অর্থনীতিবিদদের একাংশ একটা বিষয় নিয়ে প্রায়ই আশা প্রকাশ করেন। তা হল একবিংশ শতকের আসন্ন সময় নাকি হতে চলেছে এশিয়ার। কিন্তু এর পিছনে ভিত্তি কতটা? এখন বিষয়টি কার্যত মেনে নিল আন্তর্জাতিক সংস্থাও। আমেরিকান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্ক গোল্ডম্যান স্যাকস একটি রিপোর্টে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, আগামী কয়েক দশকের মধ্যে ভারত যে শুধুমাত্র জার্মান ও জাপানকেই হারিয়ে দেবে তা নয়, একইসঙ্গে ভারত আমেরিকাকেও অতিক্রম করে চলে যাবে।
গোল্ডম্যান স্যাকসের সাম্প্রতিক একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, আজ থেকে প্রায় 50 বছর পর অর্থাৎ 2075 সালের মধ্যে, ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে। ভারত তখন হবে 52.2 লাখ কোটি ডলার বা 52.2 ট্রিলিয়ন ডলারের দেশ। যা দেশের বর্তমান জিডিপির তুলনায় 15 গুণ বেশি। জানুয়ারিতে পার্লামেন্টে পেশ করা আর্থিক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, এই বছরের মার্চ নাগাদ ভারতের অর্থনীতি হবে 3.5 ট্রিলিয়ন ডলার। একটি রিপোর্ট বলছে, দেশ ইতিমধ্যেই এই নম্বর অতিক্রম করেছে।
বর্তমানে ভারত বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। সম্প্রতি ব্রিটেনকেও পিছিয়ে ফেলেছে দেশ। IMF-এর রিপোর্ট অনুসারে, 2027 সালের মধ্যে ভারত, জাপান ও জার্মানিকে পিছনে ফেলে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, 2027 সালে জাপানের অর্থনীতি হবে 5.2 ট্রিলিয়ন ডলার। জার্মানির অর্থনীতি হবে 4.9 ট্রিলিয়ন ডলার। একইসঙ্গে ভারত ততদিনে 5.4 ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত হবে। অর্থাৎ 2027 সালে ভারতের চেয়ে এগিয়ে থাকবে শুধুমাত্র আমেরিকা ও চিন। 2027 সালে চিনের অর্থনীতি হবে 26.44 ট্রিলিয়ন ডলার ও আমেরিকার অর্থনীতি তখন হবে 30.28 ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।
মার্কিন অর্থনীতিকে ছাপিয়ে যাবে ভারত
গোল্ডম্যান শ্যাক্সের রিপোর্ট অনুযায়ী, 2075 সালে যেখানে ভারত যখন 52.5 ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত হবে তখন আমেরিকা 51.5 ট্রিলিয়ন ডলার নিয়ে তৃতীয় স্থানে চলে যাবে। অন্যদিকে, অনুমান করা হচ্ছে 2075 সালে চিনের জিডিপি 57 ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে।
ভারত কী ভাবে এতটা উন্নতি করবে?
গোল্ডম্যান স্যাকস রিসার্চের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যাকে কর্মশক্তির মধ্যে নিয়ে আসা ও এই বিপুল জনশক্তিতে প্রশিক্ষণ দেওয়াও দেশের সক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে একটি বড় পদক্ষেপ। ওই রিপোর্টে অর্থনীতিবিদ জানিয়েছেন, ভারতে শিশু – বৃদ্ধদের মধ্যে অনুপাত অনেক দেশের তুলনায় ভালো এবং এটাই ভারতের অগ্রগতির অন্যতম পথিক।