রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:২৮ অপরাহ্ন

চীনে তরুণরা কেন চাকরি ছেড়ে ‘পূর্ণকালীন সন্তান’ হতে ঘরে ফিরে আসছে

  • আপডেট সময় বুধবার, ১৯ জুলাই, ২০২৩

কাজের চাপে নাজেহাল, অতিরিক্ত খাটুনিতে ক্লান্ত জুলি এপ্রিল মাসে তার চাকরিবাকরি ছেড়ে বাড়ি ফিরে গেছেন বাবামায়ের কাছে ‘পূর্ণকালীন সন্তান’ হিসাবে ঘরে থাকতে। বেইজিংএ তিনি কম্প্যুটার গেম তৈরির কাজ করতেন।

এখন ২৯ বছর বয়সী জুলির সারাটা দিন কাটে বাসন ধুয়ে, বাবামায়ের জন্য রান্না এবং সংসারের আরও নানা কাজ করে। জুলির বাবামা তাকে প্রতি দিনের হাতখরচাটা জোগান। তারা জুলিকে মাসে দু হাজার ইউয়ান (২৮০ ডলার) বেতন দিতে চেয়েছিলেন। জুলি নেননি।

জুলি এই মুহূর্তে চাইছেন প্রতিদিন ১৬ ঘণ্টা অমানুষিক পরিশ্রমের হাত থেকে মুক্তি। “আমি ছিলাম আদতে একটা লাশ, যেটা শুধু হেঁটেচলে বেড়াত,” তিনি বললেন।

চীনে একদিকে কর্মস্থলে অমানুষিক শ্রম, অন্যদিকে চাকরির বাজারের নিদারুণ হাল- এই দুই কারণে দেশটির তরুণ সমাজ অভিনব জীবন বেছে নিচ্ছে।

জুলির মত তরুণ-তরুণীর সংখ্যা চীনে ক্রমশ বাড়ছে যারা নিজেদের নাম দিয়েছে ‘পূর্ণকালীন সন্তান’। এরা বাবা-মায়ের আরামের সংসারে ফিরে যেতে চাইছে- হয় অমানুষিক পরিশ্রমের পর কিছুদিন আরামআয়েষ করে দিন কাটাতে, নয়ত বাজারে চাকরি খুঁজে হন্যে হয়ে কিছুই না জোটাতে পেরে।

চীনে তরুণ প্রজন্মকে সবসময় বলা হয়েছে যে সাফল্য পেতে হলে, জীবনে জিততে হলে লেখাপড়ার জন্য অনেক খাটতে হবে, কঠিন পরিশ্রম করে ভাল ডিগ্রি পেতে হবে। এখন সেই প্রজন্ম মনে করছে জীবনযুদ্ধে তারা পরাজিত- তারা একটা যাঁতাকলে আটকা পড়েছে।

চীনে বেকারত্বের হার খুবই চড়া, ফলে হতাশায় ভুগছে তরুণ সমাজ

ছবির উৎস,GETTY IMAGES

ছবির ক্যাপশান,
চীনে বেকারত্বের হার খুবই চড়া, ফলে হতাশায় ভুগছে তরুণ সমাজ

মে মাসে প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, দেশটিতে ১৬ থেকে ২৪ বছর বয়সী প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজনের বেশি কর্মহীন। ২০১৮ সালে কর্তৃপক্ষ এই তথ্য প্রকাশ শুরু করার পর থেকে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বেকারত্বের হার বর্তমানে সবচেয়ে বেশি। গ্রামীণ এলাকায় চাকরির বাজারের চিত্র এই পরিসংখ্যানের অন্তর্ভুক্ত নয়।

তথাকথিত এই “পূর্ণকালীন সন্তানদের” অনেকেই বলেছেন তারা দীর্ঘমেয়াদে ঘরে বসে থাকতে চান না – এটা নিতান্তই সাময়িক – তাদের জন্য এটা শুধুই আরাম করার জন্য কিছুটা সময় বেছে নেওয়া, সেই সময় সামনের কর্ম পরিকল্পনা নিয়ে ভাবা এবং ভাল চাকরি খোঁজা। কিন্তু এটা বলা যত সহজ, কাজটা তত সহজ নয়।

