মঙ্গলবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ০১:২৭ পূর্বাহ্ন

যুক্তরাজ্য গ্রেট স্কলারশিপ

  • আপডেট সময় সোমবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৫

গ্রেট স্কলারশিপের আবেদন চলছে। যুক্তরাজ্য সরকারের গ্রেট ব্রিটেন ক্যাম্পেইন—দ্য গ্রেট স্কলারশিপের মাধ্যমে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন বিষয়ে স্নাতকোত্তর করার সুযোগ পাবেন। ফাইন্যান্স, মার্কেটিং, বিজনেস, সাইকোলজি ডিজাইন, হিউম্যানিটিজ, ডান্সসহ অন্য বিষয়ে এ বছর যুক্তরাজ্যের ৭১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্নাতকোত্তর করার সুযোগ আছে। ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে এক বছরের স্নাতকোত্তর কোর্সে অধ্যয়নের ক্ষেত্রে টিউশন ফি হিসেবে প্রতিটি গ্রেট স্কলারশিপের জন্য ১০ হাজার পাউন্ড অনুদান দেওয়া হবে।

বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধি করার পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অর্জন উদ্‌যাপনের লক্ষ্যে কাজ করে গ্রেট স্কলারশিপ ক্যাম্পেইন। এ ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের পছন্দমতো বিভিন্ন বিষয়ে অধ্যয়নের ক্ষেত্রে সুযোগ প্রদান করে।

২০২১–২২ শিক্ষাবর্ষে ভারতের ডিওনা গ্রেট স্কলারশিপ পেয়ে পড়াশোনা করেছেন। ডিওনা যুক্তরাজ্যর ইউনিভার্সিটি অব হাল থেকে ‘এডুকেশন, ইনক্লুশন অ্যান্ড স্পেশ্যাল নিডস’–এ স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। গ্রেট স্কলারশিপে আবেদনের পরামর্শ দিতে গিয়ে তিনি ছয়টি পরামর্শ দিয়েছেন। আপনি গ্রেট স্কলারশিপের জন্য আবেদন করার কথা ভেবে থাকলে ছয় পরামর্শ আপনার জন্য।

১. আবেদনে যোগ্য কি না, যাছাই করে শব্দসীমায় নজর দিন

অ্যাপ্লিকেশনের প্রথম পর্যায়ে বা শুরুতেই আপনাকে অবশ্যই দুটো সাধারণ প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে হবে। আপনার স্কলারশিপে আবেদনের জন্য যোগ্যতার মানদণ্ড থাকতে হবে। এরপরই শব্দসীমার মধ্য আবেদন পূরণ করতে পারলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরের ধাপের আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবেন।

২. যোগ্যতা প্রমাণে নিজের অর্জনগুলো শেয়ার করুন

আপনি যদি আবেদন করার সময়ে নিজের নানা অর্জনের কথাগুলো তুলে না ধরেন, তবে যাঁরা আবেদন বাছাইয়ের কাছে থাকবেন, তাঁরা আপনার অর্জনের কথা বা আপনার মূল্য সম্পর্কে জানবেন না। ‘নিজের সম্পর্কে খুব বেশি কথা বলা’ নিয়ে চিন্তা করবেন না। আপনি বৃত্তি পাবেন কি না বা আপনাকে বৃত্তি দেওয়া হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত যাঁরা নেন, তাঁরা আপনার অর্জনগুলো জানতে চান। এ জন্য অর্জন জানাতে হবে।

এ ক্ষেত্রে ইউনিভার্সিটি অব হাল থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করা ডিওনা বলছেন, ‘আপনার সমস্ত অর্জন এবং গত কয়েক বছরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আপনি যে যে সহশিক্ষা কার্যক্রমগুলো করেছেন বা যুক্ত ছিলেন বা আছেন—সে সম্পর্কে বলতে লজ্জা পাবেন না। আমি স্কুলে পড়ার সময়ের বিভিন্ন সহশিক্ষা কার্যক্রমের কথা আবেদনে তুলে ধরেছিলাম। প্রথমে ভাবছিলাম এগুলো লেখা উচিত হবে কি না। কিন্তু পরে সিদ্ধান্ত নিলাম যে আমি পড়াশোনার পাশাপাশি যা যা করেছি, তা শেয়ার করায় কোনো ক্ষতি তো নেই। আমি লিখেছি। আমি স্কুল নাট্য সমিতির অংশ ছিলাম। আপনি আবদনের এসব বিষয় তুলে ধরার সময়ে শুধু এটি নিশ্চিত করুন যে সহশিক্ষা কার্যক্রমে কীভাবে নিজের উপকার হয়েছে। কীভাবে সহশিক্ষা কার্যক্রমে জড়িত থাকায় আপনার বিভিন্ন দক্ষতার উন্নয়ন হয়েছে।

টিউশন ফি হিসেবে প্রতিটি গ্রেট স্কলারশিপের জন্য ১০ হাজার পাউন্ড অনুদান দেওয়া হবে
টিউশন ফি হিসেবে প্রতিটি গ্রেট স্কলারশিপের জন্য ১০ হাজার পাউন্ড অনুদান দেওয়া হবেছবি: ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

