ইসলাম ধর্মের কট্টর অনুসারী সৌদি আরব সিনেমা শিল্প সম্প্রসারণের চেষ্টা করছে। দেশটির সরকারের সাম্প্রতিক নীতির পরিবর্তন এ ইঙ্গিত দিচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকার সিনেমা নিয়ে নতুন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে হঠাৎ রাজস্ব আয় কমবে বলে মনে হলেও সিনেমা শিল্পকে উৎসাহিত করবে।
এর ফলে কমবে টিকিটের দাম। আরও মানুষ সিনেমা দেখতে হলমুখী হবে। নতুন নতুন সিনেমাও বাজারে আসবে। বাড়বে থিয়েটার। শেষমেশ সৌদি সরকার সিনেমাকে বড় শিল্পে রূপ দিতে সমর্থ হবে।
সৌদি গ্যাজেটের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি সরকার সিনেমা হল পরিচালনার লাইসেন্স নবায়ন ফি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে সিনেমা টিকিটের দাম প্রত্যাশিতভাবে ব্যাপকহারে কমবে।
সৌদি আরবের সংস্কৃতিমন্ত্রী প্রিন্স বদর বিন আবদুল্লাহ ফিল্ম কমিশনের পরিচালনা পর্ষদের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি প্রস্তাবটি ইতিমধ্যে অনুমোদন দিয়েছেন।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্থায়ী, অস্থায়ী ও বিশেষ বৈশিষ্ট্যের সিনেমার অনুমোদন ফি কমানো হবে। এগুলো তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হবে। প্রত্যেক ক্যাটাগরিতেই বড় আকারে ফি কমানো হয়েছে।
এখন থেকে শহরগুলোর স্থায়ী ‘এ’ ক্যাটাগরির সিনেমা হলের ফি ২৫ হাজার সৌদি রিয়াল দিতে হবে। আগে ছিল ২ লাখ ১০ হাজার সৌদি রিয়াল। তেমনি ‘বি’ ক্যাটাগরিতে ১ লাখ ২৬ হাজার থেকে কমিয়ে ১৫ হাজার সৌদি রিয়াল করা হয়েছে। আর ‘সি’ ক্যাটাগরিতে নতুন ফি ৫ হাজার রিয়াল। আগে ছিল ৮৪ হাজার রিয়াল।
অস্থায়ী সিনেমা হলের ক্ষেত্রে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে ১ লাখ ৫ হাজার থেকে কমিয়ে ১৫ হাজার, ‘বি’ ক্যাটাগরিতে ৬৩ হাজার থেকে কমিয়ে ১০ হাজার এবং ‘সি’ ক্যাটাগরিতে ফি ৪২ হাজার থেকে কমিয়ে ৫ হাজার রিয়াল করা হয়েছে।
এ ছাড়া চলচ্চিত্র প্রদর্শন, স্ক্রিন পরিচালনাসহ অন্যান্য কমিশনও কমানো হয়েছে।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে সৌদি আরবের চলচ্চিত্রশিল্পের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে ফিল্ম কমিশন।
কমিশনের কৌশলগত উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে— সিনেমা খাতের অবকাঠামো উন্নত করা, বিনিয়োগের প্রচার করা এবং স্থানীয় মানুষদের অভিনয় শিল্পের প্রতি আকৃষ্ট করা। যাতে সিনেমা জগতে সৌদির দক্ষ কলাকৌশলী গড়ে উঠে।
সংশ্লিষ্টরা সৌদি গ্যাজেটকে জানান, সৌদি জনগণের কাছে সিনেমা সহজলভ্য করতে বৃহত্তর প্রচেষ্টা চলছে। এটি এরই অংশ। তারা মনে করছেন, ফি কমানোর সিদ্ধান্ত চলচ্চিত্র খাতের সমৃদ্ধি আরও উৎসাহিত করবে।
এ সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করে যে, ফিল্ম কমিশন সৌদি আরবে বক্স অফিস বৃদ্ধিতে মনোযোগ দিচ্ছে। পাশাপাশি এ সেক্টরে কোম্পানিগুলোর অর্থনৈতিক অবদান এবং চলচ্চিত্রে সাংস্কৃতিক ও সৃজনশীল বৈচিত্র্যকে সমর্থন করে। চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য দেশটির সরকারের কৌশলগত লক্ষ্য অর্জনের জন্য পুরোদমে মাঠে কাজ করছে।
আরও বলা হচ্ছে, সিনেমা হল বৃদ্ধিসহ সিনেমা কেন্দ্রীক অন্যান্য প্রতিষ্ঠান বৃদ্ধি হবে। এটি একটি প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ গড়ে তুলবে। পাশাপাশি তা সিনেমা সেক্টরে বিনিয়োগকে উৎসাহিত করবে।
সে সঙ্গে জনসাধারণের জন্য সিনেমা দেখার সুযোগ বাড়বে। এর মাধ্যমে এই অঞ্চলের চলচ্চিত্র শিল্পে একটি নেতৃস্থানীয় কেন্দ্র হিসেবে সৌদি আরবের অবস্থানকে সুসংহত করবে। এটিই সৌদি আরব সুকৌশলে চাচ্ছে।