গাছের গুঁড়ির বাড়ি
লম্বা গাছের গুঁড়িটি দেখলে মনে হতে পারে কোনো গাছ কেটে জঙ্গলে ফেলে রাখা হয়েছে। তবে হিসাব মেলাতে গিয়ে একটু হোঁচট খেয়ে যাবেন দরজার দিকে নজর গেলে। ভেতরে ঢুকলেই চোখ কপালে উঠবে। কারণ একটি আস্তবাড়ির সবই এখানে দিব্যি সাজিয়ে-গুছিয়ে রাখা আছে। গাছের গুঁড়ির ভেতর বাড়ি বানিয়েছেন দুজন শখের স্থাপত্যবিদ। মূলত গাছের গুঁড়ি এ বাড়িটি আসলে প্রায় দুই হাজার বছর পুরনো একটি রেডউড গাছের গুঁড়ি।
বাড়ি বানানোর জন্য একেবারে উপযুক্ত এ গুঁড়িটিকেই বিভিন্ন প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গজুড়ে বানিয়ে দেওয়া হয়েছে বাসযোগ্য বাড়িতে। এই অদ্ভুত বাড়িটি রয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ার গ্যারবারভিলে। বাড়িটির মালিক ড্যান ব্যালেম। এই পুরো বাড়িতে রয়েছে একটি ড্রয়িংরুম, একটি বেডরুম ও একটি ডাইনিংরুম। এ ছাড়া ঘরের ভেতরে আসবাবপত্র রয়েছে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, গাছের গুঁড়িটির একপাশে একটি দরজা ছাড়া হুট করে কেউ বুঝতেই পারবে না এটি আসলে একটি বাসযোগ্য বাড়ি।
পুরনো বিমান কিনে বাড়ি
ছোটবেলা আমরা নানা ধরনের স্বপ্ন দেখি। বড় হয়ে জাহাজ চালাব কিংবা উড়োজাহাজ ওড়াব। তেমনিই এক ইচ্ছা ছিল ব্রুস ক্যাম্পবেলের মনে। তিনি স্বপ্ন দেখতেন বিমানে বসবাস করবেন তিনি। ১৫ বছর বয়স থেকে তার মনে এই শখ বাসা বাঁধে। যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগনের পোর্টল্যান্ডের একটি শহরতলি হিলসবরোয় থাকেন এই ভদ্রলোক। সেখানে সত্তরের দশকের শুরুর দিকে ২৫ হাজার ৮০০ ডলার দিয়ে ১০ একরের একটি জায়গা কিনেছিলেন তিনি। ১৯৯৯ সালে পুরনো বিমান কিনতে একটি স্যালভেইজ কোম্পানি ভাড়া করেন তিনি। কয়েক মাস খোঁজার পর কোম্পানিটি একটি বিমান খুঁজে পায়- যেটি ছিল একটি বোয়িং ৭২৭ ২০০-প্যাসেঞ্জার জেটলাইনার। ১ হাজার ৬৬ বর্গফুটের এই বিমানের ওজন ছিল প্রায় ৩২ হাজার কেজি। এ বিমানটিকে গ্রিসে পাওয়া গিয়েছিল।
বিমানটির সাবেক মালিক ছিলেন ব্যবসায়ী ও ধনকুবের এরিস্টটল ওনাসিস। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির সাবেক স্ত্রী জ্যাকুলিন কেনেডি ওনাসিসের সঙ্গে এই গ্রিক-আর্জেন্টাইনিয়ান ধনকুবের বিবাহিত ছিলেন। ১৯৭৫ সালে মারা গেলে এরিস্টটলের মৃতদেহ এ বিমানটির মাধ্যমেই স্থানান্তর করা হয়েছিল। এ বিমানটির জন্য পুরো এক লাখ ডলার গুনতে হয়েছিল ব্রুসকে। গ্রিস থেকে ওরেগনে এনে বিমানের কিছু অংশ ফেলে তার জমিতে রেখে দেওয়া হয়। ইঞ্জিনসহ বিমানটির আরও কিছু অংশ খুলে ফেলা হয়- যাতে এটি আর উড্ডয়নযোগ্য না থাকে। পুরো এ প্রক্রিয়াটিতে তার খরচ হয়েছিল প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার ডলার। শখ মেটাতে গুনতে হচ্ছে লাখ লাখ ডোলার। তবুও তার খুশিতে এতটুকুও ভাটা পড়েনি। ইঞ্জিন ও অন্যান্য অকেজো যন্ত্রাংশ ছাঁটাই করার পর বিমানটিকে বাসাবাড়ির মতো করে সাজিয়ে তুলতে আরও ১৫ হাজার ডলার খরচ করেছেন তিনি।
