শীত এলেই কেঁপে ওঠে সিমলা! বরফের মাঝে সময় কাটানো যাদের কাছে স্বপ্নের মতো; তারা কফির কাপে চুমুক দিতে যেতে পারেন সিমলায়। চাইলে রওনা হতে পারেন আজই। বাস-ট্রেনে করেই অল্প খরচে পৌঁছে যাবেন এই স্বর্গভূমিতে। যতদূর চোখ যাবে সুউচ্চ গিরিশিখরেরা দাঁড়িয়ে আছে ঘন সরলবর্গীয় গাছের লাইন ধরে। তার পাশেই ইতিউতি বাড়ির ক্লাস্টার, ওপরে নীল আকাশ, প্রাণখোলা বিশুদ্ধ বাতাস শরীর ও মনকে এক অন্য অনুভূতি দেবে।
সাজানো গোছানো শহরে বেড়াতে বেড়াতে ম্যালেতে বা রেস্টুরেন্টে ঢুঁ মারতেই পারেন। এর মাঝে আছে চার্চ, ব্রিটিশ আমলে গড়ে ওঠা লাইব্রেরী এবং আরেকটু এগোলেই সিমলার কালীবাড়ি। সেখানে বানরের প্রকোপ বেশি, তাই আপনার জিনিসপত্র সাবধানে রাখবেন। হোটেল, থাকা, খাওয়া, বেড়ানো সবই সাধ্যের মধ্যে। দিন প্রতি খরচ হবে ১২০০-১৫০০ টাকার মতো।
গোয়া
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর গোয়া। স্বচ্ছ নীল পানি ও সী ফুডের প্রাচুর্যের জন্যই এর জনপ্রিয়তা বিশ্বজুড়ে। নর্থ গোয়ার হ্যান্ডিক্রাফট এমপরিয়াম, কোকোবিচ, ক্যালাঙ্গতে বিচ, রিভার ত্রুজিং ও করতে পারেন চাইলে। সাউথ গোয়াতে লৌতেলিম গ্রাম প্রাচীন গোয়ার ঐতিহ্যবাহী। তারপর সান্তা দুর্গা মন্দির, ব্যাসিলিকা চার্চ ও সেন্ট কেথেড্রাল চার্চের স্বর্ণ ঘণ্টাও দেখতে পারেন।
মিরামার, বাগা, কোলভা, পানজিম, আঞ্জুনা প্রভৃতি বিচ এলাকায় থাকার জায়গার অভাব নেই। বেশ কিছু সরকারি হোটেলও পাবেন। খরচ এক থেকে পাঁচ হাজার পর্যন্ত হতে পারে। বিশ হাজার টাকা পকেটে নিয়েই সড়ক পথে গিয়ে ঘুরে আসতে পারেন।
দারিংবাড়ি
শৈলশহর দারিংবাড়িকে বলা হয় ‘ওড়িশার কাশ্মীর’। হাতে তেমন টাকা নেই, কিন্তু কাশ্মীরের জন্য মন হুহু করছে? তাহলে দারিংবাড়িই হতে পারে আপনার স্বপ্নের ঠিকানা। পাইন বনের ভেতরে দুলুরি নদী, কফি বাগান এবং পার্বত্য ভূমিরূপ আপন করে নেবে আপনাকে। সাইট সিনের জন্য গাড়ি রিজার্ভ করাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। মন্দসুরু পার্ক, ম্যাগনেটিক ভ্যালি, তপ্তপানি ডিয়ার পার্ক ও হারভাঙ্গি জলাধারা আপনাকে আহ্বান করবে পরম আতিথেয়তায়।
ওড়িশাগামী অনেক ট্রেন পেয়ে যাবেন কলকাতা থেকে। তবে অমরাবতী এক্সপ্রেস সবচেয়ে ভালো সার্ভিস দেয়। গোপালপুর স্টেশনে নেমে সবুজ পাহাড়ের বুক চিরে মেঘরাজির মধ্য দিয়ে যাত্রা আপনার নৈসর্গিক চাহিদাকে পূরণ করবে। জনপ্রতি দশহাজার টাকার মধ্যে ঘুরে আসতে পারবেন।
সিকিম
নামটা আমাদের কাছে বেশ পরিচিত হয়ে উঠেছে। স্বর্গসম সিকিমে হিমালয় পর্বতমালার পাশাপাশি আছে লেক, ঝরনা, হাজারো মনেস্ট্রি, প্যাগোডা ইত্যাদি। এই সৌন্দর্যের কারণে সিকিমকে বলে স্বর্গ। লাচেন, লাচুং,জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু করে কাঞ্চনজঙ্ঘার নয়নাভিরাম দৃশ্য ও ইউথ্যাং ভ্যালি, ছাঙ্গু লেক, গুরুদাংমার কিছু মিস করবেন না। তিস্তার গা ঘেঁষে পাহাড়ি শোভা উপভোগ করতে করতে বুদ্ধিস্ট মনেস্টারিগুলোও ঘুরে দেখতে পারেন।
হাতে সপ্তাহখানেক সময় থাকলে তবেই সেখানে গিয়ে মন ভরাতে পারবেন। শীতের পোশাক নিয়ে যেতেই হবে আপনাকে। শিলিগুড়ি থেকে কারে আসতে পারেন গ্যাংটকে। সেখান থেকে গাড়ি নিয়ে ঘোরাঘুরি, খরচ ১৬ হাজারের কম-বেশি হবে।
ভোপাল
আপনি ইতিহাস সন্ধানী? তাহলে যেতে পারেন ভোপাল। ভারতীয় সংস্কৃতি স্থাপত্যের অপরূপ মিলন ঘটেছে ভোপাল থেকে মাত্র ৫০ কিমির মধ্যে অবস্থিত সাঁচিস্তূপে। সম্রাট অশোকের এই হেন মনোলিথিক রক কারভিং আপনার অজান্তেই আপনাকে ইতিহাসের গভীরে নিয়ে যাবে। কাছাকাছি রয়েছে পিপলস মল ও ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট ভিমবেটকা গুহা। যেখানে পৌরাণিক ভীম ও হিড়িম্বার প্রেমের ছোঁয়া রয়েছে ও গুহামানবদের আঁকা ছবি। হাওড়া থেকে মুম্বাই এক্সপ্রেসে জব্বলপুর তারপর ইন্ডোর এক্সপ্রেসে ভোপাল। খরচ হবে জনপ্রতি আনুমানিক দশ হাজার টাকা।