বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে আগামী বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুরু হচ্ছে ‘বাংলাদেশ ফেস্টিভ্যাল’। চার দিনব্যাপী এ ফেস্টিভ্যালের প্রতিপাদ্য ‘পর্যটনে পরিবেশবান্ধব বিনিয়োগ’। ওই দিন বেলা ১১টায় এ ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধন করবেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাপী উদযাপিত হতে যাচ্ছে বিশ্ব পর্যটন দিবস-২০২৩। তাই “মুজিব’স বাংলাদেশ” প্রচারণার অংশ হিসেবে এ ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করবে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা জানান, বাংলাদেশ ফ্যাস্টিভ্যালের উদ্বোধনী দিনে সকাল সাড়ে সাতটায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থেকে একটি শোভাযাত্রা বের হবে। শোভাযাত্রাটি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে পুনরায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এসে শেষ হবে। শোভাযাত্রায় পর্যটন সংশ্লিষ্ট সরকারি বেসরকারি স্টেকহোল্ডাররা অংশ নেবেন।
বাংলাদেশ ফেস্টিভ্যালে এয়ারলাইন্স, হোটেল, রিসোর্ট, অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, ট্যুরিস্ট-ভেসেল, ট্রাভেল এজেন্ট ও ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে। অংশ নেবে বিভিন্ন জেলার পর্যটন পণ্য ও সেবা প্রদানকারীরা। দেশব্যাপী পর্যটনের বিভিন্ন অফারও আয়োজন থাকবে এ উৎসবে। চারদিনব্যাপী আয়োজিত বাংলাদেশ ফেস্টিভ্যালে ২০ টি হোটেল রিসোর্ট, অঞ্চলভিত্তিক খাবারের স্টল ৭০ টি, ডিস্ট্রিক্ট ব্র্যান্ডিংয়ের আওতায় ২৯ টি জেলা, ক্রাফট স্যুভিনিয়র ২৬টি, এয়ারলাইন্স দুইটিসহ বিনোদন পার্ক, ট্রাভেল এজেন্ট, ট্যুর অপারেটর, ট্যুর গাইড, বিদেশি দূতাবাসসহ ১৬০ টির অধিক প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে।
এ উৎসবে আয়োজন থাকবে বিভিন্ন দেশের খাবারসহ বাংলাদেশের অথেন্টিক ও ঐতিহ্যবাহী খাবারের। দেশি-বিদেশি ইউনিক ও অথেন্টিক খাবার সম্পর্কে জানার এবং উপভোগ করার সুযোগ থাকবে উৎসবে। দেশের ঐতিহ্যবাহী খাবারের মধ্যে থাকবে জামতলার সাদেক গোল্লা, নরসিংদি জেলার নকশি পিঠা, নাটোরের কাঁচা গোল্লা, কুষ্টিয়ার কুলফি, পুরান ঢাকার হাজীর বিরিয়ানি, বাকরখানি, মুক্তাগাছার মণ্ডা, চট্টগ্রামের মেজবান, খুলনার চুইঝাল, বিসমিল্লাহর কাবাব, কুমিল্লার রসমালাই সহ ৬৪ টি জেলা থেকে ৭০ টির বেশি ঐতিহ্যবাহী ফুড স্টল। এ উৎসবে তাঁত, জামদানি তৈরির প্রক্রিয়া দেখা যাবে। আমাদের ঐতিহ্য মসলিন পুনরুদ্ধার হওয়ার গল্প এবং মসলিন তৈরির প্রক্রিয়া প্রদর্শন করা হবে। আমাদের সবারই মসলিন দেখার অপূর্ব সুযোগ তৈরি হবে উৎসবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দর্শনার্থীদের আকর্ষণীয় ট্যুর প্ল্যান তৈরি করতে এ উৎসব সহায়তা করবে। দর্শনার্থীরা বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, ইতিহাস, ঐতিহ্য, পুরাকীর্তি, পর্যটন সম্পদ সম্পর্কে জানতে পারবেন। প্রতিটি জেলার পর্যটন আকর্ষণের ছবি দেখার সুযোগ পাবেন। বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে পর্যটক ও পর্যটন কেন্দ্রের নিরাপত্তা, আবাসন, এভিয়েশন, পর্যটন খাতে কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা এবং পর্যটনশিল্পে নারীর অংশগ্রহণ, প্রত্নপর্যটন, খাদ্যপর্যটন, পর্যটন ও এভিয়েশন সাংবাদিকতা, প্লাস্টিক ফ্রি সেন্টমার্টিন ইত্যাদি বিষয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।
চার দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে থাকবে গম্ভীরা, সিলেটের আঞ্চলিক গান, গাজী কালুর পট, পথনাট্য, বাউল গান, পুঁথি পাঠ, কাওয়ালী এবং বিশিষ্ট শিল্পীদের গানের আয়োজন ইত্যাদি। এছাড়া ট্যুরিজমের ওপর সুন্দরী প্রতিযোগিতার বিশেষ আয়োজন থাকবে ফেস্টিভালে।