শনিবার রাতে ও রবিবার দিনের শুরুতে তরুণ বিক্ষোভকারীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে। তারা একজন মেয়রের বাসায় জ্বলন্ত গাড়ি হামলা চালিয়েছে। এসবই ঘটেছে ফ্রান্সে চলমান বিক্ষোভের পঞ্চম রাতে। পুলিশের গুলিতে এক কিশোর নিহত হলে এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। তবে এর আগের রাতগুলোর তুলনায় সহিংসতার মাত্রা কিছুটা কম দেখা গেছে।
বেশ কয়েক বছরের মধ্যে ফ্রান্সের সবচেয়ে ভয়াবহ সামাজিক আন্দোলন নিয়ন্ত্রণে আনতে গণহারে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়। পুলিশ রবিবার সকাল নাগাদ দেশব্যাপী ৭১৯ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে।
দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়া এই সংকট প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রোর নেতৃত্বের প্রতি নতুন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে এবং চলমান বিক্ষোভে নিম্ন-আয়ের সম্প্রদায়গুলোতে বৈষম্য ও যথেষ্ট সুযোগের অভাব নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দানা বেঁধে ওঠা অসন্তোষ প্রকাশ্যে চলে এসেছে।
মঙ্গলবার ১৭ বছর বয়সী কিশোর নাহেল নিহত হলে বিক্ষোভ দেখা দেয়। শনিবার প্যারিসের শহরতলী নানতেরেতে ইসলামিক প্রক্রিয়ায় নাহেলের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। নানতেরে এলাকায় ছিল নাহেলের বসবাস। যার ফলে এ এলাকার বাসিন্দারা এখনো তার মৃত্যুর শোক কাটিয়ে উঠতে পারেননি।
শনিবার ফরাসি রাজধানীতে রাত নেমে আসার পর অল্প কিছু মানুষ নাহেলের মৃত্যু ও পুলিশী সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে শঁ যে লিজে-তে জমায়েত হয়। তবে সেখানে তারা শত শত পুলিশ কর্মকর্তাকে ব্যাটন ও বর্মসহ এই ঐতিহ্যবাহী অ্যাভিনিউ ও এখানে অবস্থিত কার্টিয়ার ও ডিওরের শোরুম পাহারা দিতে দেখে। উত্তর প্যারিসের অপেক্ষাকৃত কম-অভিজাত এক মহল্লায় বিক্ষোভকারীরা বেশ কয়েক দফা আতশবাজি পোড়ায় এবং ব্যারিকেডে আগুন দেয়। প্রত্যুত্তরে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও স্টান গ্রেনেড ছুঁড়ে মারে।
প্যারিসের শহরতলি লহে-লে-রোসেস এ মেয়রের বাড়িতে রাতের বেলা একটি জ্বলন্ত গাড়ি আঘাত হানে। সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক স্কুল, থানা, টাউন হল ও দোকানে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হলেও একজন মেয়রের বাড়িতে এ ধরনের হামলা বিরল।
ভূমধ্যসাগরীয় শহর মার্সেইয়ে সংঘাত ছড়িয়ে পড়লেও এর মাত্রা আগের রাতের তুলনায় কম ছিল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাড়তি পুলিশ বাহিনী মোতায়েনের ফলে সেখানে ৫৫ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আগের রাতের তুলনায় দেশব্যাপী গ্রেপ্তারের সংখ্যা কম ছিল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড দারমানিন একে “নিরাপত্তা বাহিনীর দৃঢ়প্রতিজ্ঞ পদক্ষেপের” ফসল হিসেবে বর্ণনা করেন।