রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫১ পূর্বাহ্ন

পি কে হালদার সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ ৯২৯৮ কোটি টাকা

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর, ২০২৪

ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণ আরও বাড়লো। এর মধ্যে শুধু পি কে হালদার সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

তথ্য অনুযায়ী, পি কে হালদার সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে পিপলস লিজিংয়ের খেলাপি ঋণের হার ৯৯ শতাংশ বা ১ হাজার ৯৬ কোটি টাকা, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফসি) খেলাপির হার ৯৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ বা ৭৪৩ কোটি টাকা, ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের খেলাপি ঋণ ৯৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ বা ৩ হাজার ৯১২ কোটি টাকা। এ ছাড়া পি কে হালদারের সংশ্লিষ্ট এফএএস ফাইন্যান্সের খেলাপি ঋণ ৮৯ দশমিক ৫৬ শতাংশ বা ১ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকা ও আভিভা ফাইন্যান্সের খেলাপি ঋণ ৭১ দশমিক ৭২ শতাংশ বা ১ হাজার ৯০২ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণ ৮২২ কোটি টাকা বেড়েছে। গত জুন শেষে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা, যা এ খাতে বিতরণ করা মোট ঋণের ৩৩ দশমিক ১৫ শতাংশ। চলতি বছরের জুন শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণের স্থিতি ছিল ৭৪ হাজার ৫৩৪ কোটি টাকার। এর মধ্যে ২৪ হাজার ৭১১ কোটি টাকা খেলাপি হয়েছে, যা মোট ঋণের ৩৩ দশমিক ১৫ শতাংশ। গত মার্চ শেষে ঋণ স্থিতি ছিল ৭৪ হাজার ৩৮৯ কোটি টাকা। ওই সময় খেলাপি ঋণ ছিল ২৩ হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩২ শতাংশ। অর্থাৎ তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৮২২ কোটি টাকা বা ৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তারল্য সংকটে ভুগছে। ব্যাংকগুলোর সঙ্গে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তীব্র প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে। এ ছাড়া নানা অনিয়মের কারণে ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ায় আমানত পেতে সমস্যা হচ্ছে।

গত ডিসেম্বর শেষে এ খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ২১ হাজার ৫৬৭ কোটি টাকা, যা ওই সময়ের মোট ঋণের ২৯ দশমিক ২৭ শতাংশ। সেই হিসাবে ছয় মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩ হাজার ১৪৪ কোটি টাকা বা ১৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

অপরদিকে চলতি বছরের জুন শেষে আদায় অযোগ্য বা মন্দ ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ৩৩ কোটি টাকা, যা বিতরণকৃত মোট ঋণের ২৮ দশমিক ২২ শতাংশ। মার্চে ছিল ২০ হাজার কোটি টাকা, যা ওই সময়ের মোট ঋণের ২৬ দশমিক ৯১ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, দেশের ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দুরবস্থা নতুন নয়। আর্থিক খাতের বহুল আলোচিত ব্যক্তি প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যে অনিয়ম করেছেন, পুরো খাত এখন তার জের টানছে। পি কে হালদারের মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় ছিল এমন কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে খেলাপি ঋণের হার সবচেয়ে বেশি। পাশাপাশি এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানেও খেলাপি ঋণ বাড়ছে, যে কারণে সার্বিকভাবে এ খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েই চলেছে।

এদিকে ফারইস্ট ফাইন্যান্সের খেলাপি ঋণ ৯৪ দশমিক ৪১ শতাংশ, জিএসপি ফাইন্যান্সের ৯২ দশমিক ৩৭ শতাংশ, ফার্স্ট ফাইন্যান্সের ৮৯ দশমিক ৪১ শতাংশ, প্রিমিয়ার লিজিংয়ের ৬৬ দশমিক ৭৪ শতাংশ, সিভিসি ফাইন্যান্সের ৫৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ, মেরিডিয়ান ফাইন্যান্সের ৫৯ দশমিক ১৭ শতাংশ, আইআইডিএফসির ৫৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ, হজ ফাইন্যান্সের ৫৭ দশমিক ৭৯ শতাংশ, ফিনিক্স ফাইন্যান্সের ৫৭ দশমিক ৭৯ শতাংশ, ন্যাশনাল ফাইন্যান্সের ৫৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ, বে লিজিংয়ের ৫২ দশমিক ৮২ শতাংশ ও উত্তরা ফাইন্যান্সের ৫০ দশমিক ৪৮ শতাংশ। এরপরই খেলাপি ঋণে শীর্ষে আছে ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, মাইডাস ফাইন্যান্স, ইসলামিক ফাইন্যান্স, প্রাইম ফাইন্যান্স, ইডকল ও লংকাবাংলা ফাইন্যান্স।

এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫ হাজার ১১৬ কোটি টাকায়। এর আগের প্রান্তিকে যা ছিল ৪৪ হাজার ৩০৪ কোটি টাকা। যদিও এই তিন মাসেই আর্থিক প্রতিষ্ঠান ছেড়েছে সাড়ে ৪৮ হাজারের বেশি ব্যক্তি আমানতকারী।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com