যুক্তরাষ্ট্রের নিয়োগকর্তারা অক্টোবর মাসে সারা দেশে ১ লাখ ৫০ হাজার নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টি করেছেন। শ্রম পরিসংখ্যান ব্যুরো এ তথ্য জানিয়েছে। তবে এই সংখ্যা প্রত্যাশার চেয়ে কম। আর সেপ্টেম্বরে সৃষ্ট কাজের সুযোগের প্রায় অর্ধেক। সেপ্টেম্বরে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিলো ২৯৭,০০০ টি।
তবে নতুন এই পরিসংখ্যানকে শ্রম বাজারকে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশেষ করে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ও উচ্চ সুদের হারের কারণে কোম্পানি ও ক্রেতা পর্যায়ে সকলের জন্য ঋণ গ্রহণে অনীহা রয়েছে।
একমাস আগেও দেশে বেকারত্বের হার আগের মাসের ৩.৮ শতাংশ থেকে বেড়ে ৩.৯ শতাংশে দাঁড়ায়। নতুন কর্মসংস্থানের খবরে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক বিবৃতিতে এর প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, এই প্রবৃদ্ধি এটাই প্রমাণ করে যে তার নেওয়া অর্থনীতি বিষয়ক প্রস্তাবগুলো কাজ করছে। আর যুক্তরাষ্ট্র এখন টানা ২১ মাস ধরে বেকারত্বের হার ৪ শতাংশের নিচে রাখতে পেরেছে।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন এই অর্জনের কৃতিত্ব দিয়েছেন দেশের শ্রমজীবী মানুষের ওপর। এই সময়ে মুদ্রাস্ফীতি যখন ৬০% কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে আর এখন তা গত দুই বছরের মধ্যে সবচেয়ে নিম্ন। সকল শঙ্কা কিংবা পূর্বানুমান কাটিয়ে এই অর্জন সম্ভব হয়েছে, বলেন তিনি।
বাইডেন কংগ্রেসে রিপাবলিকানদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমি মনে করি অর্থনীতির এই অগ্রসরতা ও মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনার সময়টিতে নতুন নতুন ঝুকি আর হুমকি তৈরি না করে বরং তারা আমাদের সাথে কাজ করতে পারেন। সেটাই এখন আমাদের এই কঠোর পরিশ্রমী মানুষগুলোর জন্য সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য আর সর্বোপরি আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য জরুরি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইউনাইটেড অটো ওয়ার্কার্স-এর ধর্মঘট অক্টোবরে কর্মসংস্থান কমে যাওয়ার পেছনে কারণ হতে পারে। এ সপ্তাহেই ডেট্রয়েট থ্রি’র সঙ্গে ইউনিয়নের চুক্তি হতে যাচ্ছে যার মাধ্যমে এই ধর্মঘট শেষ হবে। শ্রম পরিসংখ্যান ব্যুরো বলছে, কেবল নির্মাণ খাতেই এই মাসে ৩৫০০০ কাজের সুযোগ নষ্ট হয়েছে। তবে সবচেয়ে নতুন কাজ কমেছে মোশন পিকচারসে। সেখানে কাজের সুযোগ বাড়ছে না, বরং কমছে। মে মাস থেকে ৪৪ হাজার মানুষ কাজ হারিয়েছে এই খাতে। বিরাজমান শ্রম বিবাদের জের ধরে হলিউডে আগে থেকেই ধর্মঘট চলে আসছে। রাইটার্স গিল্ড কয়েক মাস ধরে ধর্মঘটে থাকার পর এ সপ্তাহে তা প্রত্যাহার করলেও ইউনিয়নের অন্তর্ভূক্ত এসএজি-এএফটিআরএ এখনো ধর্মঘট চালিয়ে যাচ্ছে।
গত এক বছরে যুক্তরাষ্ট্র ৩৩ লাখ মানুষ হয় একটি নতুন কাজ শুরু করেছে, নয়তো নতুন একটি কাজ খুঁজছে। আর মানুষ যখন স্রেফ একটা কাজই চায় তখন এরই মধ্যে যারা কাজে আছেন তাদের পক্ষে মজুরি বাড়ানোর জন্য মালিকপক্ষের ওপর আশানুরূপ চাপ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।