সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৩:৩০ পূর্বাহ্ন

বিয়ের কয়েক দিন আগে কনে জানলেন তিনি আসলে ছেলে

  • আপডেট সময় বুধবার, ৮ মে, ২০২৪

কয়েক দিন পরই বিয়ে। এর মধ্যেই ২৭ বছর বয়সী এক চীনা নারী আবিষ্কার করলেন জন্মগতভাবে তিনি আসলে ছেলে! লি ইউয়ান ছদ্মনাম ব্যবহার করে ওই নারীর বিষয়ে আজ সোমবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিয়েকে সামনে রেখে চিকিৎসকের কাছে মেডিকেল চেক-আপের জন্য গিয়েছিলেন লি। কারণ তাঁর মাসিক হচ্ছিল না। এর আগে ১৮ বছর বয়সেই প্রথমবারের মতো তাঁর অস্বাভাবিক হরমোনের মাত্রা এবং ডিম্বাশয়ের ব্যর্থতা ধরা পড়েছিল। সেই সময় চিকিৎসকেরা লিকে একটি ক্রোমোজম পরীক্ষায় অংশগ্রহণের পরামর্শ দিয়েছিলেন। তবে লি এবং তাঁর পরিবার এই পরামর্শ উপেক্ষা করেছিল। কিন্তু এবার চিকিৎসকের কাছে গিয়ে চাঞ্চল্যকর সত্যের মুখোমুখি হলেন লি।

চিকিৎসকেরা এবার লির শরীরে একটি অণ্ডকোষ আবিষ্কার করেছেন। তবে এই অণ্ডকোষ শরীরের বাইরে ছিল না, এটি ছিল লির পেটের ভেতরে। এই ধরনের শারীরিক অবস্থাকে ‘কনজেনিটাল অ্যাড্রিনাল হাইপারপ্লাসিয়া’ (সিএএইচ) নামে এক বিরল ব্যাধি হিসেবে চিহ্নিত করেন চিকিৎসকেরা। প্রতি ৫০ হাজার শিশুর মধ্যে মাত্র একজনের ক্ষেত্রে এমনটি হতে পারে।

চিকিৎসকদের একজন গাইনোকোলজিস্ট ডুয়ান জি বলেন, ‘সামাজিকভাবে লি একজন নারী। নারীর বৈশিষ্ট্য নিয়েই তিনি বেড়ে উঠেছেন। কিন্তু ক্রোমোজমগতভাবে তিনি একজন পুরুষ।’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন সত্যের মুখোমুখি হয়ে পুরোপুরিভাবে ভেঙে পড়েছেন লি। জন্মের পর থেকে ২৭ বছর বয়স পর্যন্ত একজন মেয়ে হয়েই তিনি ছিলেন।

চিকিৎসকেরা লির এমন পরিণতির জন্য তাঁর বাবা-মায়ের অস্বাভাবিক জিনকে চারটি সম্ভাব্য কারণের একটি হিসেবে দায়ী করেছেন। পরীক্ষার ফলাফলে আরও জানা গেছে, প্রাথমিক চিকিৎসার অভাবে লি অস্টিওপরোসিস এবং ভিটামিন ডি-এর ঘাটতিতে ভুগছেন।

চিকিৎসকেরা লির পেটে লুকানো অণ্ডকোষটি দ্রুত অপসারণের ওপর জোর দিয়েছিলেন। কারণ এটি ক্যানসারের উচ্চ ঝুঁকি তৈরি করেছিল। পরে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে লির শরীরে অস্ত্রোপচার করা হয় এবং তার পেট থেকে অণ্ডকোষ বের করা হয়।

বর্তমানে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার জন্য লিকে নিয়মিত ফলো-আপ পরীক্ষা এবং দীর্ঘমেয়াদি হরমোন থেরাপির পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। লির জীবনের গল্পটি এখন চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। অনেকেই তাঁর প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন এবং তাঁর সাহসিকতার প্রশংসা করেছেন।

কনজেনিটাল অ্যাড্রিনাল হাইপারপ্লাসিয়া হলো জিনগত ব্যাধিগুলোর একটি গ্রুপ, যা একজন ব্যক্তির অ্যাড্রিনাল গ্রন্থিগুলোকে প্রভাবিত করে। এই গ্রন্থিগুলো শরীরকে সঠিকভাবে কাজ করানোর জন্য প্রয়োজনীয় হরমোন তৈরি করে। এই হরমোনের ভারসাম্যহীনতা যৌন বিকাশকেও প্রভাবিত করতে পারে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com