বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০২:১৭ পূর্বাহ্ন

বিশ্বের বিস্ময়কর সব বনভূমির অজানা তথ্য

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৩

অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীরা বিভিন্ন বন-জঙ্গল ঘুরে দেখতে পছন্দ করেন। এর মাধ্যমে তারা অর্জন করেন ভিন্ন স্বাদের অভিজ্ঞতা।বিশ্বে এমন কিছু বিস্ময়কর বনভূমি আছে যেখানে গেলে আপনি একেবারেই হারিয়ে যাবেন প্রকৃতির মাঝে।জেনে নিন তেমনই বিশ্ববিখ্যাত কিছু বন সম্পর্কে, যেগুলোর বাঁকে বাঁকে আছে রোমাঞ্চকর অনুভূতির স্বাদ-

ফিনিশ ফরেস্টস
সাম্প্রতিক সময়ে ন্যাচার ম্যাগাজিনের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ফিনল্যান্ডের বনগুলো বিশ্বের মধ্যে গভীরতম ও তা বেশ যৌক্তিকভাবেই।বিষয়টিকে আরও সহজভাবে বুঝানোর জন্য বলা যায় যে, সারা বিশ্বে যেখানে প্রতিজন মানুষের বিপরীতে ৪২০টি গাছ আছে সেখানে ফিনল্যান্ডে এই সংখ্যা ৪ হাজার ৫০০টি।বিভিন্ন প্রকার উদ্ভিদ ও প্রাণির এক বিস্ময়কর বৈচিত্র্যের কারণে ফিনল্যান্ডের খ্যাতি বিশ্বজোড়া। প্রত্যেক প্রকৃতিপ্রেমীর ভ্রমণ তালিকায় স্থান পেতে পারে বৈচিত্র্যপূর্ণ এই দেটি।

আমাজন বেসিন, দক্ষিণ আমেরিকা

২.২ মিলিয়ন বর্গমাইল জায়গা জুড়ে বিস্তৃত আমাজন বেসিন ছড়িয়ে আছে ব্রাজিল, বলিভিয়া, কলম্বিয়া, ইকুয়েডর, ফ্রেঞ্চ গিয়েনা, গায়ানা, পেরু ও সুরিনাম জুড়ে। অনুমিতভাবেই এটি বিশ্বের সর্ববৃহৎ রেইন ফরেস্ট। এ কারণে এটি এক মিলিয়নেরও বেশি প্রজাতির আবাসস্থল।এই এলাকায় বনভূমি নিধন প্রকট আকার ধারণ করেছে যা আমাজন বেসিনের জন্য বড় এক হুমকি। তাই এখানে ঘুরতে গেলে আপনি উপলব্ধি করতে পারবেন, প্রকৃতিকে বাঁচানো আসলেই কতোটা প্রয়োজন।

ব্ল্যাক ফরেস্ট, জার্মানি

জার্মানির বিখ্যাত ব্ল্যাক ফরেস্ট ২,৩০০ বর্গমাইল জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। এই বন এতো বেশি গভীর যে, এর ভেতর সূর্যের আলো বলতে গেলে পৌঁছেই না। আর এ কারণেই ব্ল্যাক ফরেস্ট নামটি এসেছে।পর্যটকদের কাছে এটির ব্যাপক জনপ্রিয়তা আছে আর এ জনপ্রিয়তার মূল কারণ হলো এখানকার প্রাচীন গ্রামসমূহ ও বিস্ময়কর প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলী।এটিই সেই জায়গা যেখানে জার্মানির বিখ্যাত কল্পকাহিনি ‘উলভস অ্যান্ড উইচ’ (নেকড়ে ও ডাইনি) এর উৎপত্তি হয়েছে।

সুন্দরবন, বাংলাদেশ

বিশ্বের বৃহত্তম ম্যাংগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন প্রায় ৬ হাজার বর্গকিলোমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। এটি একটি ইউনেসকো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট ও বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ।

