একটি গুরুত্বপূর্ণ খবর দিয়েছে গত মঙ্গলবার এসোসিয়েটেড প্রেস। গত বছর ২০২২ সালে আমেরিকানরা ৮.৮ বিলিয়ন ডলার খুইয়েছে স্ক্যামার বা দুর্বৃত্তদের হাতে। ২০২১ সালের তুলনায় এই অংক ৩০% বেশি। ফেডারেল ট্রেড কমিশনের বরাত দিয়ে এই খবর জানিয়ে এসোসিয়েটেড প্রেস বলছে সবচেয়ে বেশি অর্থ খোয়া গেছে বিনিয়োগের নাম করে প্রতারণা থেকে। গত বছর কেবল ক্রিপটোকারেন্সির প্রতারণা স্কিমে নিরীহ মানুষ হারিয়েছে ৩.৪ বিলিয়ন ডলার।
এপি বলছে, আমেরিকায় ২০ থেকে ২৯ বছর বয়সী তরুণ-তরুণীরাই প্রতারকদের হাতে পড়ে বেশি অর্থ হারাচ্ছে। প্রতারকদের এর পরের টার্গেট হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৯ বছর বয়সীরা, যারা রিটায়ারপ্রাপ্ত, তাদের এ্যাসেট বলতে আছে সারা জীবনের সঞ্চয়, পেনসন, লাইফ ইন্স্যুরেন্স পলিসি, প্রোপার্টি ইত্যাদি।
আগে প্রতারকরা ইমিগ্রান্টদের টার্গেট করত রাস্তায়। তাদের সাথে মিষ্টি কথা বলে অনেক বড় অংকের অর্থ দেয়ার প্রতিশ্রæতি দিয়ে কিছু অর্থ নিয়ে উধাও হতো। এখন ডিজিটাল যুগ। এমন কেউ নেই যে ইমেইল পান না। যে ইমেইলে বলা হয় (প্রায় ক্ষেত্রেই কমন ভাষা) তোমার কয়েক মিলিয়ন ডলার পাওনা রয়েছে। সেটা আমাদের ব্যাংকে পড়ে আছে। এই ডলার যত দ্রæত সম্ভব পেতে হলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করো। যোগাযোগ করলেই তারা ফাঁসিয়ে দেয়। এছাড়াও আইআরএস, সোশাল সিকিউরিটি অফিস থেকে বা কনএডিশন অফিস থেকে ফোন করছে এমন পরিচয় দিয়ে রীতিমত ধমক দিয়ে অর্থ আদায় করে নেয়। যারা সহজ-সরল কিংবা লোভী তারা এইসব প্রতারকদের প্রতারণার শিকার হন। প্রতারকরা এখন এমন কোনো পন্থা নেই যে ব্যবহার করছে না। আর তাদের প্রায় নিখুঁত অভিনয়ের কাছে হার মেনে প্রতিদিন মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার হারাচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষ তাদের কষ্টার্জিত অর্থের।
এসোসিয়েটেড প্রেস তাদের প্রতিবেদনে প্রতারকদের কয়েকটি প্রতারণার কমন স্টাইল উল্লেখ করেছে, যার মাধ্যমে মানুষ প্রতিদিন প্রতারিত হচ্ছে। এগুলো হচ্ছেঃ ১. রবোকলস, ২. রোমান্স স্ক্যাম, ৩. টেক্সট ও ইমেইল স্ক্যাম, ৪. গিফট কার্ড স্ক্যাম, ৫. সোশাল মিডিয়া স্ক্যাম, ৬. ইনভেস্টমেন্ট স্ক্যাম, ৭. কুইজ স্ক্যাম, ৮. মার্কেট প্লেস স্ক্যাম, ৯. আইআরএস স্ক্যাম ইত্যাদি।
সাধারণ ও কম ইংরেজি জানা মানুষদের জন্য এখন আমেরিকা অত্যন্ত বিপজ্জনক। কারণ কোনটি প্রকৃত ফোন বা ইমেইল বা টেক্সট আর কোনটি প্রতারণা তা বোঝা কম ইংরেজি জানা ইমিগ্রান্টদের পক্ষে সম্ভব নয়। ফলে তারাই বেশি প্রতারণার শিকার হচ্ছে। প্রতারকরা এমনভাবে হিপনোটাইজ করে যে একজন ইমিগ্রান্ট দ্বিতীয় বা তৃতীয়বারও প্রতারিত হচ্ছে।