জুলি গত দু সপ্তাহে এপর্যন্ত চাকরির সন্ধানে ৪০টির বেশি আবেদনপত্র পাঠিয়েছেন। ইন্টারভিউতে ডাক পেয়েছেন মাত্র দু জায়গা থেকে।

“চাকরি ছাড়ার আগে কাজ পাওয়া ছিল কঠিন, এখন চাকরি ছাড়ার পর তা আরও কঠিন হয়ে উঠেছে,” তিনি বলছিলেন।

দম শেষ, কর্মহীন নাকি যাঁতাকলে আটকা?

চীনে গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের স্নাতক উপাধি দান অনুষ্ঠান

ছবির উৎস,GETTY IMAGES

ছবির ক্যাপশান,
আরও এক কোটি ১৬ লাখ নতুন শিক্ষার্থী গ্র্যাজুয়েট হয়ে বেরলে চাকরির বাজার আরও কঠিন হয়ে উঠবে বলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন

চীনে কর্মজীবন ও ব্যক্তিজীবনের মধ্যে ভারসাম্য রাখার ব্যাপারটা এতটাই কঠিন যে অতিরিক্ত কর্মঘণ্টা শ্রম দিয়ে দম ফুরিয়ে যাওয়া প্রাপ্তবয়স্করাই যে দেশটির “পূর্ণকালীন সন্তান” হয়ে উঠছেন, তাতে আশ্চর্য হবার কিছু নেই।

চীনে কর্মসংস্কৃতিকে প্রায়ই ব্যাখ্যা করা হয় প্রচলিত “৯৯৬” নামে – অর্থাৎ সেখানে সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কাজ করতে হয় সপ্তাহে ৬ দিন।

চেন ডুডু-ও একজন “পূর্ণকালীন কন্যাসন্তান” হয়েছেন। এবছরের গোড়ার দিকে আবাসন শিল্প খাতে তার চাকরি থেকে তিনি ইস্তফা দেন। খাটতে খাটতে ক্রমশ তার দম ফুরিয়ে আসছিল এবং কাজে তার যথেষ্ট মূল্যায়নও করা হচ্ছিল না। ২৭ বছর বয়সী চেন ডুডু বলছিলেন, বাসভাড়া দেবার পর তার হাতে “খরচের অর্থ আর প্রায় কিছুই থাকত না”।

যখন তিনি দক্ষিণ চীনে তার বাবামায়ের বাড়িতে ফিরে যান, মিজ চেন বলেন, তিনি একজন “অবসরপ্রাপ্তের মত জীবন কাটাচ্ছিলেন”। কিন্তু ধীরে ধীরে উদ্বেগ তাকে গ্রাস করতে শুরু করে। তিনি বলেন মাথার ভেতর তিনি স্পষ্ট দুটো কণ্ঠ শুনতে পাচ্ছিলেন: “একটা কণ্ঠ বলছিল এধরনের বিশ্রাম একটা বিরল বিলাসিতা, কাজেই এটা উপভোগ করে নাও। অন্য কণ্ঠটা বলছিল এরপর কী করবে সেটা ভাবতে শুরু করো।”

মিজ চেন এরপর তার নিজের ব্যবসা শুরু করেন। তিনি বলেন: “আমার ওই বিশ্রামের দিনগুলো যদি আরও লম্বা হতো, আমি কিন্তু সত্যিই পরজীবী হয়ে যেতাম।”

চেন ডুডু
ছবির ক্যাপশান,চেন ডুডু আবাসন শিল্প খাতে তার চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে ‘পূর্ণকালীন সন্তান’ হয়ে গেছেন

