- ব্যবসায়িক পার্টিগুলির জন্য শিষ্টাচারের নিয়মগুলি কঠোর, তবে সামাজিক সমাবেশগুলিতে আয়োজক এবং অতিথি উভয়ের কাছ থেকে কিছু অলিখিত প্রত্যাশাও থাকে।
- অস্ট্রেলিয়ায় কারও বাড়িতে নিমন্ত্রণে যাওয়ার সময় একটি ছোট উপহার আনার প্রথা রয়েছে, তবে এ ক্ষেত্রে উপহারের দামের চেয়ে মনের ইচ্ছাটাকেই বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়।
- শিশুদের পার্টিগুলিতে কিছু নির্দিষ্ট সাংস্কৃতিক প্রথা মেনে চলা হয়, যার মধ্যে রয়েছে তরুণ অতিথিদের জন্যে টোকেন উপহার দেওয়ার অনুশীলন।
কোনো বিশেষ অনুষ্ঠান উদযাপনের জন্য কারও বাড়িতে যাওয়া বেশিরভাগ সংস্কৃতিতেই সাধারণ একটি ব্যাপার, তবে উদযাপনের ধরণ সংস্কৃতি ভেদে ভিন্ন হতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ায় যেমন সবাই মিলে বারবিকিউ করা সবচেয়ে প্রচলিত একটি উদযাপন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটিকে সংক্ষেপে ‘বার্বি’ বলে ডাকা হয়।
When attending a business event, Ms Hardy advises against overstaying your welcome or keep partying till the early morning. Credit: xavierarnau/Getty Images
অস্ট্রেলিয়ান স্কুল অব এটিকেটের পরিচালক জারিফ হার্ডি ব্যাখ্যা করে বলেন, যদিও আগেকার দিনের মত খাওয়ার সময় কঠিন সব আনুষ্ঠানিকতা মেনে চলা এখন আর প্রচলিত নয়, তবে অতিথিদের সামনে কিছু সাধারণ শিষ্টাচার বজায় রাখা সব সময়ই গুরুত্বপূর্ণ।
মিজ হার্ডি বলেন, বাড়ির পেছনের ডেকে বারবিকিউ আয়োজন করা, বা বাড়ির অভ্যন্তরে রাতের খাবারের আয়োজন, আপনি যেটিই করতে চান না কেন, একজন ভাল হোস্ট হতে হলে আপনাকে তার জন্যে যথেষ্ঠ প্রস্তুতি নিতে হবে।
কারও বাড়িতে কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজনে নিমন্ত্রিত হয়ে গেলে, সেখানে একেবারে খালি হাতে যাওয়াটা ঠিক নয় বলে জানান মিজ হার্ডি। তবে তারা আপনার একান্ত পরিবারের সদস্য হলে ভিন্ন ব্যাপার।
ওভারসিজ স্টুডেন্টস অস্ট্রেলিয়ার প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও স্যাম শর্মাও এই বক্তব্যের সাথে একমত।
If there is leftover food that remains intact at the end of a house party, you might be offered to take some home in a container. But leave it up to the host to suggest this. Source: Moment RF / Sergey Mironov/Getty Images
অতিথি হিসেবে কোনো অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার সাধারণ সৌজন্যের মধ্যে রয়েছে সেখানে দেরি করে না পৌঁছানো, ড্রেস কোড অর্থাৎ পোশাক নিয়ে কোনো বিধিনিষেধ রয়েছে কিনা তা জেনে নেয়া, এবং আয়োজক বা হোস্টকে যতটা সম্ভব আয়োজনে সহায়তা করা।
প্রায় সতের বছর আগে আন্তর্জাতিক ছাত্র হিসেবে অস্ট্রেলিয়ায় আসার পর, মি. শর্মাকে শুরু থেকেই পার্টি করার অস্ট্রেলিয়ান পদ্ধতির সাথে সম্পর্কিত স্ল্যাং-গুলি শিখে নিতে হয়েছিল।
এর মধ্যে রয়েছে স্পার্কলিং ওয়াইনের জন্য পরিভাষা ‘বাবলস্’, ‘বিওয়াইও’ বা ব্রিং ইওর ওউন ড্রিঙ্ক, যার অর্থ ‘নিজের পানীয় নিজে নিয়ে আসা’, সসেজের জন্য ‘স্ন্যাগ’, উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য ‘আরএসভিপি’ এবং ‘ব্রিং আ প্লেট’, যার মানে হচ্ছে অতিথিদের সবার সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্যে খাবার নিয়ে আসতে বলা।
মি. শর্মা বলেন, অনুরোধ করা হোক বা না হোক, নিমন্ত্রণে যাওয়ার সময় তিনি প্রায়শই নিজে থেকে কিছু খাবার নিয়ে যান। তাতে করে আয়োজক বা হোস্টের জন্য অনুষ্ঠান আয়োজনের কাজ কিছুটা সহজ হয় বলে তিনি মনে করেন।
For a birthday party held at a venue, it is customary for each guest to pay for their meal, unless otherwise offered by the host, Mr Sharma says. Credit: Thomas Barwick/Getty Images
দুই সন্তানের মা সোনিয়া হার্জবার্গ মেলবোর্নে বসবাস করেন। এরকম আয়োজনে সাধারণত কী ঘটে তিনি তা বর্ণনা করে বলেন, শিশুদের পার্টি আয়োজনের ক্ষেত্রে সাধারণত আয়োজক বাবা-মাই তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী সবার জন্যে খাবার ও পানীয়ের ব্যবস্থা করে থাকেন।
Carers are responsible for supervising their children who are guests at a kid’s birthday party. Credit: Jason Edwards/Getty Images
তবে আয়োজক বাবা-মা’র পক্ষে এই পার্টি আয়োজনে অনেক বেশি খরচ করার কোন আবশ্যকতা নেই। মিজ হার্জবার্গ বলেন, সাশ্রয়ী মূল্যে এ ধরণের আয়োজন করাটাও অস্ট্রেলিয়ান সংস্কৃতিরই একটা অংশ।
উদাহরণ হিসেবে মিজ হার্জবার্গ তার পাঁচ বছর বয়সী ছেলের জন্মদিনের জন্য কী প্রস্তুতি নিচ্ছেন তা বর্ণনা করে বলেন, আয়োজক বাবা-মা সাধারণত ছোট ছোট কিছু উপহার দিয়ে ‘পার্টি ব্যাগ’ প্রস্তুত করে রাখেন, যেন শিশুরা সেগুলো পার্টির স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে তাদের সাথে বাড়িতে নিয়ে যেতে পারে।
Ms Hardy from the Australian School of Etiquette advises against bringing expensive gifts at a kids’ party. “You do not need to be showing status or proving anything by buying ridiculously priced gifts.” Credit: Nick Bowers/Getty Images
মিজ হার্জবার্গ বলেন, যদিও বাচ্চাদের পার্টিতে অতিথিরা উপহার নিয়ে আসবেন বলে আশা করা হয়, তবে এখানে ইচ্ছাটাই বড় কথা, উপহার কত দামী সেটি কোনো ব্যাপার নয়।
অস্ট্রেলিয়ান স্কুল অব এটিকেটের মিজ হার্ডিও এসব ক্ষেত্রে দামী উপহার না আনার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
তবে, মিজ হার্ডির মতে, এক ধরণের অনুষ্ঠান রয়েছে যেখানে কঠোর শিষ্টাচার প্রযোজ্য হয়ে থাকে, এবং সেগুলি হচ্ছে ব্যবসায়িক আয়োজন অর্থাৎ বিজনেস পার্টি।