মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৪৫ অপরাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসীদের কারণে কি সত্যিই অপরাধ বাড়ছে

  • আপডেট সময় রবিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৪

আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণায় অভিবাসীদের নিয়ে নানা ধরনের মন্তব্য করছেন। সম্প্রতি তিনি দাবি করেছেন, অভিবাসীদের কারণেই যুক্তরাষ্ট্রে সহিংস অপরাধ বাড়ছে। প্রশ্ন হলো, অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের এমন অভিযোগ কতটা সঠিক? নির্বাচনকে সামনে রেখে সীমান্তে কড়া নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে বারবার মন্তব্য করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসেডেন্ট ট্রাম্প। সীমান্তে নজরদারি বাড়ানোর পক্ষে যুক্তি হিসেবে তিনি অনিয়মিত পথে আসা অভিবাসীদের কারণে দেশে অপরাধমূলক কাজ বাড়ার কথা বলেন।

শুধু তাই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকেও দোষারোপ করেন তিনি। বলেন, বাইডেনের নীতি সব কিছুকেই দ্রুত অনুমোদন দেয়। অভিবাসীরা কোনো অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকলে ওই কাজকে ‘বাইডেনের অভিবাসী অপরাধ’ হিসেবেও অভিহিত করেছেন ট্রাম্প।

সাম্প্রতিক সময়ে অভিবাসীদের নিয়ে একের পর এক অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন সাবেক এ মার্কিন প্রেসিডেন্ট। অনিয়মিত পথে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানো অভিবাসীদের ‘পশু’ বলেও অভিহিত করেন তিনি। অভিবাসীরা ‘আমাদের দেশের রক্তকে দূষিত করছে’ এমন কথাও বলেছেন তিনি।অবশ্য ট্রাম্পের এমন মন্তব্য তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে। এসব মন্তব্যকে ‘জেনোফোবিক এবং নাৎসি বয়ানের প্রতিধ্বনি’ বলে সমালোচনা করেছেন তার বিরোধীরা।

ট্রাম্প এবং তার রিপাবলিকান দলের রাজনীতিবিদদের অনেকেই নিহত জর্জিয়ার ২২ বছরের নার্সিংয়ের ছাত্রী লাকেন রিলের বিষয়টি আলোচনায় আনেন। ভেনেজুয়েলার এক অনিয়মিত অভিবাসীর হাতে সম্প্রতি খুন হন মেডিক্যাল শিক্ষার্থী রিলে।

গত মার্চ মাসে স্টেট অব ইউনিয়নের ব্কতৃতায় বাইডেনকে রিলের খুনের ঘটনা স্বীকার করে নিতে বলেন রিপাবলিকান দলের মারজোরি টেইলর গ্রিনি। জবাবে বাইডেন বলেন, রিলে ছিলেন একজন নিষ্পাপ তরুণী, যিনি একজন অবৈধ অভিবাসীর হাতে নিহত হয়েছেন। সেসময় বাইডেন প্রশ্ন করেন, যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে থাকা নাগরিকদের হাতে কতজন নিহত হয়েছেন? বাইডেন অবশ্য পরবর্তীতে ‘অবৈধ’ শব্দটি ব্যবহারের জন্য দুঃখপ্রকাশ করে বলেন শব্দটি ‘অনথিভুক্ত’ হওয়া উচিত ঠিল।

অভিবাসীরা কি সত্যিই অপরাধে বেশি যুক্ত?
বিভিন্ন সংস্থার গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসীরা দেশটিতে জন্ম নেওয়া নাগরিকদের তুলনায় বেশি মাত্রায় অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ সত্য নয়।

উদাহরণ হিসেবে ‘ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ক্রাইম: অ্যাসেসিং কন্টেনশাস ইস্যু’ নামে ২০১৮ সালে প্রকাশিত গবেষণার কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলোজির অধ্যাপক ক্রিস কুব্রিন এবং জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্বের অধ্যাপক গ্রাহাম ওস’র এই গবেষণাটিতে ১৯৪৪ সাল থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে ৫০টির বেশি অপরাধ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, অভিবাসী এবং অপরাধ এই দুয়ের মাঝে কোনো উল্লেখযোগ্য সম্পর্ক নেই।

স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক রান আব্রামিটজকি ও তার সহকর্মীরা ‘ল অ্যাবাইডিং ইমিগ্র্যান্টস: দ্য ইনকারসারেশন গ্যাপ বিটুইন ইমিগ্রেন্টস অ্যান্ড দ্য ইউএস বোর্ন’ নামে একটি গবেষণা পরিচালনা করেন। তাদের এই গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রের ১৮৭০ সালে থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সময়ের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, দেশটিতে জন্ম নেওয়াদের তুলনায় অভিবাসীদের জেলে যাওয়ার ঘটনা অনেক কম।

সূত্র: রয়টার্স. ডয়েচে ভেলে

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com