জ্যাক ঝেং সম্প্রতি চীনের বিশাল প্রযুক্তি কোম্পানি টেনসেন্ট থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। তিনি বলছিলেন তাকে প্রতিদিন কাজের সময়ের বাইরে কাজ সংক্রান্ত প্রায় ৭০০০ টেক্সট মেসেজের উত্তর দিতে হতো। ৩২ বছর বয়সী এই প্রযুক্তি কর্মী বলছেন এটা “অদৃশ্য একটা ওভারটাইম” – কারণ আপনার কাছে কাজ চাওয়া হচ্ছে, কিন্তু তার বিনিময়ে কোন অর্থ দেয়া হচ্ছে না। অবশেষে তিনি কাজ ছাড়তে বাধ্য হন কারণ অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে তিনি ফলিকিউলাইটিস রোগের শিকার হন। এটা একধরনের চর্মরোগ – মানসিক চাপ থেকে এই রোগে চুলের গোড়ায় প্রদাহ সৃষ্টি হয়।

তবে মি. ঝেং এরপর একটা ভাল চাকরি পেয়েছেন, যদিও তিনি বলছেন তার আশেপাশে অন্যরা তার মত ভাগ্যবান হননি। অনেকেই মনে করেন তারা তথাকথিত “৩৫-এর অভিশাপ”এর শিকার। চীনের মানুষ ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করে যে দেশটির চাকুরিদাতারা ৩৫এর বেশি বয়সীদের কাজ দিতে চায় না- তারা বরং চায় তরুণ প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের কারণ তাদের ওপর “খরচ কম” তাদের বেতন দিতে হয় কম।

তিরিশের মধ্য কোঠায় যাদের বয়স তাদের জন্য এটা বিরাট একটা চ্যালেঞ্জ – একদিকে বেশি বয়সের কারণে বৈষম্য অন্যদিকে চাকরির বাজারে মন্দা – যা তাদের জন্য শাঁখের করাত। তাদের মাথার ওপর হয় রয়েছে বাড়ি কেনার জন্য নেয়া বন্ধকের বোঝা, নয়ত এই বয়সে কেউ কেউ বিয়ে করে সংসার পাতার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের মধ্যেও কম হতাশা নেই। তারাও এতটাই হতাশ যে অনেকে ইচ্ছে করে পরীক্ষা ফেল করছে যাতে স্নাতক হওয়াটা পেছিয়ে দেয়া যায়।

গত কয়েক সপ্তাহে চীনের সামাজিক মাধ্যম ছেয়ে গেছে গ্র্যাজুয়েট হওয়া শিক্ষার্থীদের ভিন্নধর্মী নানা ছবিতে। ছবিতে সাফল্যে উল্লাস প্রকাশের বদলে সদ্য গ্র্যাজুয়েটদের হতাশা প্রকাশ করতে দেখা যাচ্ছে। কিছু ছবিতে দেখা যাচ্ছে স্নাতক উপাধি নেবার বিশেষ গাউন পরে আর গ্র্যাজুয়েট টুপি দিয়ে মুখ ঢেকে তারা মাটিতে “সটান শুয়ে আছেন”, কোন কোন সদ্য স্নাতকরা ছবি পোস্ট করেছেন যেখানে তাদের হাতে সার্টিফিকেট ধরা আছে আবর্জনার বিনের ঠিক উপরে, যেন সেটা এখুনি ময়লার ঝুড়িতে ফেলা হবে।

চীনের স্নাতক

ছবির উৎস,GETTY IMAGES

ছবির ক্যাপশান,
অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে কঠোর পরিশ্রম করে স্নাতক হওয়ার পর আশাভঙ্গ হচ্ছে বহু তরুণের

