গানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নাচছে পানশালার সুন্দরীরা। আর সেই নাচের তালে সুন্দরীদের সামনে ক্রমাগত টাকা উড়িয়েই চলেছে এক যুবক। তবে সেই উল্লাস বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। পাল্টে যায় দৃশ্যপট, সেখানে হাজির হয়ে যায় পুলিশ। জানা যায়, একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মচারী ওই যুবক ২১ লাখের বেশি টাকা চুরি করে উধাও হয়েছেন। তাকে ধরতেই পুলিশ হানা দেয় সেখানে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের হুগলির ভদ্রেশ্বরে এই চুরির তদন্ত করতে গিয়ে পানশালায় টাকা ওড়ানোর তথ্য আসে মধ্য কলকাতার হেয়ার স্ট্রিট থানার কর্মকর্তাদের কাছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে খদ্দের সেজে চন্দননগরের একটি পানশালায় হানা দেন গোয়েন্দারা। শেষপর্যন্ত ওই পানশালা থেকেই গ্রেপ্তার হল সুমিত গোস্বামী নামে ওই যুবক।
দেশটির পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মধ্য কলকাতার পোলক স্ট্রিটে একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতেন সুমিত। তিনি প্রত্যেকদিন কত টাকা সংস্থায় আসছে, তার ওপরও নজর রাখতেন। লেনদেনের টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টেও জমা করে আসতেন তিনি।
গত শুক্রবার ১৬ লাখ রুপি ওই সংস্থার তহবিলে আসে। সেই টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়ার ব্যবস্থা নেন সংস্থার মালিক। কর্মচারী সুমিতের উপরই দায়িত্ব পড়ে। কিন্তু সুমিত সেই টাকা না দিয়ে লাপাত্তা হন।
দুপুর পেরিয়ে বিকেল গড়ানোর পরও সুমিত অফিসে ফিরে না আসায় সন্দেহ হয় মালিকের। তিনি দেখেন, সুমিতের মোবাইল ফোন বন্ধ। ব্যাংকে খবর নিয়ে জানতে পারেন, ওই ১৬ লাখ রুপি জমা পড়েনি। এরপরেইপোলক স্ট্রিটের ওই সংস্থার মালিক হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশ টাকা চুরির তদন্ত শুরু করে সন্ধ্যার মধ্যেই সুমিতের বাড়ির ঠিকানা সংগ্রহ করে। তার ঠিকানামতো হুগলির ভদ্রেশ্বরে হানা দেন পুলিশের কর্মকর্তারা। কিন্তু বাড়িতে সুমিতের দেখা মেলেনি। ভদ্রেশ্বরজুড়ে খোঁজখবর নিতে থাকে পুলিশ।
এরপর রাতের দিকে তাদের কাছে খবর আসে, চন্দননগরের একটি পানশালায় সুন্দরী গায়িকাদের সামনে প্রচুর টাকা ওড়াচ্ছে এক যুবক। ওই যুবকের কাছে যে বেহিসাবি টাকা আছে- এ ব্যাপারে নিশ্চিত হন পুলিশ কর্মকর্তারা। সন্দেহের বশেই তারা ভদ্রেশ্বর থেকে চন্দননগরের দিকে রওনা দেন।
এরপর সেই পানশালায় খদ্দের সেজে কর্মকর্তারা ভিতরে ঢুকে দেখেন, তখনও গায়িকাদের গানের তালে নেচে চলেছে ওই যুবক। তার সঙ্গে উড়িয়ে চলেছে টাকা। মুহূর্তের মধ্যেই তাকে শনাক্ত করেন পুলিশের সঙ্গে থাকা পোলক স্ট্রিটের সংস্থার মালিকের সঙ্গীরা।
এরপরেই হাতেনাতে ধরা হয় সুমিতকে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুমিতকে গতকাল শনিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে তাকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।