মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২৮ অপরাহ্ন
Uncategorized

ল্যাম্পপোস্টের আলোয় পড়েই কম্পিউটার সায়েন্স স্নাতক রাহুল ঠাকুর

  • আপডেট সময় রবিবার, ২২ মে, ২০২২

ল্যাম্পপোস্টের আলোয় বসে রাতে পড়াশোনা করে বহু বছর আগে ‘বিদ্যার সাগর’ হয়ে উঠেছিলেন মেদিনীপুরের ঈশ্বরচন্দ্র। এবার ল্যাম্পপোস্টের আলোয় পড়াশোনা করে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের গড়িয়ার রাহুল ঠাকুর। চলছে স্নাতকোত্তরের প্রস্তুতি।

রাহুল ঠাকুরের বাবা পেশায় নাপিত। ছোটখাটো একটা সেলুন রয়েছে তাদের। তা থেকে যেটুকু আয় হয় সবটাই চলে যায় সাতজনের সংসারের গ্রাসে। যে সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরোয় সেই সংসার টেনে ছেলের পড়াশোনার দিকে নজর দেওয়ার সম্য হয় না বাবার। তাদের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংস্থান নেই, কারণ বিদ্যুতের বিল মেটানো তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। কেরোসিন কেনার টাকাও নেই। তাই অগত্যা রাস্তার আলোর উপরেই ভরসা করতে হয় রাহুলকে। ওই আলোতেই পড়াশোনা করে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতকের গণ্ডি পেরিয়েছেন তিনি। এখন ডিসট্যান্সে করছেন স্নাতকোত্তর।

রাস্তার আলোতে পড়াশোনা কেন? রাহুল নিজেই জানিয়েছেন এক্ষেত্রে তার অনুপ্রেরণা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। দারিদ্রের অন্ধকারের গর্ভে তাই এভাবেই আলো খুঁজে নিয়েছেন রাহুলও। তিনি বলেন, বাড়ির আর সকলে যখন ঘুমিয়ে পড়েন। তখন বইখাতা নিয়ে পাড়ার মোড়ে বেরিয়ে পড়েন রাহুল। শুরু হয় পড়াশোনার সাধনা। ভোর রাত পর্যন্ত রোজই এভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যান তিনি। মশার কামড়কে গ্রাহ্য করেন না। কখনও কখনও পুলিশ এসে জিজ্ঞাসাবাদ করে, কখনও সমাজবিরোধীদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ হয়। তবে কোনও বাধাতেই দমে যাননি গড়িয়ার রাহুল। ক্লাস সেভেন থেকে তিনি এভাবেই পড়াশোনা করে আসছেন বলে জানিয়েছেন।

রাতে পড়াশোনা করেন রাহুল। ওদিকে দিনের বেলায় সেলুনে বাবাকে সাহায্য করতে হয়।

মেদিনীপুর থেকে বাবার হাত ধরে কলকাতা এসেছিলেন ছোট্ট ঈশ্বর। গড়িয়ার রাহুল কলকাতায় এসেছেন বিহারের গ্রাম থেকে, সেই বাবার হাত ধরেই। চোখে তার অনেক বড় স্বপ্ন আঁকা রয়েছে। বড় হয়ে একদিন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হতে চান তিনি। সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে চলেছেন সমস্ত প্রতিকূলতাকে জয় করে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com