বিশ্বের দীর্ঘতম নদীর স্বীকৃতি হারাতে চলেছে মিশরের নীল নদ! সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। আফ্রিকার এই বিখ্যাত নদীটির জায়গা নিতে পারে দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন। আন্তর্জাতিক গবেষক ও অভিযাত্রী দলের এমন দাবি ঘিরে দুনিয়া জুড়ে শোরগোল।
চলতি বছরের এপ্রিলে নতুন রহস্যের সমাধানে আমাজনে পাড়ি দেন নদী বিশেষজ্ঞ ও অভিযাত্রীরা। আমাজনের বুকে প্রায় সাত হাজার কিলোমিটার ঘুরে বেড়িয়েছেন তারা। অভিযাত্রী দলের নেতৃত্বে ছিলেন ৫৫ বছরের ব্রাজিলিয় ইউরি সানাডা। সেখান থেকে ফিরে এসে বিস্ফোরক দাবি করেছেন তিনি। সংবাদসংস্থা সিএনএন-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সানাডা বলেছেন, ‘নীল হল কেঁচো আর আমাজন অ্যানাকোন্ডা। দু’টো নদীর মধ্যে কোন তুলনাই হতে পারে না। আমাদের সবচেয়ে বড় নদী রয়েছে।’
উল্লেখ্য, বিশ্বের সমস্ত নদীর মধ্যে পানি বহনের নিরিখে শীর্ষে রয়েছে আমাজন। যে কোনও নদীর চেয়ে অন্তত চারগুণ বেশি জন দক্ষিণ আমেরিকার এই নদী দিয়ে প্রবাহিত হয়। এবার হয়ত বিশ্বের দীর্ঘতম নদীর তকমাও জুটতে পারে এর কপালে, অনুমান ওয়াকিবহাল মহলের।
নীল নদ না আমাজন – কোনটি বিশ্বের দীর্ঘতম নদী, এই বিতর্ক হঠাৎ করে গজিয়ে উঠেছে এমনটা নয়। এর আগেও এই ইস্যুতে বহু আলোচনা হয়েছে নদী বিশেষজ্ঞদের মধ্যে। প্রসঙ্গত, আমাজনের উৎসস্থল নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। ঐতিহ্যগতভাবে দক্ষিণ পেরুর আপুরিম্যাক নদীকেই আমাজনের উৎস বলে ধরা হয়। যা বর্তমানে সময় মানতে নারাজ নদী বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
কয়েক বছর আগে উত্তর পেরুতে মন্টারো নামের একটি নদী আবিষ্কার করেন ৫১ বছরের অভিযাত্রী জেমস কন্টোস। এই নদীর অবস্থান আপুরম্যাক থেকে অনেকটাই দূরে। কন্টোস কিন্তু মন্টারোকেই আমাজনের উৎসস্থ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
সিএনএনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে কন্টোস বলেন, ‘আমরা আমাজনের উৎস সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলাম। কিন্তু বাস্তবে যখন মানচিত্র আর হাইড্রোগ্রাফ হাতে পাই, তখনই ভুলটা ভেঙে যায়। সেখানে অন্য একট নদীর হদিশ পেয়ে গেলাম আমরা। এর পর আমাজনের দৈর্ঘ্য ছোট করে দেখানোর কোনও মানে হয় না।’
প্রসঙ্গত, আমাজনের উৎস সন্ধানে আগামী মাসেই মন্টারো নদীতে একটি অভিযান চালাবেন কন্টোস। ইনে নদীর সঙ্গমে পৌঁছনোর পর তিনটি ভাগে ভাগ হবে অভিযাত্রীদের দল। সৌর ও প্যাডেল চালিত নৌকায় এগিয়ে যাবে তাঁরা। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই আমাজনের সঠিক দৈর্ঘ্য প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন কন্টোস। সূত্র: ওয়াশিংটন পোস্ট।