শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৩:২৪ পূর্বাহ্ন
Uncategorized

বাবুই পাখির শিল্প নৈপুন্য

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২০ মে, ২০২২

‘বাবুই পাখিরে ডাকি বলিছে চড়াই, কুঁড়ে ঘরে থেকে কর শিল্পের বড়াই, আাামি থাকি মহা সুখে অট্টালিকা পরে, তুমি কত কষ্ট পাও রোদ-বৃষ্টি-ঝড়ে, বাবুই হাসিয়া কহে-সন্দেহ কি তাই, কষ্ট পাই তবু থাকি নিজেরই বাসায়, পাকা হোক তবু ভাই পরের বাসা, নিজ হাতে গড়া মোর কাঁচা ঘর খাসা’- কবি রজনীকান্ত সেনের কবিতাটি এখনো মানুষের মনে পড়ে। একসময় যে পাখিকে নিয়ে লিখেছে কবিতা সেই বাবুই পাখির অস্তিত্ব আজ হুমকির মুখে। দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে বাবুই পাখি ও তার বাসা। এসব বাসা শুধু শৈল্পিক নিদর্শনই ছিল না, মানুষের মনে চিন্তার খোরাক জোগাত এবং আত্মনির্ভরশীল হতে উত্সাহ যোগাত। কিন্তু কালের বিবর্তনে ও পরিবেশে বিপর্যয়ের কারণে আজ এ পাখিটি আমরা হারাতে বসেছি।

গ্রামবাংলার অতি পরিচিত বাবুই পাখি তার নিপুণ ছোঁয়ায় তৈরি করতো নিজ বাসা। সেই বাসা দেখতে যেমন ছিল সুন্দর তেমনি পাখির বসবাসের জন্য ছিল মজবুত। সেই নিপুণ শৈল্পিকতা কবি সাহিত্যিকরা তাদের কবিতার মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। এখন আর আগের মত চোখে পড়ে না বাবুই পাখির বাসা। দুই একটি গাছে বাসা থাকলেও তাতে পাখি এখন থাকে না। যে কারণে আমাদের প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে এই শিল্প নৈপুন্য।

প্রবীনদের মুখে শোনা যায়- নারিকেল, তাল, খেঁজুর, কাশ ও আখ প্রভৃতি গাছের পাতা এবং লম্বা শক্ত ঘাস মুখে করে এনে একটি গাছে তিন প্রকারের বাসা নির্মাণ করতো বাবুই পাখি। এর মধ্যে একটি বসবাসের জন্য, একটি ডিম পেড়ে বাচ্চা ফুটানোর জন্য এবং একটি খাবার সংগ্রহ করে রাখার জন্য। বাসা নির্মাণের জন্য তারা সাধারণত তালগাছকে বেছে নিতো।

কারণ অন্যান্য গাছের ডালপালা ঝড়ে ভাঙার সম্ভাবনা বেশী। কিন্তু তালগাছের ডালপালা না থাকায় ভাঙার সম্ভাবনা কম, এক্ষেত্রেও বাবুই পাখির চরম বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পাওয়া যায়। প্রকৃতি থেকে তালগাছের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারনে বাসা তৈরি করতে পারছে না পাখিরা। যে কারণে বাবুই পাখি প্রজনন করতে না পারায় ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে। তাই প্রকৃতির এই নিপুণ শিল্পীকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করা আমাদের একান্ত কর্তব্য।

ইত্তেফাক

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com