মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ১০:১৭ অপরাহ্ন
Uncategorized

সাত কারণে বিনিয়োগে আকর্ষণীয় বাংলাদেশ, জুরিখে রোড শো

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২১

বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য কেন ব্যাপক সম্ভবনাময়, সেই বিষয়টি সুইজারল্যান্ডের জুরিখে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির রোড শোতে তুলে ধরা হয়েছে।

বলা হয়েছে, সাতটি কারণে বাংলাদেশে বিনিয়োগ ব্যাপক লাভজনক। এগুলো হলো: আর্থসামাজিক অবস্থা, সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা, অবকাঠামো ও দেশীয় বাজার, উচ্চ রিটার্ন, মানবসম্পদ এবং বিদেশে রপ্তানির সুযোগ।

সুইজারল্যান্ডে তিন দিনব্যাপী অর্থনীতিবিষয়ক রোড শোর প্রথম দিন ছিল সোমবার। সুইস নাগরিকদের উপস্থাপনায় বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত, ‘আমার সোনার বাংলা’ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়।

বাংলাদেশের অর্থনীতির সক্ষমতা, বিনিয়োগ, বাণিজ্য, বাংলাদেশি পণ্য ও সেবা, পুঁজিবাজার এবং বন্ড মার্কেটকে তুলে ধরতেই এ আয়োজন করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, বিএসইসি।

সাত কারণে বিনিয়োগে আকর্ষণীয় বাংলাদেশ, জুরিখে রোড শো

এক দশকের হতাশা কাটিয়ে গত এক বছর ধরে চাঙা পুঁজিবাজার ও দেশে নানা খাতে বিদেশি বিনিয়োগ আরও বাড়ানোর লক্ষ্যে এর আগে দুবাই ও যুক্তরাষ্ট্রে রোড শো করেছে বিএসইসি।

অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তির বিবেচনায় ইউরোপের অন্যতম প্রভাবশালী এই দেশটিতে বাংলাদেশকে তুলে ধরে বিদেশি ও অনিবাসী বাংলাদেশিদের বিনিয়োগ আকর্ষণ এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য।

বিশেষ করে প্রবাসীরা যাতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে সে বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এর নাম দেয়া হয়েছে ‘রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার’।

অনুষ্ঠানে সুইজারল্যান্ডের ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন ৬৫ জন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে মার্কুজ স্কিলটার, সিলভান স্টিটলার, আলেক্সান্ডার ক্লিংকম্যান প্রমুখ।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের ফাইন্যান্স ডিভিশনের সিনিয়র সচিব আবদুর রউফ তালুকদার, বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম, তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম পিএ, বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ, বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য আলমগীর হোসেন এবং বিএসইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দীন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

ভূমিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতি ও ব্যাস্টিক অর্থনীতির মধ্যে ভারসাম্য রয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, প্রবাসী আয়, জিডিপি প্রবৃদ্ধি প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় অত্যন্ত উচ্চ।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। এখানে শ্রমশক্তি বিশাল। এই শ্রমশক্তিকে কাজে লাগাতে আমরা গবেষণায় জোর দিয়েছি।

‘আমাদের উৎপাদন বিস্ময়করভাবে বাড়ছে। ইতিমধ্যে আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছি। চীন-ভারত থাইল্যান্ডের মতো দেশে আমাদের রপ্তানি বাড়ছে। সামগ্রিক বিবেচনায় বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য এখনই উপযুক্ত সময়।’

সাত কারণে বিনিয়োগে আকর্ষণীয় বাংলাদেশ, জুরিখে রোড শো
জুরিখে বিএসইসির রোড শো শুরু হয় সুইস নাগরিকদের কণ্ঠে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে

সুইজারল্যান্ডের ব্যবসায়ী এবং প্রবাসীদের এই সুযোগ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে আসুন এবং বিনিয়োগ করুন, আমরা প্রস্তুত।’

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট কিছু কারণে বিনিয়োগের জন্য উত্তম জায়গা বাংলাদেশ। এর মধ্যে অন্যতম হলো বাংলাদেশের মানবসম্পদ। প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের যথেষ্ট শ্রমশক্তি রয়েছে। এই শ্রমশক্তির দক্ষতা বাড়াতে কাজ করছে বাংলাদেশ সরকার।

‘দ্বিতীয়ত, আমাদের অর্থনৈতিক অবকাঠামো অত্যন্ত শক্তিশালী। যেসব পণ্য উৎপাদন করবেন বাংলাদেশে তার বড় একটি বাজার রয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশে পণ্য উৎপাদন করে চীন ও ভারতের মতো দেশে রপ্তানি করা যায়।

‘এখানে রয়েছে সামষ্টিক অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে উচ্চ রিটার্ন পাওয়া যায়। তথ্যপ্রযুক্তি, চামড়াজাত শিল্প, হালকা প্রকৌশল, পর্যটন, ব্যাংক ও আর্থিক, গার্মেন্টস এবং ইলেকট্রনিকস ও খাদ্য শিল্পে বিনিয়োগের জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্টেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতার বিষয়টি উঠে এসেছে।’

অর্থ মন্ত্রণালয়ের ফাইন্যান্স ডিভিশনের সিনিয়র সচিব বলেন, ‘করোনার পরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে চারটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছে সরকার। এগুলো হলো সরকারি ব্যয় বাড়ানো, ব্যবসায়ীদের সহজ শর্তে ঋণ, সামাজিক নিরাপত্তা বাড়ানো এবং বাজারের টাকার প্রবাহ বাড়ানো।

‘ইতিমধ্যে সরকার ২৮টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এই প্যাকেজ বাস্তবায়নে ২২ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হবে। এই সবকিছুর মূল উদ্দেশ্য একটাই, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা ধরে রাখা। ইতিমধ্যে তা সফলতার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে।‘

তিনি আরও বলেন, ‘২০০৫ সালে আমাদের দারিদ্র্যের হার ছিল ৪০ শতাংশ, যা বর্তমানে ২১ শতাংশে নেমে এসেছে। অতিদরিদ্রের হার ২৫ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নেমে এসেছে।

‘মানুষের গড় আয়ু ৬৭ বছর থেকে ৭২ দশমিক ৬ বছরে উন্নীত হয়েছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ থেকে ১ দশমিক ৩৭ শতাংশে নেমে এসেছে। শিক্ষার হার, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক সূচক এর উন্নতি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতার প্রমাণ। এসব বিবেচনায় আপনারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করুন।’

বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকর্ন কুমার ঘোষ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মফিজ উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ কবির হোসেন, বিএসইসির সাবেক কমিশনার আরিফ খান, সুইজারল্যান্ড বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি নকিব উদ্দিন খান, সাধারণ সম্পাদক সাদ ওমর ফাহিম, বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান, মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম এবং বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছায়েদুর রহমানও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com