অর্থনৈতিক সংকটে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রায়ত্ব বিমান পরিষেবা সংস্থা শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইন্স কিনে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন ভারতীয় কোম্পানি। সংস্থটির কর্তৃপক্ষ নিজেই নিশ্চিত করেছে এ তথ্য।
শুক্রবার শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইন্সের মহাপরিচালক সুরেশ শাহ ভারতীয় দৈনিক বিজনেসলাইনকে বলেন, ‘ভারতসহ বিভিন্ন দেশের এভিয়েশন ও নন এভিয়েশন কোম্পানি ইতোমধ্যে সংস্থাটি কেনার আগ্রহ জানিয়েছে।’
সুরেশ জানান, বর্তমানে শ্রীলঙ্কার সরকারের হাতে এই পরিষেবা সংস্থার ৯৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে এবং আগামী বছর জুনের মধ্যে এসব শেয়ার বিক্রি করে দিতে চায় কলম্বো।
গত সেপ্টেম্বরে ভারত ও শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, ভারতের টাটা সন্স, আদানি গ্রুপ এবং ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের মালিক ইন্টারগ্লোব এন্টারপ্রাইস শ্রীলঙ্কার এয়ারলাইন্স কিনে নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
সুরেশ শাহের মন্তব্যের পর এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে এই তিন কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল বিজনেস লাইন। তবে টাটা গ্রুপের বিমান পরিষেবা সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া ও আদানি গ্রুপ উভয়েই জানিয়েছে, এই মুহূর্তে তারা শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইন্সের ব্যাপারে আগ্রহী নয়। আর ইন্টারগ্লোব ইন্টারপ্রাইস কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
তবে ভারতীয় একাধিক কোম্পানি এ ব্যাপারে কোনো নিশ্চিত তথ্য না দিলেও শ্রীলঙ্কার সরকার ইতোমধ্যেই নিজেদের বিমান সংস্থার শেয়ার বিক্রির ব্যাপারটি নিয়ে প্রচার-প্রচারণা শুর করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ সংক্রান্ত টিজারও প্রকাশ করেছে শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইন্স।
সেই টিজারের মূল বক্তব্য হলো, বিমান পরিষেবার বাজারে ভারত তৃতীয় বৃহত্তম দেশ এবং যদি ভারতীয় কোনো কোম্পানি শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইন্স কিনে নেয়, সেক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কাও সেই বাজারে প্রবেশাধিকার পাবে।
শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইন্সের মালিকানায় মোট ২৩টি এয়ারবাস রয়েছে এবং মোট ৩৯ আন্তর্জাতিক গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা করে এই সংস্থা।
দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি প্রধানত পর্যটননির্ভর এবং আরও সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে, ভারতীয় পর্যটকনির্ভর। গত সেপ্টেম্বরে ২ লাখের বেশি ভারতীয় পর্যটক শ্রীলঙ্কা ভ্রমণ করেছেন। দেশটির সরকারি হিসেব অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরে যত বিদেশি পর্যটক শ্রীলঙ্কায় এসেছেন— তার বিশ শতাংশই ভারতীয়।
গত মাসে ভারতীয় পর্যটকদের ভিসা ফ্রি প্রবেশাধিকার দিয়েছে শ্রীলঙ্কা।