এক সময়ে চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতেন বড়লোকের ছেলেমেয়েরা। কিন্তু ২০১২ থেকে ২০২২এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির হার ৩০% থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ৫৯.৬%এ। কারণ প্রতিযোগিতামূলক চাকরির বাজারে উন্নত সুযোগ পাবার জন্য ডিগ্রি অর্জনকে সেই জগতে পা রাখার একটা গুরুত্বপূর্ণ সিঁড়ি বলে মনে করতে শুরু করে বহু তরুণ। কিন্তু চাকরির বাজার সঙ্কুচিত হয়ে পড়ায় তাদের সেই আকাঙ্ক্ষা রূপ নেয় চরম হতাশায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আরও এক কোটি ১৬ লাখ নতুন স্নাতক এখন চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতায় নামায় অবস্থা আরও খারাপ হয়ে উঠবে।

“পরিস্থিতি বেশ খারাপ। মানুষ ক্লান্ত এবং অনেকেই বিকল্প পথ খুঁজছে। মানুষের মধ্যে তীব্র হতাশা তৈরি হয়েছে,” বলছেন মিরিয়াম উইকার্টসহেইম। তিনি ডাইরেক্ট এইচআর নামে শাংহাই-ভিত্তিক একটি নিয়োগ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক।

কোভিডের পর চীনে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ার অপ্রত্যাশিত শ্লথ গতি বেকারত্ব এত বাড়ার প্রধান কারণ বলে মনে করেন ব্রুস প্যাং, যিনি জোন্স ল্যাং লাসালে নাামে একটি সংস্থায় বৃহত্তর চীন বিষয়ক প্রধান অর্থনীতিবিদ।

গ্র্যাজুয়েটদের জন্য সুযোগের কতটা অভাব তা তুলে ধরতে চীনের সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা হচ্ছে নানাধরনের ব্যঙ্গাত্মক ছবি

ছবির উৎস,XIAOHONGSHU

ছবির ক্যাপশান,
গ্র্যাজুয়েটদের জন্য সুযোগের কতটা অভাব তা তুলে ধরতে চীনের সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা হচ্ছে নানাধরনের ব্যঙ্গাত্মক ছবি

কোন কোন কর্মদাতা নতুন স্নাতকদের চাকরি দিতে অনাগ্রহী যারা ক্রমাগত কোভিড লকডাউনের কারণে অতীতের গ্র্যাজুয়েটদের তুলনায় কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে খুবই কম। কর্মদাতারা এই চাকরি প্রত্যাশীদের দেখছেন শুধু “ডিগ্রির কাগজধারী” হিসাবে- বলছেন মি. প্যাং।

চীনের পেশাদার তরুণরা যেসব শিল্পখাতে কাজ করতে বেশি উৎসাহী সেই খাতগুলোর ওপর চীনা কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি দমননীতি চালানোয় তার একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে চাকরির বাজারে। বড় বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ওপর ব্যাপক কড়াকড়ি আরোপ, প্রশিক্ষণ খাতের ওপর বিধিনিষেধ এবং বেসরকারি শিক্ষা খাতে বিদেশি বিনিয়োগের ওপর নিষেধাজ্ঞা এই সব কিছুর কারণে অনেক চাকরি এখন বাজার থেকে উধাও হয়ে গেছে।

‘ধীরেসুস্থে কর্মসংস্থান’

চীনের সরকার এসব সমস্যা সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল, কিন্তু তারা এটাকে বড় কোন সমস্যা হিসাবে দেখাতে চায় না।

চীনা কম্যুনিস্ট পার্টির মুখপত্র পিপলস ডেইলি সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় মে মাসে চীনা নেতা শি জিনপিংকে উদ্ধৃত করে বলা হয় তিনি তরুণ প্রজন্মকে “তেতো ওষুধ গেলার” আহ্বান জানিয়েছেন। ম্যান্ডারিন ভাষায় যার অর্থ “কষ্ট সহ্য করো”।

ইতোমধ্যে রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম বেকারত্বকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করার দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছে। রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত অর্থনৈতিক পত্রিকা ইকনমিক ডেইলির এক সম্পাদকীয়তে গত সপ্তাহে নতুন একটি পরিভাষা ব্যবহার করা হয়েছে “ধীরেসুস্থে কর্মসংস্থান”। লেখা হয়েছে কিছু তরুণ চীনা যদিও সত্যিই বেকার, কিন্তু বাকিদের অনেকেই “সক্রিয়ভাবে আস্তে ধীরে সময় নিয়ে কাজে যোগ দিতে চাইছে”।

