বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:১৬ পূর্বাহ্ন

বন্ধ হয়ে যাচ্ছে দেশের প্রথম অনলাইন ফুড ডেলিভারি প্রতিষ্ঠান হাংরিনাকি

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২২ জুন, ২০২৩

২০২২ সালে কার্যপরিধি সীমিত করা ও কর্মী ছাঁটাইয়ের পর এবার চলতি মাসের শেষে বন্ধ হতে যাচ্ছে দেশের প্রথম অনলাইন ফুড ডেলিভারি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হাংরিনাকি।

আলিবাবা অধিভুক্ত দারাজ বাংলাদেশ ২০২১ সালে কোম্পানিটি অধিগ্রহণ করে। অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, বাজারের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি ফুডপান্ডা ও পাঠাও ফুডসের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারছে না হাংরিনাকি। বর্তমান কঠোর ব্যবসায়িক পরিবেশের কারণও প্রতিষ্ঠানটি বন্ধের জন্য দায়ী।

হাংরিনাকির ব্যবস্থাপনা পরিচালক খন্দকার তাসফিন আলম তার প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়া সম্পর্কে মন্তব্য করার অনুরোধে সাড়া দেননি।

তবে হাংরিনাকির মাতৃ-প্রতিষ্ঠান দারাজ বাংলাদেশ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানায়, হাংরিনাকি ব্র্যান্ড ও অ্যাপটি বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনা আছে।

দারাজ বাংলাদেশের কর্পোরেট কমিউনিকেশন্সের প্রধান আহাদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘আমরা এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিইনি। আমাদের পরিকল্পনা হলো, গ্রাহকদের দারাজ অ্যাপে নিয়ে যাওয়া এবং একটি একক অ্যাপের মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনা করা।’

তিনি আরও জানান, হাংরিনাকির বেশিরভাগ কর্মচারীকে দারাজের বিভিন্ন বিভাগে নিয়োগ দেওয়া হবে।

২০১৩ সালে তিন বাংলাদেশি বন্ধুর হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হাংরিনাকি দেশে বন্ধ হয়ে যাওয়া তৃতীয় বড় ফুড ডেলিভারি সার্ভিস হবে। এর আগে ২০২০ সালে উবারইটস এবং ২০২১ সালে সহজ ফুড বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া ২০২১ সালে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি বন্ধের সঙ্গে সঙ্গে তাদের ফুড ডেলিভারি বিভাগও বন্ধ হয়ে যায়।

গত বছর ছাঁটাইয়ের পর এখন হাংরিনাকির কর্মীসংখ্যা ৪০ জন। তাদের একজন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিতই ছিল। দারাজ বাংলাদেশের আঞ্চলিক সদর দফতর থেকে সবুজ সংকেত এলে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসা সময়ের ব্যাপার মাত্র।

করোনা মহামারিকালে ফুড ডেলিভারি সেবার সবচেয়ে সুসময় গেছে। ২০২১ সালে দৈনিক খাবার অর্ডারের সংখ্যা ১ লাখ ২০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। নগদ অর্থছাড়ের সুবিধা দেওয়ায় তা কয়েকদিনের মধ্যে দেড় লাখ ছাড়িয়ে যায়।

শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতার কারণে ভোক্তারা ফুড ডেলিভারিতে ছাড় উপভোগ করেন।

তবে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে খাবারের দাম বেড়ে যায়, যার ফলে ভোক্তারা ব্যয় কমিয়ে দেয়। বাজারে বিনিয়োগও কমে যায়। এরপর ফুড ডেলিভারি খাত পতনের মুখোমুখি হতে শুরু করে।

সংশ্লিষ্টদের মতে, গত ১৫-২০ মাসে সারা দেশে দৈনিক অর্ডার অর্ধেকেরও বেশি কমে গেছে। তাদের হিসাব অনুযায়ী, ঢাকা ও চট্টগ্রামে দৈনিক অর্ডারসংখ্যা ৩৫ থেকে ৪০ হাজারের মধ্যে থাকে। সার দেশে তা ৬০ হাজার ।

 বর্তমানে ফুড ডেলিভারি বাজারের দুই-তৃতীয়াংশের দখল ফুডপান্ডার হাতে। বাকি বাজার পাঠাও ফুডসের দখলে।

হাংরিনাকি অধিগ্রহণের পর দারাজ ১০০ এলাকায় প্রতিষ্ঠানটিকে সম্প্রসারিত করার পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছিল। ৩০ এলাকায় বিস্তৃতির পর তা গত বছর ১৫-তে নামিয়ে আনা হয়। বর্তমানে হাংরিনাকি রাজধানীতে মাত্র কয়েকটি এলাকায় ফুড ডেলিভারি করে। তাদের রেস্তোরাঁ ও ডেলিভারি ম্যানের সংখ্যাও কম।

বিশ্লেষকদের মতে, প্রতিকূল সময়ে ভর্তুকি দিয়ে সম্প্রসারণ না করে লাভের দিকে মনোযোগ দিতেই প্রথমে কার্যপরিধি সীমিত করা এবং এখন পুরোপুরি বন্ধের কৌশল নিয়েছে দারাজ সদর দফতর।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com