বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৮ অপরাহ্ন

শরণার্থীদের কাজের সুযোগ দেবে অ্যামাজনসহ ৪০টি প্রতিষ্ঠান

  • আপডেট সময় রবিবার, ৩০ জুলাই, ২০২৩

ইউরোপে আশ্রয়ের অনুমতি এবং শরণার্থী মর্যাদা পাওয়া ব্যক্তিদের নিজেদের নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ৪০টি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান৷ ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে অ্যামেরিকান ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজন, বিলাসবহুল হোটেল চেইন হিলটন এবং ম্যারিয়টসহ বেশ কিছু বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে৷

সোমবার (১৯ জুন) প্যারিসে অনুষ্ঠিত হয় এ বিষয়খ একটি মিনি-সামিট। সামিটে অংশ নেয়া বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান তাদের ইউরোপীয় শাখাগুলোতে শরণার্থীদের নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

শরণার্থী ও উদ্বাস্তুদের সহায়তায় প্রতিষ্ঠিত এনজিও প্লাটফর্ম টেন্ট ফর রিফিউজি পার্টনারশিপের সদস্যদের তালিকায় আছে অ্যামাজন, হোটেল চেইন হিলটন এবং ম্যারিয়টের মতো বড় প্রতিষ্ঠানগুলো।

টেন্ট ফর রিফিউজিসের প্রতিষ্ঠাতা হামদি উলুকায়া একজন তুর্কি ব্যবসায়ী। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘদিন ধরে শরণার্থী ছিলেন। বর্তমানে তিনি একটি বহুজাতিক ইয়োগার্ট বা দই কোম্পানির প্রধান। এনজিওটি কাজের মাধ্যমে শরণার্থীদের মূল সমাজে একীভূত করার লক্ষ্যে কাজ করছে৷

সামিটে অংশ নেয়া কোম্পানিগুলো আগামী তিন বছরে ইউরোপে ১৩ হাজারেরও বেশি শরণার্থীকে চাকরি অথবা শিক্ষানবিস হিসেবে দক্ষতা অর্জনের সুযোগ করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই প্রতিশ্রুতিগুলো ইউরোপে চলমান শ্রমিক ঘাটতি মোকাবিলায় সহায়তা করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বহুজাতিক কোম্পানি অ্যামাজনের একটি ফ্যাক্টরিতে কর্মরত কয়েকজন অভিবাসী। ছবি: REUTERS/Carlos Barria/File Photo
বহুজাতিক কোম্পানি অ্যামাজনের একটি ফ্যাক্টরিতে কর্মরত কয়েকজন অভিবাসী। ছবি: REUTERS/Carlos Barria/File Photo

ইউক্রেনে সংঘাতের কারণে বর্তমানে ইউরোপ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে সবচেয়ে বড় শরণার্থী সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে টেন্ট ফর রিফিউজিস সামিটে দেয়া কোম্পানিগুলোর প্রতিশ্রুতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন আয়োজকরা।

এনজিও টেন্ট ফর রিফিউজি পার্টনারশিপের প্রধান গিডিয়ন মাল্টজ ব্যাখ্যা করেন, “ভূমধ্যসাগরে সংগঠিত সাম্প্রতিক নৌকাডুবি প্রমাণ করেছে যখন লোকেদের পক্ষে বৈধভাবে ইউরোপে ভ্রমণ করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায় তখন তারা বিপজ্জনক পথ বেছে নেয়।”

ওবামা প্রশাসনে দায়িত্ব পালন করা এই কর্মকর্তা আরও বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হল ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোকে ইন্টিগ্রেশনের লক্ষ্য একত্রিত করে অভিবাসীরা যে ইউরোপের অর্থনীতি এবং অসাধারণ অবদান রাখছে সেটি তুলে ধরা। পাশাপাশি আরও বেশি শরণার্থীকে বৈধ ও আইনি উপায়ে প্রবেশের সুযোগ দিতে ইউরোপকে চাপ দেওয়া।”

কিন্তু কিছু অভিবাসন সংস্থা ও এনজিওর মতে এই উদ্যোগটি যথেষ্ট কার্যকর কিছু নয়৷ তাদের ধারণা, এর মধ্য দিয়ে শুধু ইউক্রেন থেকে আসা আশ্রিতদের বেশি সুযোগ দেয়া হবে৷

লিগ অফ হিউম্যান রাইটসের ভাইস-প্রেসিডেন্ট মারি-ক্রিস্টিন ভেরজিয়া দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “এ ধরনের সব উদ্যোগই ভালো। কিন্তু আজ যারা দাঁড়িয়ে আছে তারা ইউক্রেনীয়দের জন্য খুব উদার। কারণ তারা একই গায়ের রঙ ও ধর্মের অনুসারী। অপরদিকে আফগানিস্তান, ইরান ও সুদানের নাজুক পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের কোন সন্দেহ নেই এবং তবুও সেখান থেকে আসা ব্যক্তিদের শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি পেতে লড়াই করতে হচ্ছে।”

টেন্ট ফর রিফিউজি পার্টনারশিপ সব দেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন বলে জানিয়েছে।

গিডিয়ন মাল্টজ বলেন, “প্রাথমিকভাবে এটি ইউক্রেনীয় উদ্বাস্তুদের জন্য করা হলেও আমরা আশা করছি দীর্ঘমেয়াদে এটি সিরিয়ান, আফগান, ইরানিসহ অন্যান্য জাতীয়তার জন্যও উপকৃত হবে।”

১৯ জুন প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় ফরাসি প্রতিষ্ঠান বিপিয়াই ফ্রান্স জানিয়েছে, শ্রমিক ঘাটতি সত্ত্বেও প্রতি তিনজন মাঝারি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মধ্যে একজনেরও কম ব্যক্তি বিদেশিদের তাদের প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দিতে চান।

এমএইউ/টিএম (রেডিও ফ্রান্স ইন্টারন্যাশনাল)

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com