তাদেরকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল নিউ সাউথ ওয়েলসের ওলংগং বিশ্ববিদ্যালয়। আর, এ প্রকল্পের সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করেন ড. শাহরিয়ার আক্তার। তিনি ওলংগং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্কুলের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর।
এসবিএস বাংলাকে ড. শাহরিয়ার বলেন, এই গ্রান্টটির মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের আন্ডার-গ্রাজুয়েট লেভেলের শিক্ষার্থীদেরকে অস্ট্রেলিয়ার শিক্ষা-ব্যবস্থা সম্পর্কে একটি ধারণা প্রদান করা।
“সেই লক্ষ্য থেকেই আমরা ছয় মাস আগে বাংলাদেশে যাই। সেখানে গিয়ে আমরা পারফরমেন্স এবং তাদের একটা কমপিটিশনের বেসিসে আমরা নয় জন শিক্ষার্থী সিলেক্ট করি।”
এদের মধ্যে ৬ জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি অফ বিজনেসের এবং ইনস্টিটিউট অফ বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন থেকে। আর, বাকি তিন জনের মধ্যে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এক জন করে এসেছেন।
১০ থেকে ১৭ নভেম্বর টানা সাত দিনের এই প্রোগ্রামে তারা সাফল্যের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেন। প্রথম চার দিন তারা ক্লাসরুমে ছিলেন। ওলংগং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্লাসরুমে তারা বিজনেস, এডুকেশন, ম্যানেজমেন্ট, ইনফরমেশন সিস্টেম ইত্যাদি বিষয়ে ক্লাস করেন। এর পর তারা সিডনির আশেপাশের বিভিন্ন প্রাকৃতিক স্থান পরিদর্শন করেন এবং অবশেষে বাংলাদেশে ফিরে যান।
Source: Facebook @uow
ড. শাহরিয়ার বলেন,
“আমরা আসলে ১০ জনকে মনোনীত করেছিলাম। একজন শিক্ষার্থী ভিসা-জটিলতার কারণে আসতে পারে নি।”
তাদেরকে কীভাবে নির্বাচিত করা হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যারা দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বর্ষে পড়ে, তাদের মধ্য থেকে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বেঁছে নেওয়া হয়েছে।
আবেদন প্রক্রিয়ায় ৫০০ শব্দের একটি রচনা লিখতে বলা হয় এবং অ্যাকাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট বিবেচনা করা হয়। তারা কেন অস্ট্রেলিয়ায় আসতে চান তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। সবকিছু অনলাইনে সম্পন্ন করা হয়েছে। সর্বমোট ৭৭ জন আবেদন করেছিলেন ঢাকার এই চারটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এগুলো হলো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়।
ড. শাহরিয়ার বলেন, বাংলাদেশ থেকে অনেক শিক্ষার্থী অস্ট্রেলিয়ায় আসছে। কিন্তু, বাংলাদেশের জনসংখ্যা এবং জিডিপি অনুযায়ী সে-রকম শিক্ষার্থী পাচ্ছে না অস্ট্রেলিয়ার শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলো।
“আমরা যখন এই এপ্লিকেশনটা গভার্নমেন্টকে করি এবং এই গ্রান্টের জন্য কনভিন্স করি, আমাদের আর্গুমেন্ট ছিল যে, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি উন্নয়নমুখী অর্থনীতির দেশ, যেখানে বিশাল জনগোষ্ঠী রয়েছে। কিন্তু, তার রিপ্রেজেন্টেশন আমরা অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটিগুলোতে দেখতে পাচ্ছি না। তাদেরকে যাতে অস্ট্রেলিয়ান ইউনিভার্সিটিগুলোতে আনা যায়, এই গ্রান্টের মাধ্যমে, এবং এই স্টুডেন্টরা যখন বাংলাদেশে ফিরে যাবে, তারা যাতে অস্ট্রেলিয়ান এডুকেশনের অ্যামবাসাডর হিসেবে কাজ করতে পারে।”
“তারা অস্ট্রেলিয়ায় যা শিখল তা যেন সবাইকে বলতে পারে। আরও স্টুডেন্ট যাতে অস্ট্রেলিয়ায় আসতে আগ্রহী হয়।”
বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার মানের প্রশংসা করেন ড. শাহরিয়ার। তিনি বলেন,
“আমার কাছে মনে হয় আমাদের স্টুডেন্টদের ক্যাপাবিলিটি, আমাদের কারিকুলাম, আমাদের ইংলিশ বলার এফিশিয়েন্সি, সবকিছু এখন এমন একটা লেভেলে গেছে যে, আমাদের স্টুডেন্টরা অস্ট্রেলিয়ার যে-কোনো ইউনিভার্সিটিতে এসে ইকুয়ালি কমপিট করার যোগ্যতা রাখে।”
ড. শাহরিয়ার আক্তার