শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:০৭ অপরাহ্ন

পর্বত উপত্যকা নদী ঘেরা মনোরম পল্লি

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৩

শহুরে কোলাহলময় ব্যস্ত জীবন থেকে একটু ছুটি পেলে প্রত্যেক মানুষ মনে মনে এমন জায়গার সন্ধান করে, যেখানে গেলে শান্ত প্রকৃতির সান্নিধ্য পাওয়া যায়। প্রাণভরে নেওয়া যায় শ্বাস, থাকা যায় নিজের মতো করে। সামর্থ্যবানরা এ ধরনের নৈসর্গিক সৌন্দর্যসমৃদ্ধ জায়গার খোঁজ করেন।

শান্তিপ্রিয় ও প্রকৃতিপ্রেমী মানুষের জন্য তেমনই এক দারুণ জায়গা হতে পারে ইউরোপ ও এশিয়ার সংযোগস্থলে অবস্থিত তুরস্কের কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী ছবির মতো সুন্দর পূর্বাঞ্চলীয় শহর রিজ। সাদা বরফের টুপি পরা সুউচ্চ পর্বত, সবুজ উপত্যকা, মালভূমি, স্বচ্ছ পানির নদী, বিচ্ছিন্ন শান্ত গ্রাম এবং এর মানুষের সহজ জীবন রিজকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে পর্যটকের কাছে।
জর্জিয়া সীমান্তের কাছে অবস্থিত রিজের তেমনই একটি ছবির মতো সুন্দর পার্বত্য গ্রাম কামলিহেমসিন। সমুদ্রঘেঁষা এবং পার্বত্যভূমির জন্য রিজের তাপমাত্রা সব সময়ই থাকে আরামদায়ক। এখানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণও বেশি। ফলে গ্রীষ্মের প্রচণ্ড গরম থেকে রক্ষা পেতে তুরস্কের অনেক পর্যটক সে সময় শান্ত কামলিহেমসিনে ভিড় করেন। এখনও আন্তর্জাতিক পর্যটকের কাছে খুব বেশি পরিচিত না হওয়ায় কামলিহেমসিনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রয়েছে অনেকটাই অক্ষত।

শহর থেকে অনেক দূরে হওয়ায় এখানকার মানুষের জীবনধারাও সরল। বনায়ন, মৌমাছি ও পশু পালন এখনও এই গ্রামের মানুষের আয়ের প্রধান উৎস। বিলাসবহুল কোনো হোটেল না থাকলেও পর্যটকের জন্য রয়েছে গেস্টহাউস, ছোট্ট ক্যাফে।

গ্রামটির বড় সম্পদ এর চোখ জুড়ানো প্রকৃতি। কৃষ্ণসাগরের উপকূল থেকে সেখানে যাওয়ার রাস্তাটি এগিয়েছে সবুজে ঘেরা পাহাড়ি উপত্যকার মধ্য দিয়ে। পথে চোখে পড়বে দূরের কাকার পর্বত থেকে নেমে আসা স্বচ্ছ জলের প্রবল পাহাড়ি নদী ফারটিনা। এ ছাড়া গ্রামের চারপাশে সবুজ চারণভূমি আর উপত্যকা যে কাউকে মুগ্ধ করবে।

কামলিহেমসিনের বাসিন্দাদের ঘরগুলো কাঠের ফ্রেমে তৈরি। ঐতিহ্যবাহী এসব ঘরকে বলে কারাদেনিজ। পর্যটক পারিবারিক মালিকানাধীন এই ঘরগুলোকে গেস্টহাউস হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে ঘরগুলোর মালিকরাই রান্না করে অতিথিদের খেতে দেন। এখানে এলে সকালের নাশতায় পাওয়া যায় স্থানীয় বিখ্যাত খাবার মিহলামা। যার মধ্যে আছে গলিত পনির এবং কর্নমিলের মিশ্রণ, যা রুটির সঙ্গে গরম গরম পরিবেশন করা হয়।

এখানকার সবচেয়ে বড় হোটেলটির নাম পুলি মিনি। ফারটিনা নদীর তীরে চেস্টনাট কাঠ আর পাথরে তৈরি এই হোটেলে মেলে ঐতিহ্যবাহী তুর্কি আতিথেয়তা। এখানকার ক্যাফেতে পাওয়া যায় স্থানীয় সতেজ শাকসবজি, মাখন, মাছ আর ভাত দিয়ে তৈরি বিশেষ তুর্কি খাবার তাভাদা হ্যামসিলি পিলাভ। এ ছাড়া শহর থেকে একটু দূরে আছে বিশ শতকের শুরুর দিকে নির্মিত কাঠ ও পাথরে তৈরি ঐতিহাসিক স্থাপনা দুদি কোনাক; আছে কাকার পর্বতের সুউচ্চ মালভূমিতে অবস্থিত চৌদ্দ শতকে নির্মিত জিলকালে দুর্গ। এই স্থাপনাকে প্রথমে আর্মেনিয়ানরা গির্জা হিসেবে ব্যবহার করলেও উনিশ শতকে অটোমান সম্রাটরা একে দুর্গ হিসেবে গড়ে তোলেন। সব মিলিয়ে প্রকৃতিপ্রেমী যে কোনো মানুষকে হাতছানি দিয়ে বারবার ডাকবে কামলিহেমসিন। সিএনএন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com