেছি। এতে এখন একটি ফাইলও রুমে পড়ে থাকছে না। সময় একটু বেশি লাগলেও দিনের কাজ আমি দিনেই শেষ করে বাড়ি যাচ্ছি।

আমার কারণে কোনো কর্মীর যাতে বিদেশ যাত্রা (ফ্লাইট) মিস না হয় আমি সেটিকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছি। যার ফলে বিদেশগামী কর্মীর সংখ্যা এখন প্রতি মাসেই বাড়ছে। তিনি বলেন, গত জানুয়ারি মাস থেকে প্রতি মাসেই এক লাখের ওপর কর্মী বিদেশে যাচ্ছে। এই ৬ মাসে ৬ লাখ শ্রমিক বিদেশে চলে গেছে। আশা করছি দিন যত যাবে, শ্রমিক যাওয়ার হারও তত বাড়তে থাকবে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি অন্যায় করব না, কাউকে অন্যায় কাজ করার সুযোগও দেবো না। তবে আমি এক্ষেত্রে সব রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক এবং প্রতিনিধিদের নিয়ম মেনে কাজ করার অনুরোধ করব। তাদেরকে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।

এর আগে একটি রিক্রুটিং এজেন্সির প্রতিনিধি বুলবুল চৌধুরী নয়া দিগন্তকে বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার হচ্ছে সৌদি আরব। দেশটিতে নারী ও পুরুষ মিলিয়ে প্রচুর শ্রমিক যাচ্ছে প্রতি মাসে। এখন ওই দেশে গিয়ে আমাদের শ্রমিকরা কেমন আছে, বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা ঠিক মতো পাচ্ছে কি না সেটি আমাদের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়, বিএমইটি এবং সৌদিতে থাকা বাংলাদেশ দূতাবাসকে কঠোরভাবে মনিটরিং করতে হবে। তাহলে দেশটিতে কর্মী যাওয়ার হার আরো বাড়বে বলে আমি মনে করি।

মালয়েশিয়া থেকে একজন জনশক্তি ব্যবসায়ী গতকাল রাতে দেশে ফেরার আগে নিজের পরিচয় না জানিয়ে বলেন, মালয়েশিয়ায় কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া বর্তমানে এই শ্রমবাজারটি ভালোই চলছে। হাইকমিশনেও যারা অনিয়ম করছিল তারা এখন কিছুটা দমেছে। এখন মালয়েশিয়াগামীদের অভিবাসন ব্যয় কিছুটা কমানো সম্ভব হলে তখন কর্মী যাওয়ার হার আরো বাড়বে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com