লাল-সবুজের পতাকা হাতে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বভ্রমণের এক ঐতিহাসিক অধ্যায় রচনা করেছেন নাজমুন নাহার। স্বাধীন বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকাকে বহন করে তিনি পা রেখেছেন ১৬৭টি দেশে। তিনি বর্তমানে ক্যারিবীয় অঞ্চলের দ্বীপ রাষ্ট্র সেন্ট লুসিয়াতে অবস্থান করেছেন।
শনিবার (৮ জুলাই) সেন্ট লুসিয়ার প্রধানমন্ত্রী ফিলিপ জোসেফ পিয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশি পরিব্রাজক নাজমুন নাহার। তাকে ১৬৭ দেশে বিশ্ব শান্তির বার্তা ও লাল-সবুজের পতাকা বহনের কৃতিত্বের জন্য দেশটির প্রধানমন্ত্রী অভিনন্দন জানান এবং ‘সুপার ব্রেভ গার্ল’ বলে আখ্যায়িত করেন।
সেন্ট লুসিয়ার সংবাদপত্র নাজমুন নাহারের বিশ্ব ভ্রমণ নিয়ে এক বিশেষ ফিচার স্টোরি প্রকাশ করে। খ্যাতনামা সাংবাদিক মার্বেলা অ্যান্থনির লেখায় উঠে আসে নাজমুন নাহারের স্বপ্ন সংগ্রাম ও বিশ্ব অভিযাত্রার কঠিন চ্যালেঞ্জের কথা। বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের সুনাম অক্ষুণ্ন রেখে এভাবেই বিশ্ববাসীর কাছে গৌরবের সঙ্গে বাংলাদেশকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন তিনি।
চলতি বছরের মে মাস থেকে নাজমুন এবারের অভিযাত্রা শুরু করেছেন দক্ষিণ আমেরিকার দেশ সুরিনাম ও গায়ানা থেকে ক্যারিবিয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ ত্রিনিবাদ টোবাগো, গ্রেনাডা, সেন্ট ভিন্সেন্ট এন্ড গ্রানাইড, বার্বাডোস ও সেন্ট লুসিয়া পর্যন্ত। নাজমুন ভ্রমণ করবেন বিশ্বের প্রতিটি দেশ।
২০০০ সালে ভারতের ভুপালের পাঁচমারিতে ‘ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভেঞ্চার প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে তার প্রথম বিশ্ব ভ্রমণের সূচনা হয়। ২০১৮ সালের ১ জুন শততম দেশ ভ্রমণের মাইলফলক সৃষ্টি করেন জাম্বিয়া ও জিম্বাবুয়ের সীমান্তের ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাতের উপর। ১৫০ দেশ ভ্রমণের মাইলফলক সৃষ্টি করেন আফ্রিকা মহাদেশের দেশ সাওতমে অ্যান্ড প্রিন্সিপ।
২২ বছর ধরে নাজমুন পৃথিবীর এক দেশ থেকে আরেক দেশে বিভিন্ন জনপদের মাঝে বাংলাদেশের পতাকাকে তুলে ধরেছেন। এছাড়া তিনি পরিবেশ রক্ষা ও বাল্য বিবাহ বন্ধের লক্ষ্যে সারা পৃথিবী জুড়ে মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করেন। নাজমুন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভ্রমণের সময় ‘নো ওয়ার অনলি পিস, সেভ দ্য প্ল্যানেট এই শান্তি ও ঐক্যের বার্তাগুলো পৌঁছান এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশু ও তরুণদেরকে উৎসাহিত করেন।
পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশ নাজমুন সড়কপথে ভ্রমণ করেছেন। তার ২২ বছরের বিশ্ব অভিযাত্রার মাঝে তিনি বহু প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়েছেন। বহুবার মৃত্যুমুখে পতিত হয়েছেন, তবুও একের পর এক দেশ ভ্রমণ করেছেন লাল সবুজের পতাকা হাতে। তিনি মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে বাংলাদেশকে নিয়ে যাচ্ছেন তার বিশ্ব অভিযাত্রার সাথে।