আর দ্বীপের চারপাশ মাছ শিকারের জন্য বেশ অনুকূলও ছিল। তখন এই দ্বীপে টেক্সটাইলের জন্য এক ধরনের শূককীট উৎপাদন করা হতো। কিন্তু ইঁদুরের যন্ত্রণায় কাজটি বেশ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছিল।
জেলেদের জালগুলোও প্রায় প্রতিদিন কেটে দিচ্ছিল বিচ্ছু ইঁদুরের দল। ইঁদুরের উৎপাতে জেলেরা পড়ে গেল মহামুশকিলে। আর সেই জেলেরা তেমন সচ্ছলও ছিল না যে, চটজলদি কোনো সমাধান বের করতে পারবে।
ফলে তারা সবাই মিলে আলোচনা করে শহর থেকে কিছু বিড়াল নিয়ে আসলো দ্বীপে, আর ছেড়ে দেওয়া হলো অবাধ বিচরণের জন্য। তার কিছুদিন পরই দ্বীপবাসীরা অতিষ্ঠ ইঁদুরের উপদ্রব থেকে খুব সহজেই মুক্তি পেল।
বলছিলাম, জাপানের তাশিরোজিমা দ্বীপের কথা। ১৯৫০ সালের দিকে এই দ্বীপে হাজারেরও বেশি মানুষ বসবাস করতো বলে নথিভুক্ত আছে। দিনে দিনে এই সংখ্যা কমে পনেরোতে এসে ঠেকেছে। জানা যায়, এ দ্বীপে মানুষের চেয়ে বিড়ালের সংখ্যা প্রায় ছয়গুণ।
তবে জাপানে এটিই যে বিড়াল-অধ্যুষিত একমাত্র দ্বীপ; তা নয়। দেশটিতে এমন ডজনখানেক বিড়ালের দ্বীপ আছে বলে জানা গেছে। তাশিরোজিমা আসলে মৎস্যজীবীদের গ্রাম।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই দ্বীপটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বিড়ালদের রাজত্ব দেখতে এখন প্রতিদিনই এ দ্বীপে ভিড় জমাচ্ছেন পর্যটকরা। বেড়াতে এসে তারাই এখন বিড়ালদের বিভিন্ন খাবার দিচ্ছেন।
এছাড়াও বিড়ালের প্রতি জাপানের অধিবাসীদের অন্য ধরনের স্নেহ-মমতা কাজ করে। কেননা তাদের বিভিন্ন লোকগাঁথায় বিড়াল বারবার এসেছে এক ধরনের আধাত্মিক শক্তি হিসেবে। বিড়ালকে তারা সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে দেখে।
জাপানের অনেক ব্যবসায়ী দোকানের সামনে আঙুল নাড়ানো বিড়ালের পুতুল রাখে, কারণ তারা আশা করে, বিড়ালের হাতের থাবা দোকানে ক্রেতা আনতে সাহায্য করে। এখানকার অধিবাসীদের ধারণা, বিড়াল লালনপালন করলে সৌভাগ্য ও সম্পদ প্রাপ্তির সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।