বাঙালিদের উৎসব অনেক রকমের তার মধ্যে বাঙালি হিন্দু ভাইদের উৎসব বারো মাসে সবথেকে বেশি আর বাঙালি মুসলিম ভাইদের উৎসব অনেক কম।
বাঙালির মানসিকতায় হলো দূরকে নিকট করা তাই সকলকে নিয়ে তারা উৎসবে মেতে উঠতে চাই। বাঙালীদের জীবনে অনেক দূর্যোগ এসেছে, অনেক শোষণ অত্যাচারে তারা সম্মুখীন হয়েছে।
কিন্তু তাদের জীবনে উৎসবের ভাটা পড়েনি। শুধু তাই নয় বাঙালির পালিত উৎসবের বৈচিত্রও কম নয়।
বাঙালির জীবন যাপন ক্ষুদ্র হলেও কিন্তু উৎসবের দিনে তারা প্রত্যেকের সঙ্গে মিশিয়ে হয়ে যায় বৃহৎ।
গতানুগতিক জীবনধারা, নিজেকে অপরের কাছে প্রকাশ করা ও বিভিন্ন জিনিস থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বাঙালিরা বিভিন্ন রকম উৎসবের আয়োজন করে থাকে।
উৎসবের দিনে বাঙালিরা আনন্দে মেতে ওঠে, একে অপরের সাথে আনন্দ উপভোগ করে এবং তারা একে অপরের সাথে দীর্ঘ দিনের পর আলাপ আলোচনায় মেতে ওঠে।
বাঙালিরা এই সমস্ত উৎসবের মধ্য দিয়ে তারা এক বিশাল আনন্দ উপভোগ করে।বাঙালির সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যে তার উৎসবের বৈচিত্র্যকে সূচিত করেছে।
বাঙালির উৎসবের বৈচিত্র্য অনেক রকম যেমন জাতীয় উৎসব, সামাজিক উৎসব, ধর্মীয় উৎসব, লোক উৎসব ইত্যাদি।
বাঙালিরা যে সমস্ত জাতীয় উৎসব পালন করে তার মধ্য দিয়ে জাতীয় সংহতি ও ঐক্যকে তুলে ধরার চেষ্টা করে।
বাঙালিরা যে সমস্ত জাতীয় উৎসব পালন করে সেগুলি হল যেমন স্বাধীনতা উৎসব, প্রজাতন্ত্র দিবস, গান্ধীজীর জন্ম দিবস, নেতাজির জন্ম দিবস ও বিবেকানন্দের জন্ম দিবস ইত্যাদি।
বাঙালিরা সামাজিক উৎসব পালনের মধ্য দিয়ে মানুষের মধ্যে মিলন ও আদান প্রদানের ভূমিকাকে গড়ে তোলে।
বাঙালিরা যে সমস্ত সামাজিক উৎসব পালন করে তা হল বিবাহ অন্নপ্রাশন, জন্মদিন পালন, জামাইষষ্ঠী, ভাইফোঁটা ইত্যাদি।
হিন্দু বাঙালি , বাঙালি মুসলমান, বৌদ্ধ, খৃষ্টান, শিক প্রভৃতি ধর্মালম্বী মানুষদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান বিভিন্ন রকমের।
বাঙালি মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব গুলি হল যেমন ঈদ উল ফিতর, ঈদ উল আযহা, মহররম ইত্যাদি।
বাঙালি হিন্দুরা যে সমস্ত ধর্মীয় উৎসব পালন করে তার মধ্যে হল দুর্গা পূজা, সরস্বতী পুজো, বাসন্তী পুজো, জন্মাষ্টমী, কালীপুজো, বিশ্বকর্মা পুজো, শিবের গাজন ইত্যাদি।
খ্রিষ্টানরা বড়দিন ও গুড ফ্রাই ডে পালন করে বৌদ্ধরা বুদ্ধ পূর্ণিমা ও শিকদের গুরু নানকের জন্মদিন।
বাঙালির জীবন ধারার সঙ্গে অনেক রকমের লোক উৎসব এর প্রচলন আছে।
বাঙালিরা অজ্ঞান মাসে ধান উঠার সময় নবান্ন উৎসব খুব আনন্দের সহিত পালন করে।
এছাড়া বাঙালিরা যে সমস্ত লোক উৎসব পালন করে সেগুলি হল ভাদু, টুসু ইত্যাদি।
এখন বাঙালীদের মধ্যে সেই উৎসবের আর পারস্পারিক কল্যাণ কামনা নেই আর তেমন আনন্দও নেয়।
এখন কে কত দামের পোশাক করল ও অলংকার বলল তার জাহির করার প্রবণতা প্রকট তাই উৎসবে গুরুত্ব এখন খুব কম হয়ে গেছে তার সাথে সাথে উৎসবের আনন্দ খুব কম হয়ে গেছে বাঙালীদের কাছে।