সম্প্রতি বিদেশ থেকে বাংলাদেশে আসেন দুই প্রবাসী। নামেন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। দেশে এসেই প্রতারকের খপ্পরে পড়ে যান তারা। বিমানবন্দরে অবতরণের পর সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে তারা যখন নিজ গন্তব্যে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বিমানবন্দরের পার্কিং এরিয়ায় গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন, ঠিক তখন তাদের সঙ্গে যাত্রীবেশী দুই প্রতারকের দেখা হয়। কথায় কথায় তারা প্রবাসীদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। এরপরই সুযোগ বুঝে সর্বস্ব লুট করে সরে পড়েন তারা।
বিমানবন্দর কেন্দ্রিক মলম ও অজ্ঞানপার্টির এই চক্রের মূলহোতাসহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গত শুক্রবার (১৪ জুলাই) তাদের গ্রেফতার করা হয়।
তারা হলেন বারেক সরকার (৪২)। তিনি বিমানবন্দর কেন্দ্রিক গড়ে ওঠা একটি অজ্ঞানপার্টির নেতা। অন্যজন আমির হোসেন (৫০)। তিনি একজন পেশাদার ডাকাত ও অজ্ঞানপার্টির সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে সারাদেশে বিভিন্ন থানায় চুরি, দস্যুতা এবং ডাকাতির অভিযোগে মামলা রয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক বলেন, ৮ ও ১১ জুলাই বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন দুই যাত্রীকে অজ্ঞান করে সর্বস্ব লুটে নেওয়ার দুটি অভিযোগ পায়। ভুক্তভোগীরা সুস্থ হওয়ার পর জানান, বিমানবন্দরে অবতরণের পর সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে তারা যখন নিজ গন্তব্যে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ক্যানোপিতে বা পার্কিং এরিয়ায় গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন, তখন তাদের সঙ্গে যাত্রীবেশী বারেক ও আমিরের পরিচয় হয়। কথায় কথায় তারা অভিযোগকারীর বিশ্বাস অর্জন করে নেন এবং সখ্য গড়ে তোলেন।
এরপর কৌশলে যাত্রীর গন্তব্য জেনে নিয়ে নিজেও একই গন্তব্যে যাবেন বলে একসঙ্গে শেয়ারে গাড়ি ভাড়া করে বা বাসে ভ্রমণের প্রস্তাব দেন। পরে সুযোগ বুঝে যাত্রীকে চেতনানাশক মিশ্রিত খাবার খাইয়ে অজ্ঞান করে সর্বস্ব লুট করে সরে পড়েন অপরাধীরা।
পরে এপিবিএন বিষয়গুলো তদন্ত করে জানিয়ে জিয়াউল হক বলেন, ঘটনার মূল অপরাধী বারেক ও আমিরকে শনাক্ত করা হয়। এপিবিএনের কাছে অভিযোগ করা ভুক্তভোগী নেহারুলের অভিযোগের সঙ্গে অজ্ঞানপার্টির নেতা বারেকের সরাসরি সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়। এছাড়া আরেক প্রবাসী ইসমাইল হোসেনের অভিযোগের মূল অভিযুক্তও বারেক ও আমির।
তিনি জানান, অভিযুক্ত বারেকের নামে যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, খিলগাঁওসহ বিভিন্ন থানায় বেশ কিছু চুরি ও ডাকাতির মামলা রয়েছে। বারেক শরীয়তপুরের বাসিন্দা, আর আমির বরিশালের বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানা, উত্তরা পশ্চিম থানা, ওয়ারী থানা এবং নাটোর সদর থানায় ডাকাতি ও চুরির অভিযোগে মামলা রয়েছে।