ভার্চ্যুয়াল মুদ্রা বিটকয়েনের দাম আবার বাড়তে শুরু করেছে। এ বাস্তবতায় বহুজাতিক ব্যাংক স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড মনে করছে, এই মুদ্রার দাম চলতি বছর ৫০ হাজার ডলারে উঠতে পারে। এখানেই শেষ নয়, ২০২৪ সালের শেষার্ধে বিটকয়েনের দাম ১ লাখ ২০ ডলারে পৌঁছাতে পারে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, সম্প্রতি বিটকয়েনের দাম বাড়তে থাকায় বিনিয়োগকারীরা এর প্রতি আরও আকৃষ্ট হতে পারেন।
এদিকে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বলেছিল, ২০২৪ সালের শেষ দিকে বিটকয়েনের দাম এক লাখ ডলারে উঠতে পারে। তখনই তারা বলেছিল, ক্রিপ্টেকারেন্সির ‘শীতকাল’ শেষ হতে চলেছে। তবে এখন ব্যাংকটির বৈদেশিক মুদ্রা বিশ্লেষক জেফ কেনড্রিক বলেন, বিটকয়েনের দাম আরও ২০ শতাংশ বেড়ে ১ লাখ ২০ হাজার ডলারে উঠতে পারে।
এক প্রতিবেদনে কেনড্রিক বলেন, ‘বিটকয়েনে মুনাফা বাড়তে থাকায় বিনিয়োগকারীরা খুব বেশি মুদ্রা বিক্রি করবেন না, আবার অল্প কিছু বিক্রি করলেও তাদের নগদ প্রবাহ ভালো থাকবে। এতে বিটকয়েনের নিট সরবরাহ কমবে এবং দামও বাড়তি থাকবে।’
চলতি বছর বিটকয়েনের দাম ৮০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ২০০ ডলার। ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে তার দাম সর্বোচ্চ ৬৯ হাজার ডলারে উঠেছিল, সেই হিসাবে বিটকয়েনের দাম এখনো অনেক কম। চলতি বছর তা ৫০ হাজার স্পর্শ করলেও দাম ২০২১ সালের নভেম্বর মাসের চেয়ে কম থাকবে।
কোভিডের মধ্যে বিটকয়েনের দাম বাড়লেও ২০২২ সালে মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় ফেডসহ বিশ্বের অন্যান্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সুদহার বৃদ্ধি করায় বিটকয়েনে বিনিয়োগকারীদের মূলধন কোটি কোটি ডলার কমে যায়। একই সময়ে ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ এফটিএক্স ধসে পড়ে। তবে এ বছর বিশ্বের কয়েকটি মূল ধারার ব্যাংক ধসে পড়ায় বিটকয়েনসহ ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।
প্রতিদিন ৯০০ বিটকয়েন ‘মাইন’ (বিটকয়েন মাইনিং হলো সেই প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে মাইনাররা বিটকয়েন ব্লকচেইনে নতুন বিটকয়েন সংযোজন করেন) করা হয়। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড মনে করছে, বিটকয়েন মাইনিংয়ে সুপারকম্পিউটারের যে বিদ্যুৎ খরচ হয়, তা–সহ অন্যান্য ব্যয় নির্বাহে মাইনারদের কিছু বিটকয়েন বিক্রি করতে হবে।
জেফ কেনড্রিকের হিসাবে, মাইনাররা এখন নতুন কয়েনের শতভাগই বিক্রি করে দিচ্ছেন। বিটকয়েনের দাম ৫০ হাজার ডলারে উঠলে তাঁরা হয়তো তখন ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বিক্রি করবেন। তাতে দিনে ১৮০ থেকে ২৭০টি বিটকয়েন বিক্রি হবে। এই হারে বছরে ৬৫ হাজার ৭৫০ থেকে ৯৮ হাজার ৫৫০টি বিটকয়েন বিক্রি হবে, আগে যেখানে বিক্রি হতো ৩ লাখ ২৮ হাজার ৫০০টি।
রয়টার্স বলছে, বিটকয়েনের বাজারে ভারসাম্য বজায় রাখতে আগামী বছরের এপ্রিল বা মে মাসে বিটকয়েনের দৈনিক উৎপাদন অর্ধেকে নেমে আসবে। ব্যবস্থার অভ্যন্তরীণ কারণেই তা হবে।
তবে বিটকয়েনের দাম নিয়ে এর আগেও বড় বড় ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে, যদিও বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখা যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের সিটি ব্যাংকের এক বিশ্লেষক ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে বলেছিলেন, ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে বিটকয়েনের দাম ৩ লাখ ১৮ হাজার ডলারে উঠবে, কিন্তু গত বছরের শেষে তা ১৬ হাজার ৫০০ ডলারে নেমে আসে।