শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১০:১৭ অপরাহ্ন

হজযাত্রায় সমুদ্রপথে সৌদি আরব যেতে কতদিন সময় লাগবে

  • আপডেট সময় শনিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৪

চার দশকেরও বেশি সময় পর বাংলাদেশে আবারও সমুদ্রপথে হজযাত্রার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। ধর্ম মন্ত্রণালয় আকাশপথের বিকল্প হিসেবে সমুদ্রপথ চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে, যা হজযাত্রীদের খরচ কমানোর লক্ষ্যে গৃহীত একটি পদক্ষেপ। তবে এর সঙ্গে রয়েছে কিছু সুবিধা ও অসুবিধা, যা হজযাত্রীদের বিবেচনা করা উচিত।

সমুদ্রপথে হজযাত্রার সুবিধা:  খরচের উল্লেখযোগ্য সাশ্রয়: আকাশপথের তুলনায় সমুদ্রপথে হজযাত্রার খরচ প্রায় ৪০ শতাংশ কম হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এতে হজযাত্রায় আর্থিকভাবে সক্ষম না এমন অনেক মানুষ এই সুযোগ গ্রহণ করতে পারবেন। হজের বর্তমান খরচ দিন দিন বেড়ে যাওয়ায় পানিপথ সাশ্রয়ী বিকল্প হয়ে উঠতে পারে।

আরামদায়ক যাত্রা: সমুদ্রপথে জাহাজে যাত্রা করলে যাত্রীরা অপেক্ষাকৃত আরামদায়কভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন। দীর্ঘ যাত্রায় বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগও থাকবে।

জাহাজের সুবিধাগুলো এবং মনোরম সমুদ্রদৃশ্য ভ্রমণকে উপভোগ্য করে তুলবে।

পরিবেশবান্ধব ভ্রমণ: আকাশপথের তুলনায় জাহাজে যাত্রা পরিবেশের জন্য কম ক্ষতিকর। জাহাজে কার্বন নিঃসরণ কম হয়, ফলে এটি পরিবেশ সংরক্ষণে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশগত সমস্যাগুলোর ক্ষেত্রে এটি গুরুত্বপূর্ণ একটি সুবিধা।

অধিক যাত্রী পরিবহনের সুযোগ: একটি বড় জাহাজে অনেক সংখ্যক যাত্রী একসঙ্গে যাত্রা করতে পারবেন। এতে একই সময়ে বেশি সংখ্যক মানুষকে হজে পাঠানো সম্ভব হবে, যা আকাশপথের তুলনায় সাশ্রয়ী ও কার্যকর হতে পারে। ফলে যাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে চাপ কমে যাবে।

সময়ের ব্যবস্থাপনা: আধুনিক প্রযুক্তির ফলে এখন সমুদ্রপথে যাত্রার সময় অনেকটাই কমেছে। আগে যেখানে ২৮ দিন লাগত, এখন তা অর্ধেকে নেমে এসেছে, যেখানে ৮ দিন করে মোট ১৬ দিনে যাত্রা করা সম্ভব হবে। এতে সময়ের সাশ্রয় হবে।

সমুদ্রপথে হজযাত্রার অসুবিধা: দীর্ঘ যাত্রা: আকাশপথে মাত্র কয়েক ঘণ্টায় পৌঁছানো সম্ভব হলেও সমুদ্রপথে যাত্রা অনেক দীর্ঘ। যাত্রীদের যেতে ও ফিরতে ১৬ দিন সময় লাগবে, যা আকাশপথের তুলনায় বেশ দীর্ঘ। তাই অনেকের পক্ষে এই সময়ের যাত্রা কঠিন হয়ে উঠতে পারে।

সামুদ্রিক ঝুঁকি: সমুদ্রপথে ভ্রমণ ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। আবহাওয়ার প্রতিকূলতা, ঝড় কিংবা অন্য ধরনের সামুদ্রিক সমস্যার কারণে যাত্রায় বাধা আসতে পারে। যাত্রীদের জন্য এটি শারীরিক ও মানসিক চাপের কারণ হতে পারে।

চিকিৎসা ও নিরাপত্তা সমস্যা: দীর্ঘ সমুদ্রযাত্রার সময় যাত্রীদের চিকিৎসাসেবা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা আকাশপথের তুলনায় সীমিত হতে পারে। বিশেষত বয়স্ক বা অসুস্থ যাত্রীদের জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে। যাত্রাপথে সমুদ্রের কারণে জরুরি চিকিৎসাসেবা পাওয়ার সুযোগও কমে যেতে পারে।

সমুদ্রপথে অসুস্থতা: দীর্ঘ সমুদ্রপথে যাত্রা করলে অনেক যাত্রী সামুদ্রিক অসুস্থতার শিকার হতে পারেন। এই কারণে ভ্রমণ আরও কঠিন হতে পারে এবং অনেকের জন্য এটি অস্বস্তিকর অভিজ্ঞতা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

যাত্রার সময়সূচি: আকাশপথের তুলনায় সমুদ্রপথে যাত্রার সময়সূচি কম নমনীয় হতে পারে। জাহাজ নির্ধারিত সময়েই ছেড়ে যেতে হবে এবং কোনো কারণে বিলম্ব হলে সেটি সামুদ্রিক আবহাওয়ার ওপরও নির্ভর করবে। তাই অনেকের জন্য সময়সূচির জটিলতা একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

পানিপথে হজযাত্রার সুবিধা ও অসুবিধা মিলিয়ে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিকল্প হতে পারে। খরচ কমানোর দিকটি বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য, তবে দীর্ঘ যাত্রা ও সামুদ্রিক ঝুঁকি বিবেচনায় নেওয়া জরুরি। হজযাত্রীদের আরাম, নিরাপত্তা এবং সামগ্রিক অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করার জন্য আরও আধুনিক জাহাজ ও পরিষেবা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। উৎস: কালের কণ্ঠ।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com