ভূমিকম্পে চাপা পড়া আকৃতির বাড়ি
এই বাড়ির নাম মোট পলিন অ্যাপার্টমেন্ট। প্রথম দেখায় মনে হবে, ভূমিকম্পে চাপা পড়েছে একটি বাড়ি। আসলে এটিই বাড়ির মূল নকশা। ৭২০ ইউনিটের এ বাড়িটি তৈরি হয়েছিল ১৯৭২-৭৫ সালে।
এখন পর্যন্ত পৃথিবীর সবচেয়ে অদ্ভুত বাড়ির তালিকায় রয়েছে এই বাড়ি। আয়ারল্যান্ডে গেলে দেখে আসবেন বাড়িটিকে। আরেকটা কথা, মৌমাছির মৌচাক দেখে ডিজাইনার এই বাড়ির নকশা করেছিলেন।
জাহাজ থেকে বাড়ি
একটি পরিত্যক্ত ১৯৫০ সালের এক কার্গো জাহাজ দিয়ে নির্মিত হয়েছে এ বাড়িটি। ভাঙা জাহাজ থেকে এটিকে একটি অত্যাশ্চর্য আধুনিক ভাসমান বাড়িতে রূপান্তরিত করা হয়েছে।
বাড়িটি নির্মাণ করা হয়েছে আর্মস্টারডামে। বাড়িটি সেখানকার এক প্রতিষ্ঠান তার এমন এক ক্লায়েন্টের জন্য নির্মাণ করেছিলেন যিনি জলের ওপর থাকতে চেয়েছিলেন।
পাথর-বাড়ি
এ বাড়িটির নাম স্টোন হাউস। দেখে মনে হয়- যেন একটি ইয়া বড় পাথর পড়ে আছে ঘাসের বুকে। অথচ এটিই কিনা একটি বাড়ি! পর্তুগালের পাহাড়ের ওপর বানানো এ বাড়ির নকশা সত্যিই বড় অদ্ভুত।
গাড়ি আকৃতির বাড়ি
এর নাম হলস হাউস। গাড়ি ভেবে ভুল করবেন না। এটি একটি আস্তবাড়ি। ৭৫ শতাংশ প্রক্রিয়াজাত জিনিস দিয়ে বানানো এ বাড়িটি দেখতে আসলেই অন্য রকম সুন্দর।
ট্রেন-বাড়ি
একটি পুরনো ট্রেনের বগিকে বানানো হয়েছে বাড়ি। পূর্ব ভার্জিনিয়া থেকে আনানো এ বগিটিকে লঞ্চবার্গে বাড়ির আকৃতি দেওয়া হয়। এই ৪০ ফুট লম্বা বগিটিকে এমনভাবে বাড়িতে রূপান্তরিত করা হয়েছে- যেন এর ক্ল্যাসিক আকর্ষণ বজায় থাকে।
বাস-বাড়ি
পেশায় মৃৎশিল্পী উদয় দাস বানিয়ে ফেলেছেন আস্ত একটি বাস-বাড়ি। দূর থেকে চোখ পড়লে মনে হবেÑ যেন দাঁড়িয়ে রয়েছে একটি বাস। কিন্তু কাছে গেলে বোঝা যায়, আদতে কংক্রিটের তৈরি বাড়ি একটি। প্রতিমা বানিয়ে যতটুকু আয় হয়, তা দিয়েই সংসার চালান বীরভূমের পাড়ুই থানার ধানাই গ্রামের বাসিন্দা উদয় দাস। বারো মাসে তেরো পার্বণে তার দোরে বায়না দিতে হাজির হন অনেকেই। এক চিলতে ঘরে তাদের বসাবেন কোথায়? অস্বস্তি হতো তার। তাই তিনি মনে মনে ভাবেন এমন একটি বাড়ি বানাবেনÑ যাতে তাক লেগে যায় সেটি দেখে। ওই ইচ্ছা পূরণে অবশেষে নেমে পড়েন একদিন।
ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে বাড়ি বানিয়েছেন নিজের শিল্পীসত্তার তুষ্টির জন্য। আস্ত একটি বাসের মডেল বানিয়ে ফেলেন তিনি। দৈর্ঘ্যে সাড়ে ২২ ফুট, প্রস্থে সাড়ে ৮ ফুট। বাসে রয়েছে ১৫টি জানালা। যাত্রী ও ড্রাইভারের জন্য আলাদা দুটি গেট ওপ রয়েছে। বাসের কেবিনে দুদিকে জানালা, এমনকি লুকিং গ্লাসও লাগানো হয়েছে। আর সামনে রয়েছে মস্তবড় কাচ। একদম আসল বাসের মতোই। ভেতরে রয়েছে যাত্রীদের বসার আসন। বাসের ছাদে ওঠার জন্য পেছন দিকে সিঁড়ি লাগানো আছে; রয়েছে পাদানিও। বাসের কেবিনটিই হলো রান্নাঘর।