জার্মানিতে নাগরিকত্ব পেতে হলে আবেদনকারী ব্যক্তিকে অবশ্যই তার জাতীয়তা ও পরিচয়পত্রের গ্রহণযোগ্য কাগজপত্র দাখিল করতে হবে। অর্থাৎ জার্মান নাগরিকত্ব পাওয়ার আগে আবেদনকারী ব্যক্তি কোন দেশের নাগরিক তার বিস্তারিত কর্তৃপক্ষকে গ্রহণযোগ্য দলিলাদি দাখিলের মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে।
সোমালিয়া থেকে আসা এক অভিবাসনপ্রত্যাশী এক দশকেরও বেশি সময় ধরে জার্মানিতে বাস করছিলেন। ২০১৯ সালে তার আশ্রয় আবেদন বাতিল করা হয়। কারণ এই অভিবাসনপ্রত্যাশী তার জাতীয়তা এবং তার পরিচয় প্রমাণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করতে পারেননি।
কেননা ১৯৯১ সালের পর থেকে ইস্যুকৃত সোমালিয়ান পাসপোর্ট এবং পরিচয়পত্র জার্মান সরকার অনুমোদন করে না। পূর্ব আফ্রিকার এ দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য এমন সিদ্ধান্ত জার্মান সরকারের।
তবে দশ বছরের বেশি সময় আগে জার্মানিতে আসা ওই সোমালিয়ান নাগরিক দেশটিতে আশ্রয় নেওয়ার পর জার্মান নাগরিকত্ব পেতে সকল কাগজপত্র দাখিল করেছিলেন। কিন্তু জাতীয়তার প্রমাণের বিষয়ে প্রয়োজনীয় কাগজ জমা দিতে না পারায় তার আবেদন বাতিল করা হয়। পরে সরকারের সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে প্রশাসনিক আদালতের দ্বারস্থ হয় সেই ব্যক্তি।
এরপর প্রশাসনিক আদালতে তার আবেদন গৃহীত হয়। তবে এসময় তিনি তার পরিচয়পত্র প্রমাণের পক্ষে তার ভাই ও চাচার স্বাক্ষরিত হলফনামা দাখিল করেন। তার ভাই ও চাচা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র এবং সুইডেনে অবস্থান করছেন।
গত ২৫ এপ্রিল তার আবেদন গ্রহণ করে আদালত শহর কর্তৃপক্ষকে নাগরিকত্ব প্রদান করার আদেশ দেয়।
আদালত যা বললেন
রায়ে মাইনৎস শহরের আদালতের বিচারকরা এই মামলাটিকে ‘বিশেষ পরিস্থিতি’ হিসেবে বিবেচনায় নেন। বিচারকরা বলেন, সাক্ষীর এই বিবৃতি (ভাই ও চাচার হলফনামা) এমন বিশেষ পরিস্থিতিতে তার জাতীয়তা প্রমাণের জন্য যথেষ্ট হতে পারে।
আদালত আরো জানায়, সোমালিয়ার এই ব্যক্তির কাছে থাকা কাগজপত্র জার্মান সরকার অনুমোদন দেয় না। তার মানে এই পরিস্থিতিতে আসলে তার নিজের কিছু করার নেই। তবে সে অন্য এক গ্রহণযোগ্য উপায়ে তার পরিচয়ের প্রমাণ দিয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে থাকা ব্যক্তির জাতীয়তা ও পরিচয় প্রমাণের জন্য প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষী বা বিবৃতি বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে বলে মত আদালতের।