বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৭ অপরাহ্ন

ডিজিটাল ব্যাংক : শাখা ছাড়াই হবে লেনদেন

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৯ জুন, ২০২৩

সব পর্যায়ের মানুষের কাছে ব্যাংকিং সুবিধা পৌঁছে দিতে চালু হবে ডিজিটাল ব্যাংক। প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক ব্যাংকের লাইসেন্স পেতে ন্যূনতম মূলধন লাগবে ১৫০ কোটি টাকা। ডিজিটাল এই ব্যাংকের রূপরেখা ও নীতিমালা প্রণয়নের কাজ প্রায় শেষ। সব কিছু ঠিক থাকলে বাংলাদেশ ব্যাংকের আগামী বোর্ড সভায় ডিজিটাল ব্যাংক অনুমোদন হ‌বে। শাখা ছাড়াই চল‌বে এই ব্যাংক।

এর আগে গত ১ জুন প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে দেশের অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তির প্রচেষ্টাকে প্রসারিত ও ত্বরান্বিত করতে একটি ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনের কথা বলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ডিজিটাল ব্যাংকের নীতিমালা প্রণয়নের কাজ শেষ হয়েছে। এ নীতিমালা ও ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ীই পরিচালিত হবে ডিজিটাল ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, ডিজিটাল ব্যাংক অনুমোদন হলেই স্মার্ট বাংলাদেশ অভিমুখে ব্যাংকের যাত্রা আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে। ইতোমধ্যে ডিজিটাল ব্যাংকের রূপরেখা ও নীতিমালা প্রস্তুত করা হয়েছে। তা আগামী ১৪ জুন বোর্ড সভায় উপস্থাপন করা হ‌বে।

ডিজিটাল ব্যাংক লাইসেন্স পেতে ন্যূনতম মূলধন লাগবে ১৫০ কোটি টাকা। বর্তমানে প্রচলিত ব্যাংকের লাইসেন্স পেতে ন্যূনতম মূলধন দরকার হয় ৫০০ কোটি টাকা।

ডিজিটাল ব্যাংকের আমানত সংগ্রহ, ঋণ আবেদন ও ঋণ অনুমোদন সবই কিছুই হবে অনলাইনভিত্তিক। এতে ভুয়া ও বেনামি ঋণগ্রহিতা শনাক্ত সহজ হবে। প্রকৃত ঋণগ্রহিতা দ্রুত ঋণ নিতে পারবেন।

জানা গেছে, ডিজিটাল ব্যাংকের আমানত সংগ্রহ, ঋণ বিতরণ ও বিভিন্ন ফি বা চার্জ গ্রহণ সবই হবে অ্যাপভিত্তিক। ডিজিটাল ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থাকবে কিন্তু কোনও শাখা থাকবে না। প্রাথমিকভাবে ডিজিটাল ব্যাংক শুধু সিএমএসএমই ঋণ বিতরণ করবে।

এছাড়া বিভিন্ন পরিষেবা বিল, মাশুল জমা দেওয়া, টাকা স্থানান্তর, কেনাকাটার মতো বিভিন্ন সেবা যুক্ত হবে ডিজিটাল ব্যাংকে। এই ব্যাংক অনুমোদন হলে গ্রাহকরা আরও সহজে ব্যাংকিং সেবা পাবে। গ্রাহকের সময় ও ভোগান্তি দুটোই কমবে।

নীতিমালা অনুযায়ী, প্রত্যেক স্পন্সরের সর্বনিম্ন শেয়ারহোল্ডিং হবে ৫০ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ১২ কোটি টাকা। ফিনটেক কোম্পানি, প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান, ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান, মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস), ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপনে যৌথ উদ্যোগ নিয়ে আসতে পারবে। ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স ইস্যু করার তারিখ থেকে ৫ বছরের মধ্যে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজারে আসতে হবে বলেও প্রস্তাবিত নীতিমালায় বলা হয়েছে।

ডিজিটাল ব্যাংকের রূপরেখা অনুযায়ী, ডিজিটাল ব্যাংক পরিচালনার জন্য বাংলাদেশে একটি নিবন্ধিত প্রধান কার্যালয় থাকতে হবে। নিবন্ধিত প্রধান কার্যালয়ে ব্যবস্থাপনা ও কর্মীদের অফিস থাকবে। এই কার্যালয়ে সরাসরি বা অনলাইন দুইভাবেই গ্রাহকের অভিযোগ গ্রহণ ও সমাধানের জন্য বিভাগ থাকবে। ডিজিটাল ব্যাংকের নিজস্ব কোনও এজেন্ট থাকবে না। রেমিট্যান্স সংগ্রহ করা ছাড়া বৈদেশিক মুদ্রায় লেনদেন বা বাণিজ্য অর্থায়নে যুক্ত হতে পারবে না ডিজিটাল ব্যাংক।

ব্যাংক আমানত বীমা আইন, ২০০০-এর আওতায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স স্কিম মেনে চলবে ডিজিটাল ব্যাংকগুলো। এছাড়া ডিজিটাল ব্যাংককে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিএসআর নীতি অনুসারে অথবা এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া নির্দেশনা অনুসারে সময় সময় করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কার্যকলাপও পরিচালনা করতে হবে।

গত ৫ বছরের মধ্যে কোনও সময়ে কোনও ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ঋণ খেলাপি হয়েছেন বা ছিলেন, এমন কোনও ব্যক্তি বা তার পরিবারের কোনও সদস্য প্রস্তাবিত ডিজিটাল ব্যাংকের স্পন্সর হিসেবে আবেদন করতে পারবেন না। ঋণখেলাপি অবস্থার বিরুদ্ধে কোনও আদালত বা ট্রাইব্যুনালে কোনও নিষ্পত্তিকৃত মামলার রায়ের অপেক্ষায় আছেন, এমন কোনও ব্যক্তিও ডিজিটাল ব্যাংকের স্পন্সর হিসেবে আবেদন করতে পারবেন না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবসা শুরু হওয়ার ৫ বছরের মধ্যে স্পন্সর শেয়ার হস্তান্তর করা যাবে না। ব্যবসা শুরুর তারিখ থেকে ৫ বছরের মধ্যে ব্যাংক পাবলিক শেয়ার ইস্যু করবে। কোনও ব্যাংকিং কোম্পানির পরিচালক বা উপদেষ্টা বা পরামর্শদাতা প্রস্তাবিত ডিজিটাল ব্যাংকের পরিচালক হতে পারবেন না।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com