মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২২ পূর্বাহ্ন

বিদেশে কর্মসংস্থান : ছোট হয়ে আসছে জনশক্তি বাজার

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য মতে, গত দুই বছরে কর্মসংস্থানের জন্য বাংলাদেশ থেকে রেকর্ডসংখ্যক কর্মী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গেছেন। এর মধ্যে ২০২২ সালে ১১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৭৩ জন এবং ২০২৩ সালে ১৩ লাখ পাঁচ হাজার ৪৫৩ জন কর্মী বিদেশে গেছেন। তবে রেকর্ডসংখ্যক কর্মী বিদেশে গেলেও আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শ্রমবাজার নিয়ে সিন্ডিকেটসহ নানা ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের শুরু থেকে মালয়েশিয়া, ওমানসহ বেশ কয়েকটি দেশের গুরুত্বপূর্ণ শ্রমবাজার বাংলাদেশের জন্য বন্ধ হয়ে যায়।

বিএমইটির তথ্য মতে, চলতি বছর জুলাই পর্যন্ত পাঁচ লাখ ৮০ হাজার ৪১৯ জন কর্মী কর্মসংস্থানের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গেছেন। ২০২৩ সালের জুলাই পর্যন্ত একই সময়ে এ সংখ্যা ছিল সাত লাখ ৪৩ হাজার ৪২৬ আর ২০২২ সালের একই সময়ে এ সংখ্যা ছিল ছয় লাখ ৯১ হাজার ১৭।

মালয়েশিয়া-ওমানের শ্রমবাজার বন্ধের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে জনশক্তি রপ্তানিতে শ্রমবাজার নিয়ে সিন্ডিকেট, অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে গত বছরের ৩১ অক্টোবর ওমান এবং চলতি বছরের ৩১ মে থেকে বাংলাদেশের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার।

দ্রুততম সময়ে এ দুটি শ্রমবাজার চালু করার দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘সিন্ডিকেটের কারণে মালয়েশিয়া ও ওমানের শ্রমবাজার বন্ধ হয়ে গেছে। সিন্ডিকেটমুক্ত করে আবারও শ্রমবাজার দুটি চালু করতে হবে। কারণ এ দুটি আমাদের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার।’

বর্তমানে শ্রমবাজার সৌদিকেন্দ্রিক

বাংলাদেশের জন্য বর্তমানে একমাত্র সৌদি আরবের শ্রমবাজার উন্মুক্ত। প্রতিবছর দেশটিতে লাখের বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক যাচ্ছেন। এরপর বেশি সংখ্যায় বাংলাদেশি কর্মী মালয়েশিয়া ও ওমানে গেলেও দেশ দুটির শ্রমবাজার বর্তমানে বাংলাদেশের জন্য বন্ধ রয়েছে। এর বাইরে ১১টি শ্রমবাজারে কয়েক হাজার করে বাংলাদেশি কর্মী যান। বাকি শ্রমবাজারে যান নামমাত্র কর্মী। বিএমইটির তথ্য মতে, গত বছর জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সাত মাসে গেছেন দুই লাখ ৬৫ হাজার ৭৩৩ জন কর্মী। সেই জায়গায় চলতি বছর জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত গেছেন তিন লাখ এক হাজার ৮৮৩ জন কর্মী ।

৫টিতে বাড়ছে, কমছে ৫টিতে, সিঙ্গাপুর সমান

সৌদি আরব, মালয়েশিয়া ও ওমান ছাড়া ১১টি শ্রমবাজারে শত থেকে হাজারের মধ্যে বাংলাদেশি কর্মী যান। এই শ্রমবাজারগুলো হলো সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, কুয়েত, সিঙ্গাপুর, জর্দান, লেবানন, লিবিয়া, জাপান, যুক্তরাজ্য, ইতালি ও দক্ষিণ কোরিয়া।

চলতি বছরের হিসাবে দেখা গেছে, এই ১১টি শ্রমবাজারের মধ্যে পাঁচটি শ্রমবাজারে কর্মী যাওয়ার সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। আর পাঁচটি শ্রমবাজারে কর্মী যাওয়ার সংখ্যা কমেছে। সিঙ্গাপুরে গত বছরের সমপরিমাণ কর্মী গেছেন। যে পাঁচটি শ্রমবাজারে কর্মী যাওয়া বেড়েছে সেগুলো হলো কাতার, জর্দান, লেবানন, লিবিয়া ও জাপান। আর সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, যুক্তরাজ্য, ইতালি ও দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মী যাওয়া কমেছে।

এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিশেষ কনসুলেট অফিসের মাধ্যমে কর্মীর ভিসা সহজ করতে হবে জানিয়ে ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রচলিত বাজারের বাইরে আমাদের বাজার হচ্ছে ইউরোপের বাজার। ইউরোপের বাজারের বড় সমস্যা, যেসব দেশ বাংলাদেশি কর্মী নেয় সেসব অনেক দেশে বাংলাদেশের দূতাবাস নেই। এর ফলে এক ধরনের জটিলতা তৈরি হচ্ছে। এ কারণে যেসব দেশে বাংলাদেশের দূতাবাস নেই সেখানে বিশেষ কনসুলেট অফিস করা যেতে পারে। তাহলে ইউরোপে আমাদের শ্রমবাজার পুরোদমে চালু করা যাবে।’

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com