বিশ্বজুড়ে গত বছর কোনো দেশ সামরিক খাতে কত ব্যয় করেছে, তার একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে সুইডেনের স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট। পরিসংখ্যানে যে দেশটি সবার উপরে অবস্থান করছে, সেই দেশটি যুদ্ধরত কোনো দেশ নয়। বরং বর্তমান বিশ্বের যে দেশগুলো এখন যুদ্ধ ও সংঘাতে লিপ্ত রয়েছে, সে দেশগুলোকে যে দেশটি পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে থাকে, সেই দেশটিই বিশ্বে সামরিক ব্যয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে।
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট বা সিপ্রির প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বের মোট সামরিক ব্যয়ের ৩৭ শতাংশ খরচ করে শীর্ষে আছে যুক্তরাষ্ট্র। গত বছর দেশটি ৯১৬ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে; যা আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি। এই খরচের মধ্যে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধরত ইউক্রেন ও মধ্যপ্রাচ্যে অন্যায় যুদ্ধে লিপ্ত ইসরায়েলকে দেওয়া সামরিক সাহায্যও ধরা হয়েছে।
এই তালিকায় এরপরেই আছে চীন। দেশটি ২০২৩ সালে সামরিক খাতে মোট ২৯৬ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে, যা বিশ্বের মোট ব্যয়ের ১২ শতাংশ। এরপর রাশিয়া ১০৯ বিলিয়ন ডলার, ভারত ৮৩.৬ বিলিয়ন ডলার ও সৌদি আরব ৭৫.৮ বিলিয়ন ডলার খরচ করে পরের অবস্থানগুলোতে রয়েছে।
এছাড়া একই সময়ে যুক্তরাজ্য ৭৪.৯ বিলিয়ন, জার্মানি ৬৬.৮ বিলিয়ন, ইউক্রেন ৬৪.৮ বিলিয়ন, ফ্রান্স ৬১.৩ বিলিয়ন, জাপান ৫০.২ বিলিয়ন, ইসরায়েল ২৭.৫ বিলিয়ন ও পাকিস্তান ৮.৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে। আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, এশিয়া, ওশেনিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা—সব অঞ্চলেই সামরিক ব্যয় বেড়েছে। সব মিলিয়ে বিশ্বজুড়ে গত বছর সামরিক ব্যয় ৬.৮ শতাংশ বেড়ে রেকর্ড ২ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। শুধু তাই নয়, ২০০৯ সালের পর প্রথমবারের মতো সামরিক ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে বিশ্বের সব ভৌগোলিক অঞ্চলেই।
২০২৩ সালে সামরিক খাতে ৬৪.৮ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে ইউক্রেন। যা আগের বছরের তুলনায় ৫১ শতাংশ বেশি। তবে দেশটি ২০২৩ সালে ৩৫ বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা পেয়েছে। ফলে সব মিলিয়ে ইউক্রেন গত বছর সামরিক খাতে প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে। একই সময়ে রাশিয়া খরচ করেছে ১০৯ বিলিয়ন ডলার।
তবে জিডিপির হিসেবে দেখা যায়, ইউক্রেন তার জিডিপির ৩৭ শতাংশ সামরিক খাতে ব্যয় করেছে। সেই তুলনায় রাশিয়ার ব্যয় হয়েছে ৫.৯ শতাংশ। ফলে যুদ্ধ রাশিয়ার চেয়ে ইউক্রেনের ওপর বেশি বোঝা হয়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।