শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৭ পূর্বাহ্ন

যুক্তরাজ্যে আর্থিক সংকটে দিশেহারা বাঙালিরা

  • আপডেট সময় বুধবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৩

কোভিড মহামারীর ধাক্কা, পরপর দুইবার প্রধানমন্ত্রী বদল, রাজনৈতিক অস্থিরতা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সব মিলিয়ে প্রায় তিন বছর ধরে অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য। যার ফেরে পড়ে কয়েকগুণ বেড়ে গেছে জীবনযাত্রার ব্যয়। গ্যাস, বিদ্যুৎ থেকে শুরু করে খাবার, কাপড়, যানবাহন, এমনকি বাসা ভাড়াও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। দেশটির সরকারি হিসাব বলছে, গত ৪১ বছরের মধ্যে যুক্তরাজ্যে বর্তমানে জীবনযাত্রার ব্যয় সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। তবে বেসরকারি হিসাব বলছে, জিনিসপত্রের দাম বাড়ার এই হার গত শতবছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এই মূল্যবৃদ্ধিতে সব থেকে বেশি সংগ্রাম করছেন নিম্নআয়ের মানুষ ও অভিবাসীরা।

যুক্তরাজ্যের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো বলছে, দেশটিতে অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছেন বাংলাদেশি, সোমালেয়িনা, পাকিস্তান ও ভারতের মতো দেশগুলোর অভিবাসীরা। বাস্তব চিত্রও বলছে, চলমান আর্থিক সংকটে জীবননির্বাহের ব্যয় মেটাতে এখন আক্ষরিক অর্থেই হিমশিম খাচ্ছেন বাঙালিরা।

লন্ডনের বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকা টাওয়ার হ্যামলেটের বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন বলেন, তিন সন্তানের পরিবারে আগে সপ্তাহে যে খরচ হতো, তা এখন দ্বিগুণ হয়েছে। বাসা ভাড়া মাসে বেড়েছে ২৮০ পাউন্ড। বিদ্যুৎ বিল দিতে হচ্ছে তিনগুণ। সব মিলিয়ে মাস শেষে এখন অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে প্রায় হাজার পাউন্ড। অথচ বেতন বেড়েছে ৩৬০ পাউন্ড। ফলে অনেকটা না খেয়েই দিন যাপন করতে হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে ব্রিটিশ বাংলাদেশি চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট

সাইদুর রহমান রেনু বলেন, ধৈর্যের সঙ্গে সামনের কঠিন সময় মোকাবিলা করতে হবে। এই সময়টায় বেশিরভাগ মানুষ অর্থনৈতিক কষ্টে আছে। কাজ পাচ্ছে না। আবার কাজ করলেও সেই অর্থ দিয়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এই অর্থনৈতিক মন্দা কতদিন থাকবে তা কে জানে। তবে ঋষি সুনাক অর্থমন্ত্রী থাকাকালে যেভাবে ব্যবসায়ীদের নানাভাবে সহায়তা করেছেন, এখন প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও একইভাবে তিনি ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়াবেন বলে প্রত্যাশা তার।

জানা গেছে, ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের প্রভাবে পূর্ব লন্ডনের ফেইথ প্রিন্টিং শপের কাঁচামালের দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। সেই সঙ্গে বিদ্যুৎ বিল বেড়েছে। বিষয়টি নিয়ে প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মুসলেহ উদ্দিন জানান, দোকানের প্রত্যেকটি জিনিসের দাম বেড়েছে। বিদ্যুৎ খরচ বেড়ে হয়েছে তিনগুণ। তাই ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে।

খরচ বাড়ার কারণে মানুষের কেনাকাটা কমে গিয়ে অর্ধেক হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্রিকলেনের মোবাইল শপ ডিজিকমের স্বত্বাধিকারী এমএ লাকি। তিনি জানান, খরচ কমাতে দোকানে কর্মচারী কমাতে হয়েছে। বেতন দিয়ে দোকান চালানো কঠিন। তা ছাড়া বিক্রি এত কমে গিয়েছে যে সামনে ব্যবসা চালানো সম্ভব হবে কিনা তাও বোঝা যাচ্ছে না।

এদিকে প্রাধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বেক্সিটের নিয়ম শিথিলের কথা ভাবছেন। বিশেষ করে অবাধ বাণিজ্য ও ভ্রমণের ক্ষেত্রে। তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্রিটিশ অর্থনীতির ভবিষ্যৎ অনেকটা নির্ভর করছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর অনেক সিদ্ধান্তের ওপর।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com