পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকে প্রতিদিনই কুয়াকাটায় পর্যটকের আগমন বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার পর্যটকের পদভারে মুখর হয়ে উঠেছে সমুদ্রতট। গতকাল শুক্রবার পর্যটক বেশি আসে। শনিবারও কম নয়। এই দুই দিন তারা আনন্দোৎসবে কাটিয়ে দেন। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে দ্রুত কুয়াকাটায় আসার সুযোগ হওয়ায় বহু পর্যটক আসছেন। হোটেল-মোটেলে সিটের সংকট থাকলেও কোনো আফসোস বা ক্লান্তি নেই তাদের চোখেমুখে। হোটেলে সিট না পেয়ে অনেকে বাসের মধ্যেই রাত কাটাচ্ছেন।
কোনো খাবার হোটেল যেন পর্যটকদের কাছ থেকে অতিরক্তি মূল্য আদায় না করে, সেজন্য পটুয়াখালী এবং কলাপাড়া প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছেন। ইতোপূর্বে অতিরিক্ত মূল্য নেওয়ায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়েছে। কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট ও নৌ-পুলিশ যৌথভাবে পর্যটকদের নিরাপত্তার সব চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কুয়াকাটায় পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার পর্যটকদের আগমন আরো বৃদ্ধি পাবে বলে জানিয়েছেন কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনারস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোতালেব শরীফ।
সরেজমিন দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত হাজার হাজার পর্যটক কুয়াকাটার জিরো পয়েন্ট থেকে এক কিলোমিটার পূর্ব দিকে এবং এক কিলোমিটার পশ্চিম দিকে দলগতভাবে সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের মধ্যে গোসল করছেন। বহু পর্যটক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভান্ডার ঝাউবাগান, নারিকেলবাগান, গঙ্গামতী কাউয়ারচর, লেম্বুরচর, স্পটে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। গঙ্গামতির লেকের দুই পাড়ের নৈসর্গিক শোভামণ্ডিত মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখে অভিভূত হয়ে লক্ষ্মী নামের এক পর্যটক বললেন, খুবই ভালো লাগছে এমন একটি সুন্দর জায়গায় আসতে পেরে।
কুয়াকাটার হোটেল মালিক রুহুল আমিন বলেন, ‘আমার হোটেলের সব সিট চার দিন আগেই বুকিং হয়ে গেছে। এছাড়াও কুয়াকাটার হোটেলের শত ভাগ সিট বুক হয়ে আছে।’ কুয়াকাটায় দেশের প্রতিষ্ঠিত পরিবহনগুলো তাদের বাস সার্ভিস চালু রেখেছে। কুয়াকাটা থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ বাস চলাচল করছে। তবে শুক্র ও শনিবার সিট পাওয়া কঠিন। শুক্র ও শনিবারের জন্য চার-পাঁচ দিন আগে টিকিটি কাটতে হয় বলে জানালেন একটি প্রতিষ্ঠিত বাস কোম্পানির কাউন্টার প্রতিনিধি তুহিন। মহিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন, সৌন্দর্যময় কুয়াকাটায় দিনদিন পর্যটকের আগমন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সে কারণে পর্যটকের নিরাপত্তা নিশ্চিন্তে মহিপুর থানা ও ট্যুরিস্ট পুলিশের একাধিক টিম কাজ করে যাচ্ছে।
কুয়াকাটা পৌর মেয়র মো. আনোয়ার হাওলাদার জানান, প্রতিনিয়তই কুয়াকাটায় পর্যটক বাড়ছে। সমুদ্রসৈকত থেকে ট্যুরিস্ট পুলিশ স্টেশন পর্যন্ত যানবহন ও পর্যটকের ভিড়ে রাস্তায় চলাফেরার কোনো পরিবেশ নেই। তাই ট্রাফিক পুলিশব্যবস্থা চালু করা দরকার।