বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৫৮ পূর্বাহ্ন

ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে চার পরিবার সমাজচ্যুত

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৫ জুলাই, ২০২৪

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে চার পরিবারকে সমাজচ্যুত করেছে এলাকাবাসী। এমন সিদ্ধান্তে অসহায় জীবন যাপন করছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। বর্তমান যুগে এমন সিদ্ধান্ত মানবাধিকার বিরোধী বলছেন সচেতন ব্যক্তিরা।

চাঁদপুরের মতলব উত্তর ছেঙ্গারচর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের জোড়খালী গ্রামের বাসিন্দা সাইফুদ্দিন বেপারী স্থানীয় মসজিদের ইমাম মাওলানা রহমত উল্লাহকে চাকরি থেকে বাদ দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে ২২ জুন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি মতামত পোস্ট করেন। ওই পোস্টে কমেন্ট করে একই এলাকার আরও তিনটি পরিবারের সদস্য। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মতামত পোস্ট করায় মসজিদ কমিটি ও এলাকাবাসীর সম্মানহানি হয়েছে দাবি করে ২৯ জুন সন্ধ্যায় একটি বৈঠকের মাধ্যমে চারটি পরিবারকে সমাজচ্যুত করেন তারা। এমন সিদ্ধান্তে অসহায় জীবন যাপন করছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। সম্মুখীন হতে হচ্ছে নানা প্রতিবন্ধকতার জানান তারা।

তাদের মধ্যে গোলাম নবী সরকার বলেন, সামান্য একটা পোস্টকে কেন্দ্র করে আমাদের ওপর অন্যায় সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, সমাজের মুসল্লিদের অপমান করায় এ শাস্তি দেওয়া হয়েছে বলে স্বীকার করেন মসজিদ কমিটির সদস্য রুহুল আমিন মিয়াজী। তিনি বলেন, মসজিদে আসা-যাওয়া এবং সমাজের সবার তাদের সঙ্গে কথা বলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কারণ, তারা সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে।

তবে ওই দিন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সংশ্লিষ্ট পৌর কাউন্সিলর সবুজ বেপারী। তিনি বলেন, কোনো পরিবারগুলোকে সমাজচ্যুত করা হয়নি দাবি তার। মসজিদের মুসল্লিদের অপমান করেছে কিছু লোক। তাই মসজিদ কমিটির কাছে ক্ষমা চাইলে সব সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে বলে জানান তিনি।

সচেতন নাগরিক কমিটি-সুজনের চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি মোশারেফ হোসেন মিরন বলেন, সমাজচ্যুত করার ক্ষমতা কারও নেই। ঘটনাটি মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘন। এমন বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

এমন ঘটনার বিষয়ে মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন রনির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত এই নিয়ে পুলিশের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। তবে মৌখিক কিংবা লিখিতভাবে জানালে অবশ্যই আইনগত সহায়তা প্রদান করা হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘুষ এবং সুদ খাওয়া নিয়ে মসজিদে বয়ান করেন ইমাম সাহেব। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে মসজিদ কমিটির সদস্যরা ওই ইমামকে চাকরিচ্যুত করেন। আর তা ফেসবুকে তুলে ধরেন সাইফুদ্দিন নামে এক যুবক। তিনি তার কমেন্টস এ লেখেন, ঘুষ আর সুদের কথা বলায় যদি মসজিদের ইমাম পাল্টানো যায়। তাহলে, সমাজে কেন ঘুসখোর আর সুদখোরদের পাল্টানো যায় না। এতেই ক্ষেপে যায় মসজিদ কমিটির সদস্যরা। তারপর ওই যুবকের পোস্টে যারা কমেন্টস করেছে। এমন চার পরিবাকে সমাজচ্যুত করা হয়।

এর আগে একই পৌরসভার ৯ নাম্বার ওয়ার্ডে অটোরিকশা চালক মইজ উদ্দিনের পরিবারকেও তাদের পারিবারিক কলহের কারণে সমাজচ্যুত করে এলাকাবাসী। পরে আবার তা সমাধান করেন তারা।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com