ব্রিকস হল উদীয়মান অর্থনীতির পাঁচটি দেশ– ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং সাউথ আফ্রিকার প্রথম অক্ষরের সমন্বয়ে নামকরণ করা একটি জোট।
সবশেষ ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা অন্তর্ভুক্ত হবার পূর্বে এই সঙ্ঘটি “ব্রিক” নামে পরিচিত ছিল।ব্রিকস এ বাংলাদেশের যোগ দেওয়ার আলোচনা উঠেছিল ২০১৪ সালে এটি গঠনের সময়ই। তবে তখন চীনের উদ্যোগে প্রস্তাবিত এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংকে (এআইআইবি) যোগদানকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার।
তখনকার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছিলেন, ব্রিকস ব্যাংকের গতি খুবই ধীর। তাই সরকার এটা নিয়ে খুব একটা ভাবছে না। তবে বর্তমান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সম্প্রতি বিষয়টিকে সামনে নিয়ে এসেছেন। বলেছেন ব্রিকসে যোগ দিতে বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানানো হলে ঢাকা এই আমন্ত্রণকে স্বাগত জানাবে।
সংস্থাটি প্রতিষ্ঠার এত বছর পরে ব্রিকস ব্যাংকে যোগ দেওয়ার পক্ষে বাংলাদেশের ইতিবাচক সাড়া দেয়া নিয়ে চলছে নানা বিশ্লেষণ। মূলত উন্নয়নশীল অথবা সদ্য শিল্পোন্নত এই দেশগুলোর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বেশ উর্ধ্বমুখী। সেইসাথে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ঘটনাবলীর উপর তাদের উল্লেখযোগ্য প্রভাব রয়েছে। তাই এই জোটকে বেশ প্রভাবশালী বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। এ অবস্থায় ব্রিকস ব্যাংকে বাংলাদেশের যোগদানে আগ্রহ দেখানোকে ইতিবাচক বলেই মনে করছেন অর্থনীতি বিশ্লেষকরা।
সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশসহ প্রায় ৮টি নতুন দেশকে উদীয়মান অর্থনীতিতে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছেন ব্রিকস নেতারা। তবে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমশের মবিন চৌধুরী মনে করেন, ব্রিকস এখনো তেমন আলোচিত কোন সংস্থায় রূপ নেয়নি যে তাতে যুক্ত হলেই কোন বিশেষ সুবিধা পাবে বাংলাদেশ।
কিন্তু আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ব্রিকস নিঃসন্দেহে বড় প্লাটফর্ম। তবে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানালে, কোন ক্যাটাগরির সদস্যপদ দিবে সংস্থাটি তার ওপর নির্ভর করবে এর সুযোগের বিষয়টি।
চলতি বছরের ২২-২৪ আগস্ট দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে ব্রিকস নেতারা যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। জোহানেসবার্গের গৌতেংয়ের স্যান্ডটন কনভেনশন সেন্টারে (এসসিসি) শীর্ষ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হবে।