মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৮ পূর্বাহ্ন

যুক্তরাজ্যে কর্মক্ষেত্রে শোষণের শিকার অভিবাসী কর্মীরা

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৪

যুক্তরাজ্যে অভিবাসী কর্মী নিয়োগের অনুমতি পাওয়া অন্তত ১৭৭টি সামাজিক পরিচর্যা ও সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বা কেয়ার ফার্মের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘন ও শ্রম শোষণের অভিযোগ উঠেছে৷

অভিবাসী কর্মীদের উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল এই খাতটিতে মজুরি তুলনামূলক কম৷ কিন্তু নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, তারপরও শোষণের শিকার হচ্ছেন এই খাতে কর্মরত অভিবাসীরা৷

এই খাতের অবস্থা নিয়ে গবেষণা করেছে বেসরকারি সংস্থা ওয়ার্ক রাইটস সেন্টার৷ তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইংল্যান্ডের ১৭৭টি কেয়ার ফার্মের কাছে অভিবাসী কর্মী নিয়োগ দেয়ার স্পন্সরশিপ লাইসেন্স বা যথাযথ অনুমতি ছিল৷ কিন্তু রেকর্ড বলছে, এই প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে এর আগেও কর্মসংস্থান সংক্রান্ত অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে৷

ভায়োলেশন ট্র্যাকার ইউকে অব এমপ্লয়মেন্ট ট্রাইব্যুনালের গবেষকদের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, এই ফার্মগুলো ২০২০ সালে থেকে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত ২৫০ বার শ্রম আইন লঙ্ঘন করেছে৷ এগুলোর মধ্যে আছে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুতি, বেতন কেটে রাখা, বৈষম্য, শ্রমঘণ্টার চেয়ে বেশি কাজ করানোর পরও ন্যূনতম মজুরি না দেয়া৷

এসব প্রতিষ্ঠানগুলো এই সময়কালে ২২৫টি মামলায় হেরে গেছে৷ কর্মীদের ক্ষতিপূরণ হিসাবে ফার্মগুলোকে সবমিলিয়ে ৬০ লাখ পাউন্ড জরিমানা করেছে আদালত৷

ব্রেক্সিটের পর এসব ফার্ম যাতে আমলাতান্ত্রিক ও ভিসা প্রক্রিয়ায় জটিলতা এড়িয়ে অভিবাসী কর্মীদের সহজে নিয়োগ দিতে পারে সেজন্য স্পন্সরশিপ লাইসেন্স দেয় যুক্তরাজ্য সরকার৷ কিন্তু এমন ব্যবস্থার কারণে কর্মক্ষেত্রে ভারসাম্যহীনতা তৈরি হতে পারে বলে আগে থেকেই সতর্ক করে আসছিলো অধিকার সংস্থা এবং শিক্ষাবিদেরা৷

শ্রম শোষণ বিষয়ক তদন্তকারী সংস্থা গ্যাংমাস্টারস অ্যান্ড লেবার অ্যাবিউস অথরিটি জানিয়েছে, দেশটিতে আধুনিক দাসত্ব, ঋণে জর্জরিত হওয়া এবং অর্থনৈতিকভাবে শোষণের ঘটনাগুলো বেড়েই চলেছে৷

ওয়ার্ক রাইটস সেন্টারের সিইও ডোরা-অলিভিয়া ভিকোল বলেছেন, ক্ষমতার এই ভারসাম্যহীনতা ‘‘কেয়ার ফার্মগুলোকে অভিবাসী কর্মীদের শোষণে উত্সাহ যোগাচ্ছে৷ কর্মীদের অনেকেই ভয়ে মুখ খুলতে পারেন না৷ কারণ, যিনি মুখ খুলবেন তাকে চাকরিচ্যুত বা ভিসা বাতিলের হুমকি দেয়া হতে পারে৷’’

ব্রিটেনে প্রবীণ মানুষের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের দেখা-শোনা, যত্ন-আত্তির জন্য পরিচর্যা কর্মীদের চাহিদা বাড়ছে৷ আর দেশটিতে পরিচর্যা কর্মীদের এক-তৃতীয়াংশ অভিবাসী৷

ব্রেক্সিটের মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে আসার পর ২০২১ সালে হাজারো শূন্যপদ পূরণে বিশেষ ভিসা চালু করে যুক্তরাজ্য৷ ওই ভিসার আওতায় ভারত, নাইজেরিয়া, জিম্বাবুয়ে, ফিলিপাইন্সের অনেক নাগরিক পরিচর্যা কর্মী হিসাবে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান৷

গবেষণায় যুক্তরাজ্যে শ্রম আইন লঙ্ঘনের ছোট একটি দিক তুলে ধরা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেন গবেষকেরা৷ তারা বলছেন, এর পরিধি আরো বিস্তৃত হতে পারে, অন্যান্য খাতগুলোতেও এমন ঘটনা অমূলক নয়৷

ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা হোম অফিস চলতি বছর এক হাজারেরও বেশি কোম্পানির অভিবাসী কর্মী নিয়োগ দেয়ার স্পন্সরশিপ লাইসেন্স বাতিল বা স্থগিত করেছে৷

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com