এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা সিএনএন জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি তাদের ৩২ হাজার কর্মীকে সন্তান নিতে উদ্বুদ্ধ করতে ১ বিলিয়ন ইউয়ান বোনাস দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যারা প্রতিষ্ঠানটিতে অন্তত ৩ বছর কাজ করেছেন, তারা সন্তান নিলে বছরে ১০ হাজার ইউয়ান করে বোনাস পাবেন। সন্তান একের অধিক হলে বোনাসও বাড়তে থাকবে। জন্মের পর থেকে ওই শিশুটির বয়স ৫ বছর হওয়া পর্যন্ত বাবা-মায়েরা বাৎসরিক এ বোনাস পেতে থাকবেন।
শুক্রবার (৩০ জুন) ট্রিপ ডটকমের সিইও জেমস লিয়াং বলেন, ‘নতুন এ চাইল্ড কেয়ার বোনাসের মাধ্যমে আমরা কর্মীদের আর্থিকভাবে সহায়তা করব। এতে কর্মীরা তাদের পেশাগত লক্ষ্য ও অর্জনের সঙ্গে আপস না করে পরিবার শুরু বা বড় করতে উৎসাহিত হবেন।
ট্রিপ ডটকম এমন ঘোষণা দেয়ার আগে চীনের আরও অনেক প্রতিষ্ঠান একই ঘোষণা দিয়েছিল।
চলতি বছরের শুরুর দিকে চীনের ন্যাশনাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিস্টিকস এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিল, দেশটিতে বর্তমান জনসংখ্যা ১৪১ কোটি ১৮ লাখ। গত বছরের তুলনায় যা ৮ লাখ ৫০ হাজার কম। এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে, জন্মহার কমে যাওয়া। দেশটিতে বর্তমানে প্রতি এক হাজারে জন্মহার মাত্র ৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
এর আগে ১৯৬১ সালে চীনে কয়েক বছরব্যাপী মহাদুর্ভিক্ষের শেষ বছরে চীনে শেষবারের মতো জনসংখ্যা কমেছিল। এরপর ৬১ বছর পেরিয়ে ২০২২ সালে এসে দেশটির জনসংখ্যা কমল।
এর কারণ হিসেবে রয়েছে ১৯৮০-র দশকে কঠোর ‘এক সন্তান নীতি’ চালুর সুদূরপ্রসারী প্রভাব (তবে পরে এই নীতি বাতিল করা হয়েছে), চীনা যুবকদের মধ্যে বিয়ে এবং পরিবারের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন, লিঙ্গবৈষম্য এবং দেশটির ব্যয়বহুল শহরে শিশুদের লালন-পালনের চ্যালেঞ্জ, বাচ্চা নেয়ার আগ্রহ কমে যাওয়া, বিয়ে ও গর্ভাবস্থায় দেরি এবং গর্ভধারণের উপযুক্ত বয়সের নারীর সংখ্যা কমে যাওয়া ইত্যাদি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি জনসংখ্যা কমার এই প্রবণতা অব্যাহত থাকে, তবে বিশ্বের অন্যান্য অংশের জন্যও একটি সমস্যা তৈরি হতে পারে। কারণ, চীন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।