আমরা ডিজিটাল বিশ্বে বাস করছি। যেখানে একটি দিনও ফোন ছাড়া কল্পনা করা যায় না। কিন্তু এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের জন্য আমরা জীবন থেকে মূল্যবান সময় হারিয়ে ফেলছি। আজকাল বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে গেলেও আমরা ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকি। কোথাও ঘুরতে গেলেও ফোন নিয়েই পড়ে থাকি। এর ফলে আশেপাশে দৃশ্য আর উপভোগ করতে পারি না। কিন্তু পৃথিবীতে এমন কিছু জায়গা রয়েছে যেখানে মোবাইল ব্যবহার করা পুরোপুরি নিষিদ্ধ। তাই একটি স্মরণীয় অভিজ্ঞতা পেতে আপনার এই জায়গাগুলো পরিদর্শন করা উচিত।
সিস্টিন চ্যাপেল, ইতালি
ইতালির বিখ্যাত সিস্টাইন চ্যাপেল স্থানটি পবিত্র বলে বিবেচিত হয়। এর ভিতরে আপনি মোবাইল ফোন নিতে পারবেন না। এই চ্যাপেলের চমৎকার ছাদটি অবিশ্বাস্য শিল্পকর্ম প্রদর্শন করে। যা প্রশংসা করার মতো।
তামিলনাড়ুর মন্দির, ভারত
দক্ষিণ ভারতের রাজ্য তামিলনাড়ু। এখানকার মন্দিরের ভিতরে মোবাইল ফোন ব্যবহারের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে তামিলনাড়ু সরকার মন্দিরে ভক্তদের মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছেন। মূলত, “বিশুদ্ধতা এবং পবিত্রতা বজায় রাখার জন্য” এই উদ্দ্যেগ নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে, মাদুরাই মীনাক্ষী আম্মান মন্দির, গুরুভায়ুরের শ্রীকৃষ্ণ মন্দির এবং শ্রী ভেঙ্কটেশ্বর মন্দিরের ভিতরে ফোন নিষিদ্ধ।
অক্ষরধাম মন্দির, দিল্লি, ভারত
অক্ষরধাম মন্দির বা দিল্লির স্বামীনারায়ণ অক্ষরধাম মন্দির, গিনেস বিশ্ব রেকর্ড অনুযায়ী বিশ্বের সবচেয়ে বড় সর্বাঙ্গীণ হিন্দু মন্দির। নিরাপত্তার কারণে দর্শনার্থীরা মন্দির প্রাঙ্গণে তাদের মোবাইল ফোন বহন করতে পারবেন না। এ ব্যাপারে মন্দিরের ভিতরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনুসরণ করা হয়।
অযোধ্যার রাম জন্মভূমি কমপ্লেক্স, ভারত
উত্তর প্রদেশের অযোধ্যার রাম জন্মভূমি কমপ্লেক্সে মোবাইল ফোন ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। শুধু মোবাইল ফোন নয়, ক্যামেরা, ঘড়ি, বেল্ট এবং যেকোনো ইলেকট্রনিক গ্যাজেটও এখানে বহন করা যায় না।
ইয়ালা জাতীয় উদ্যান, শ্রীলঙ্কা
শ্রীলংকার বিখ্যাত জাতীয় উদ্যান ইয়ালা। এটি প্রায় ৯৭৯ বর্গ কিলোমিটার অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত। ২০১৫ সাল থেকে জঙ্গলের প্রাণীদের বাঁচাতে উদ্যানের ভিতরে ফোন প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। উদ্যানে কর্মরত গাইডরা জানিয়েছে যে, দর্শনার্থীদের ভিডিও করার কারণে অনেক সময় দ্রুত গাড়ি চালাতে হয়। এটি এই উদ্যানের বসবাসকারী প্রাণীদের জন্য বেশ বিরক্তিকর হয়ে ওঠেছিল। এ জন্য এই স্থানে ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ।
এলিট আইল্যান্ডস রিসোর্ট, ক্যারিবিয়ান সৈকত
২০১২ সাল থেকে এখানে মোবাইল নিষেধাজ্ঞা নীতি চালু করা হয়েছে। এলিটের প্রতিটি রিসোর্টে একটি করে সৈকত রয়েছে। যা কিনা মোবাইল-ফ্রি-জোন। এখানকার প্রতিটি সৈকতে সাইনবোর্ড রয়েছে। দর্শনার্থীদের রিসোর্টে চেক-ইন করার সময় নীতিটি সম্পর্কে হোটেল কর্তৃপক্ষ মনে করিয়ে দেয়। ফোনের পাশাপাশি ল্যাপটপও এখানে বহন করা যায় না।
রিজকস মিউজিয়াম, আমস্টারডাম
২০১৫ সাল থেকে আমস্টারডামের রিজকস মিউজিয়ামের অভ্যন্তরে মোবাইল ফোন ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এই মিউজিয়াম দর্শনার্থীদের বিনামূল্যে পেন্সিল এবং কাগজ সরবরাহ করে। যেখানে তারা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য লিখে নিতে পারবে। এই বিখ্যাত জাদুঘর দর্শনার্থীদের তাদের ফোন এবং ক্যামেরা ব্যবহার থেকে নিরুৎসাহিত করে থাকে।
সুত্র- টাইমস অব ইন্ডিয়া