আজব রোগ। জন্ম হল মেয়ের। কিন্তু শৈশবকাল পার হতেই সেই মেয়েই পরিণত হল ছেলেতে। হ্যাঁ, ডমিনিকান রিপাবলিকের দক্ষিণ-পশ্চিমে বারাভোনা প্রদেশের প্রত্যন্ত একটি গ্রামে এমনই ঘটনা ঘটে।
গ্রামের নাম সালিনাস। সেখানে কয়েক শ’ বছর ধরে মেয়ে শিশুদের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটে চলে। ঠিক ১২ বছর পেরোনোর পর সেই মেয়েই শারীরিকভাবে পাল্টে যায়। পরিণত হয় ছেলেতে।
এবিষয়ে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এক ধরণের বিশেষ শারীরিক ত্রুটির কারণে গ্রামের মেয়েদের সাথে এমনটা ঘটে। গর্ভাবস্থায় থাকাকালীনই শিশুদের উপর এই প্রভাব পড়তে শুরু করে। ধারণা করা হয় এই সমস্যার সৃষ্টি হয় গর্ভাবস্থায় একটি বিশেষ এনজাইমের অভাবে।
এমনই সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে জামিস। সেও ১২ বছর পর মেয়ে থেকে ছেলে হয়ে যায়। ছোটবেলার কথা বলতে গিয়ে জামিস বলেন, ছোটবেলায় সে স্কার্ট পড়ে স্কুলে যেত। তারপর ১২ বছর পর থেকেই তার পুরুষাঙ্গ বাড়তে থাকে। তখন সে নিশ্চিত হয়, সে একজন পুরুষ। ছোটবেলার মেয়ে থেকে সে এখন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ।
১৯৭০ সালে ডা. মাইকেল মোসলে প্রথম এই বিষয়টি লক্ষ্য করেন। তার এক বিবৃতি থেকে জানা যায়, ডিহাইড্রো টেস্টোস্টেরন নামের একটি হরমোনের জন্য গর্ভস্থ শিশুদের পুং জননাঙ্গ পরিস্ফুট হয়। এক বিশেষ ধরণের এনজাইম এই হরমোনকে আবার সক্রিয় করে তোলে।
তার মতে, সালিনাস গ্রামের মায়েদের গর্ভকালীন পুষ্টির অভাবের কারণে এই এনজাইম তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্ষরণ হতে পারে না। ফলে পুরুষ শিশু যারা তাদের পুরুষাঙ্গ জন্মের সময় ঠিকমতো গজায় না। যার জেরে তাদের মেয়েদের মত লাগে। কিন্তু তারা আসলে পুরুষ শিশু।
এই সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য এখন অন্য পন্থা ব্যবহার করা হয় ওই গ্রামে। তারা অন্য গ্রামে বিয়ে করে। ফলে এই সমস্যাও কিছুটা মিটেছে। মিশ্র রক্তের জন্য স্বাভাবিক যৌনাঙ্গ নিয়ে জন্মাতে শুরু করেছে। এরপর থেকেই আশা করা হচ্ছে, এই গ্রাম পুরোপুরি সুস্থ স্বাভাবিক হবেই হবে।