৩. কোনো সঠিক বা ভুল উত্তর নেই

নিজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে অকপটে যদি আপনি কথা বলেন, তাহলে কোনো সঠিক বা ভুল উত্তর নেই। আপনার নিজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে অকপটে কথা বলতে হবে। আপনার নিজের গল্প, আপনার নিজে ক্ষমতা এবং আপনার উচ্চাকাঙ্ক্ষাগুলো বা লক্ষ্যগুলো আপনি সেরা উপায়ে তুলে ধরুন। প্রশ্নের উত্তরগুলোকে এমনভাবে সাজান বা গঠন করার চেষ্টা করুন, যাতে আপনার মধ্য থাকা গুনাগুণ চলে আসে বা বোঝা যায়।

ডিওনা বৃত্তিপ্রদানকারীদের কাছে পরে জানতে চেয়েছিলেন, ‘কেন তাঁরা তাঁকে বেছে নিয়েছিলেন।’ তিনি বলেন, ‘তাঁরা বলেছিলেন যে আমার আবেদনের সেরা বিষয়ের মধ্য একটি হলো, আমি কে, সে সম্পর্কে আমি সম্পূর্ণ সৎ ছিলাম। তাঁরা আমার লেখার ধারা পছন্দ করেছিলেন। মনে রাখতে হবে, আপনার লেখা একটি গল্পের মতো করে সব তুলে ধরতে হবে যেন আপনি শিক্ষাজীবনে যে যে কার্যক্রমে জড়িত ছিলেন, সেসব ইতিবাচক।

৪. স্কলারশিপ জীবনকে কীভাবে প্রভাবিত করবে, তুলে ধরুন

আপনার আবেদন যাঁরা পড়বেন, তাঁরা জানতে চাইবেন যে স্কলারশিপ পেলে আপনি ব্যক্তিগতভাবে এবং পেশাগতভাবে কী কী পেতে চান। উত্তরগুলো এমনভাবে দিন, যেন স্কলারশিপপ্রাপ্তির সুযোগ বেড়ে যায় এবং আপনার জীবনকে কীভাবে প্রভাবিত করবে, তা জানান।

ডিওনা আবেদনে লিখেছিলেন, কীভাবে যুক্তরাজ্যে মাস্টার্স করার সুযোগ পাওয়া তাঁর ক্যারিয়ারের লক্ষ্য অর্জনের যাত্রাপথের প্রথম ধাপ হবে। তিনি ইউনিভার্সিটি অব হালে যে কোর্সের জন্য আবেদন করেছিলেন, তাতে চাকরির ক্ষেত্র তৈরি, নেতৃত্ব এবং বিভিন্ন ব্যবস্থাপনা পরিচালনার দিকে দৃষ্টি দেওয়া যেতে পারে। স্নাতক শেষ হওয়ার পর তিনি যুক্তরাজ্যর বিশেষ একটি উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সন্ধান করছিলেন এবং যেখানে শিক্ষার ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা বাড়িয়ে পড়া শেষ করে ভারতে ফিরতে চেয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমার নিজের একটি স্কুল শুরু করার আশা আছে, যেখানে অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা এবং বিশেষ প্রয়োজনের শিক্ষার জন্য একটি উপযুক্ত প্লাটফর্ম থাকবে। শুধু স্কুলে পড়লেই আমার প্রস্তুতি হবে না। আমাকে ব্যবস্থাপনার নানা দিক, প্রশাসনিক দিক এবং মার্কেটিংয়ের দিকটাও বুঝতে হবে।’

যুক্তরাজ্যের হায়ার এডুকেশন ইনস্টিটিউশনের ইংরেজি ভাষায় দক্ষতাসহ নানা যোগ্যতা থাকতে হবে গ্রেট স্কলারশিপের আবেদনের জন্য
যুক্তরাজ্যের হায়ার এডুকেশন ইনস্টিটিউশনের ইংরেজি ভাষায় দক্ষতাসহ নানা যোগ্যতা থাকতে হবে গ্রেট স্কলারশিপের আবেদনের জন্যছবি: ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া

আরও পড়ুন

৫. স্কলারশিপ পেলে দেশের মানুষ কীভাবে উপকৃত হবে, তা দেখাতে হবে

আবেদনে আপনাকে হাইলাইট করা উচিত যে শিক্ষার মাধ্যমে যে জ্ঞান, দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা আপনি অর্জন করবেন, তা কেবল আপনার নিজের ব্যক্তিগত এবং পেশাগত উন্নতিই নয় বরং আপনার জাতির বৃদ্ধিতেও সাহায্য করবে। নিজের উচ্চাকাঙ্ক্ষার ওপর মূল্যায়ন করা হবে যে আপনি গ্রেট স্কলারশিপ পেলে আপনার নিজ দেশ কীভাবে উপকৃত হবে।

আবেদনে ডিওনা জোর দিয়েছিলেন যে কর্মজীবনের উচ্চাকাঙ্ক্ষার বাইরে তিনি একটি স্কুল ভারতে গড়তে চান, যেখানে ‘শিক্ষাকে সবার কাছের আরও পৌঁছাবে এবং ভিন্নভাবে অক্ষম ছাত্রদের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক করে তুলবে।’ তিনি আরও জোর দিয়েছিলেন যে তিনি ‘নারী এবং অন্য সুবিধাবঞ্চিত গোষ্ঠীর জন্য সুযোগ তৈরি করতে চান, যাতে স্থিতিশীল এবং অর্থপূর্ণ কর্মসংস্থান খুঁজে পাওয়া যায় এবং তাদের সমান সুযোগ নিশ্চিত করা যায়।’

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com