ভারতের শিল্পপতি রতন টাটা সব মিলিয়ে ১০ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি রেখে গেছেন। তবে রতন টাটার কোনো সন্তান বা উত্তরাধিকারী না থাকায় এ বিপুল সম্পদের মালিক কে বা কারা হবেন তা নিয়ে দেখা দেয় প্রশ্ন। অবশ্য সংবাদমাধ্যম থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, তার মৃত্যুর পরে এই বিশাল সম্পত্তি কার হাতে উঠবে তা উইল করে আগে থেকেই ঠিক করে গিয়েছিলেন রতন। সেই উইল কার্যকর করার গুরুদায়িত্বও সঁপেছেন খুব ঘনিষ্ঠ কয়েক জনের হাতেই। সম্প্রতি সেই উইল প্রকাশ্যে এসেছে। আর তাতেই জানা গিয়েছে কার জন্য কী রেখে গিয়েছেন রতন টাটা।
রতন টাটার উইল অনুযায়ী, তার প্রিয় পোষা কুকুর টিটোর আজীবন ভরণপোষণের খরচ দেওয়া হবে এই সম্পত্তি থেকে। জার্মান শেফার্ড টিটোর আদর-যত্নের যেন কোনো ত্রুটি না হয় তার সমস্ত বন্দোবস্ত করে দেওয়া হয়েছে এই উইলে। ৬ বছর আগে অন্য পোষ্য মারা যাওয়ার পর টিটোকে নিজের কাছে এনেছিলেন রতন। সেই থেকেই প্রায় তার ছায়াসঙ্গী হয়ে ওঠে টিটো।
শুধু পোষ্য নয়, যারা দীর্ঘদিন ধরে তার খেয়াল রেখেছিলেন, তাদেরও ভোলেননি রতন টাটা। নিজের উইলে সম্পত্তির একটি অংশ লিখে দিয়েছেন তার দীর্ঘ সময়ের রাঁধুনি রাজন সাউয়ের নামে। তিন দশক ধরে তার পরিচারক ছিলেন সুব্বিয়া। তার নামও উইলে লিখে গিয়েছেন রতন টাটা।
পরিবারের মধ্যে নিজের ভাই জিমি টাটার জন্য যেমন সম্পত্তির একটি অংশ লিখে দিয়েছেন রতন টাটা তেমনই দুই সৎ বোন শিরিন ও ডিয়ানার জন্যও সম্পত্তি রেখেছেন। বাকি সম্পত্তি তিনি টাটা ফাউন্ডেশনের নামে করে দিয়েছেন।
আর এক অসমবয়সি বন্ধুকেও ভুলতে পারেননি প্রয়াত এই শিল্পপতি। তিনি শান্তনু নাইডু। শেষ বয়সে রতনের সহচর ছিলেন তিনি। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত রতন টাটার সবচেয়ে কাছের মানুষ ছিলেন এই শান্তনু। শান্তনু নাইডুও বাদ পড়েননি উইল থেকে। শান্তনুর স্টার্টআপ সংস্থা ‘গুডফেলোজ’-এ অংশীদারি ছিল রতন টাটার। সেই অংশ যেমন ছেড়ে দিয়েছেন, তেমনই শান্তনুর বিদেশে পড়তে যাওয়ার খরচের পুরোটাই রতন টাটা নিজের সম্পত্তি থেকে দিয়ে গিয়েছেন।
রতন টাটার সম্পদের মধ্যে রয়েছে মুম্বাইয়ের জুহু তারা রোডে একটি দ্বিতল বাড়ি, একটি ২ হাজার বর্গফুটের বাংলো, ৩৫০ কোটির স্থায়ী আমানত এবং টাটা সন্সের ০.৮৩ শতাংশ মালিকানা। মুম্বাইয়ের কোলাবাতে সমুদ্রমুখী একটি আবাস রয়েছে রতনের। তার দাম ১৫০ কোটি টাকা বলে অনুমান করা হয়। ব্যক্তিগত সংগ্রহে রতন মার্সিডিজ থেকে শুরু করে টানা ন্যানো পর্যন্ত রেখেছিলেন। শিল্পপতির গাড়ির সংগ্রহ টাটা গ্রুপ পুনেয় জাদুঘরের জন্য অধিগ্রহণ করতে পারে বা নিলামে তুলতে পারে।
রতন টাটার উইল বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তার সৎবোন শিরিন এবং ডিয়ানা জিজিবয়, আইনজীবী দারিয়াস খাম্বাটা এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধু মেহলি মিস্ত্রিকে।