এই বনের বিখ্যাত বাসিন্দা রয়েল বেঙ্গল টাইগার ছাড়াও এখানে উপস্থিতি আছে চিত্রা হরিণ, কুমির, বিভিন্ন প্রজাতির সরীসৃপ, বন্য শুকর, বানর, ভোঁদড় ও বিচিত্র প্রজাতির পাখির।অন্য যে কোনো দেশের বন দেখার আগে ঘুরে দেখুন সুন্দরবন এবং এবং উপভোগ করুন জন্মভূমির বিস্ময়কর সৌন্দর্যকে।

মাউ ফরেস্ট, কেনিয়া

পূর্ব আফ্রিকার বৃহত্তম বনগুলোর একটি হলো মাউ ফরেস্ট যা ৬ লাখ ৭৫ হাজার একরেরও বেশি জায়গা জুড়ে বিস্তৃত।এটি আদিবাসী ও উপজাতিদের আবাসস্থল যারা বনভূমি নিধনের শিকার হয়ে এখানে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে ও এই বিষয় সাম্প্রতিককালে সংবাদের শিরোনামও হয়েছে।তারপরও এই বনে দেখা যাবে ৬০০ এরও বেশি প্রজাতির হাতি, লম্বা পা’বিশিষ্ট দ্রুতগামী হরিণ ও অত্যন্ত বিচিত্র প্রজাতির পাখিসমূহ।

কঙ্গো বেসিন

‘পৃথিবীর দ্বিতীয় ফুসফুস’ হিসেবে পরিচিত কঙ্গো বেসিনের নাম উচ্চারিত হয় আমাজন বনভূমির পরেই। এই বনভূমি এতোই আকর্ষণীয় ও চমকপ্রদ যে, প্রথম দেখায়ই এটি আপনাকে মুগ্ধ করবে।১.৪ বর্গমাইল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত কঙ্গো বেসিন আফ্রিকার মধ্যে বৃহত্তম। যে বিষয়টি আপনাকে অবাক করবে তা হলো বিস্ময়কর এই বনভূমিতে সাগর তীরবর্তী বন, জলাবন, ঘাসবন ও বিভিন্ন ধরনের ইকোসিস্টেমের সমন্বয়।

ডাইনট্রি রেইন ফরেস্ট, অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড রাজ্যের উত্তর-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত ডাইনট্রি রেইন ফরেস্ট ঘন সবুজে আচ্ছাদিত বৈচিত্র্যপূর্ণ এলাকা যার বিস্তৃতি ৪৬০ বর্গমাইল এলাকা জুড়ে।এটি একসময় পুরো অস্ট্রেলিয়া মহাদেশ জুড়েই বিস্তৃত ছিলো। এই বনভূমি কুইন্সল্যান্ড ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের একটি অংশ যা ইউনেসকোর তালিকাভুক্ত।
এই বনভূমিতেও সমন্বয় ঘটেছে ইকোসিস্টেমের সঙ্গে রেইন ফরেস্টের বালুকাময় সৈকত ও প্রবালপ্রাচীরের যা সত্যিই আকর্ষণীয়। জায়গাটিতে উদ্ভিদ ও প্রাণির বিশুদ্ধ বৈচিত্র্য আপনাকে অভিভূত করবে।

সুমাত্রা রেইন ফরেস্ট ইন্দোনেশিয়া
সুমাত্রার সুপরিচিত রেইন ফরেস্ট হলো বিখ্যাত শিম্পাঞ্জি, হাতি, বাঘ, লোপার্ড ও আরও অনেক প্রজাতির প্রাণির আবাসস্থল।জায়গাটি একটি ইউনেসকো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট যেটি মানব-সৃষ্ট নিধন, বাণিজ্যিক কারণে বন উজাড়, চুরি প্রভৃতি ঝুঁকির মধ্যে আছে।বিভিন্ন সমীক্ষার মাধ্যমে জানা যায়, উল্লিখিত কারণে এরই মধ্যেই বনটির অর্ধেক জায়গা বিলীন হয়ে গেছে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com