এই পরিভাষার উৎস কোথা থেকে তা স্পষ্ট নয়, তবে চায়না ইয়ুথ ডেইলিতে ২০১৮ সালে প্রকাশিত এক নিবন্ধে লেখা হয় যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা এরকম স্নাতকের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে যারা পাশ করেই চাকরি খুঁজছে না, বরং তারা এজন্য সময় নিচ্ছে, অনেকে পাশ করার পর বেড়াতে যাচ্ছে বা অল্প সময়ের জন্য শিক্ষকতার কাজ নিচ্ছে। চীনা জনগণকে বলা হয় এটাই হল স্লো এমপ্লয়মেন্ট বা ধীরেসুস্থে কর্মসংস্থানের ধারা।

এখন তাদেরও এই সংজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে যারা চাকরি পায়নি, বা লেখাপড়া আরও চালিয়ে যেতে চাইছে কিংবা নতুন কিছু শিখছে বা পাশ করে বেরনর আগে গ্যাপ ইয়ার বা এক বছরের বিরতি নিচ্ছে। চাকরির বাজার যত খারাপই হোক না কেন, পত্রিকায় তরুণদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে যে তারা যেন “কঠিন শ্রমে উদ্যোগী হয় এবং কিছু একটা করে” – আর সেটা করলে তাদের বেকার থাকা নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হবে না।

চীনে ১৬ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজনের বেশি কর্মহীন

ছবির উৎস,GETTY IMAGES

ছবির ক্যাপশান,
চীনে ১৬ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজনের বেশি কর্মহীন

তবে বর্তমানে চাকরির বাজারের যে দুরাবস্থা, তাতে আস্তে ধীরে কাজ নেয়ার নতুন এই পরিভাষা এবং পরামর্শ কোনটাই মানুষ ভালভাবে নিচ্ছে না। সরকার যে “বেকারত্বের উঁচু হার মানতে চায় না” তাতে কেউ কেউ বিস্ময় প্রকাশ করছে, অনেকে আবার এটা নিয়ে ব্যঙ্গবিদ্রূপ করতেও ছাড়ছে না।

“চীনারা নতুন শব্দ উদ্ভাবনে দারুণ পারদর্শী,” চীনের জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যম ওয়েইবোতে মন্তব্য করেছেন এক ব্যক্তি। “আমরা অবশ্যই বেকার, কিন্তু কর্মকর্তারা দারুণ একটা পরিভাষা বের করে ফেলেছেন ‘স্লো এমপ্লয়মেন্ট’। কাজ খোঁজার এই সময়কাল কতটা ধীরগতির হবে? কয়েক মাস নাকি কয়েক বছর?” তিনি ব্যঙ্গের সুরে প্রশ্ন তুলেছেন।

চীনে ইনস্টাগ্রামের সমতুল্য মাধ্যম জিয়াওহংশু ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন এই নতুন পরিভাষা “চাকরি পাওয়ার দায়িত্বটা হঠাৎ করেই তরুণদের ঘাড়ে ঠেলে দিয়েছে”।

“বেকারত্ব মানে বেকারত্ব। যেটার যে নাম। এটা বেকারত্ব ছাড়া আর কী!” বলছেন শাংহাই ইনস্টিটিউট অফ ফাইনান্স অ্যান্ড ল’র একজন গবেষক নিই রিমিং।

“এমন তরুণতরুণী নিশ্চয়ই আছে যারা একটা চাকরি ছেড়ে পরের চাকরি শুরুর আগে লম্বা ছুটি নিতে চাইছে, কিন্তু আমি মনে করি বর্তমানে যারা বেকার তাদের বিশাল একটা অংশ কাজ পেতে মরিয়া, কিন্তু তারা কাজ পাচ্ছে না।”

বিবিসি বাংলা

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com