বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩১ পূর্বাহ্ন

সনদ জালিয়াতি: পাইলট সাদিয়া–মেহেদীর লাইসেন্স বাতিল করবে বেবিচক

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৩

জালিয়াতির কারণে সাদিয়া আহমেদ ও আল মেহেদী ইসলামের পাইলট লাইসেন্স বাতিল করবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। একই সঙ্গে তাঁদের দুজনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেবিচক।

বেসামরিক বিমান চলাচল আইন অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যক্তি শিক্ষাসনদ, নিবন্ধনসনদ, লাইসেন্স বা পারমিট জাল কিংবা পরিবর্তন করেন বা করার চেষ্টা করেন, তাহলে অনধিক ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা ১ কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন।

এ প্রসঙ্গে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সাদিয়া আহমেদ ও আল মেহেদী ইসলাম বেবিচকে চাকরি করতেন না। তাঁদের বিরুদ্ধে যখন অভিযোগ ওঠে, তখন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত ছাড়া তো কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। এখন তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিহাসে এমন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা আগে কখনো হয়নি, এবার হবে। যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ জালিয়াতি করার সাহস না পায়।’

জানা গেছে, বোয়িং-৭৭৭ উড়োজাহাজের জন্য আটজন ক্যাপ্টেন ও ছয়জন ফার্স্ট অফিসার ৫ বছরের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের জন্য ২০২১ সালে ২৩ নভেম্বর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। সেখানে প্রাথমিকভাবে কয়েকজনকে নির্বাচন করা হয়, যাঁদের দক্ষতা ও যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

সেই সময় ফার্স্ট অফিসার হিসেবে নির্বাচিত আল মেহেদী ইসলাম জমা দিয়েছেন এয়ারলাইন ট্রান্সপোর্ট পাইলট লাইসেন্সের (এটিপিএল) জাল সনদ। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের ফ্লাইট সেফটি বিভাগের সহকারী পরিচালকের স্বাক্ষর জাল করে তিনি এই সার্টিফিকেট জমা দেন।

অন্যদিকে বিজ্ঞান বিভাগে না পড়েও জাল শিক্ষাসনদ জমা দিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন সাদিয়া আহমেদ। তিনি বিমানের সাবেক চিফ অব ট্রেনিং ক্যাপ্টেন সাজিদ আহমেদের স্ত্রী। তাঁর চাকরিজীবন শুরু হয় জিএমজি এয়ারলাইনসের একজন ক্যাবিন ক্রু হিসেবে। পরে তিনি রিজেন্ট এয়ারওয়েজে ফার্স্ট অফিসার হিসেবে নিয়োগ পেলেও বিভিন্ন ত্রুটি-বিচ্যুতি, দুর্ঘটনা ও অদক্ষতার কারণে চাকরি হারাতে হয়।

সূত্র জানায়, সাদিয়া আহমেদ বিমানে যে সার্টিফিকেট জমা দিয়েছেন, সেটি অনুযায়ী, তিনি ২০০১ সালে আনোয়ার গার্লস কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। তাঁর রোল নম্বর ৩০০১০৬, রেজিস্ট্রেশন নম্বর ৯৯৯৫৯১। শিক্ষা বোর্ডে অনুসন্ধান করে দেখা যায়, তিনি শহীদ আনোয়ার গার্লস কলেজ থেকে মানবিক শাখা থেকে দ্বিতীয় বিভাগে পাস করেছিলেন। অথচ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের নিয়ম অনুযায়ী, পাইলট হতে গেলে পদার্থবিজ্ঞান, গণিতসহ এইচএসসি বা সমমানের সনদ থাকতে হবে।

স্বামীর প্রভাবে সাদিয়া আহমেদ বিমানে নিয়োগ পান। বিমানের চুক্তিতে বলা হয়েছে, তাঁর মূল বেতন ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা, বাড়িভাড়া হিসেবে পাবেন ৮৫ হাজার টাকা। যদিও পরে জালিয়াতি ধরা পড়লে চুক্তি বাতিল করে বিমান।

পাইলট নিয়োগে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তুলেছেন বিমানের পাইলটরাও। বিমানের পাইলটদের সংগঠন বাংলাদেশ এয়ারলাইন পাইলট অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) ২০২২ আগস্টে লিখিতভাবে বিমানে পাইলট নিয়োগের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন। তাঁরা বলেছেন, বিমানের কর্মকর্তাদের স্বজনেরা নিয়োগের ক্ষেত্রে সুবিধা পেয়েছেন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com